ক্যালিফোর্নিয়ার পর ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল বহু শহর

ভোট দিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করার রায় দেয়ার পরই যেন হুঁশ ফিরলো যুক্তরাষ্ট্রবাসীর। ট্রাম্পকে মানি না- বলে এখন বিক্ষোভে নেমেছেন তারা। প্রথমে শুরু ডেমোক্রেটদের শক্তিশালী ঘাঁটি ক্যালিফোর্নিয়ায়। এরপর বিক্ষোভ হয় অন্য অনেক রাজ্য ও শহরে। বিক্ষোভ করেছে ছাত্ররাও। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস বর্জন করেছে তারা। অবরোধ হয়েছে বেশ কিছু সড়ক, মহাসড়ক।
বিক্ষোভকারীরা নজিরবিহীনভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছিল। হাজার হাজার মানুষ শহরের রাজপথে নেমে এসে তাদের ক্ষোভ জানায়। ট্রাম্পকে উগ্রবাদী ও ধর্মান্ধ আখ্যা দিয়ে তারা চিৎকার করে বলছিল, ‘তিনিআমাদের প্রেসিডেন্ট হতে পারেন না’।
বোস্টন থেকে লস অ্যাঞ্জেলস পর্যন্ত লাখো মানুষ স্থানীয়সময় বুধবার রাতে বিক্ষোভে নামে। দেশটির প্রধান বাণিজ্যিক শহর নিউ ইয়র্কেও পাঁচ হাজারেরও বেশি নামুষ বিক্ষোভ করে।
বিক্ষোভকারীদের একজন নিক পাওয়ার বলছিলেন, ‘নির্বাচনের ফলাফল দেখার পরই অনেকে নানা ভীতির কথা বলছেন।’ তিনি বলেন, ট্রাম্প এমন নীতি গ্রহণ করতে পারেন যাতে বহু মানুষকে কারাগারে যেতে হবে পারে। তার ভয় ট্রাম্প ধর্ষকামী নীতিকে উস্কে দেবেন।
ডেমোক্রেট অধ্যুষিত এলাকা বলে বিবেচিত আটলান্টা, অস্টিন, টেক্সাস, বোস্টন, শিকাগো, ডেনভার, ফিলাডেলফিয়া, পোর্টল্যান্ড, ওরেগন, সানফ্যান্সিসকো, শিয়াটল এবং ওয়াশিংটনেও বিক্ষোভ হয়েছে।
শিকাগোতে ব্যস্ততম লেকশোর ড্রাইভে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হয়।
পোর্টল্যান্ডে বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিচ্ছিল, ‘ট্রাম্পকে মানি না, কোনো কসাইকে মানি না, যুক্তরাষ্ট্রে ফ্যাসিস্ট কাউকে মানি না। ওয়াশিংটন ডিসিতে ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল হোটেলের দিকেও স্লোগান দিতে দিতে এগিয়ে যায় তারা।
অস্টিনে বিক্ষোভকারীরা স্থানীয় সময় বুধবার বিকালে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা। এতে সময় ওয়াশিংটনে আমেরিকান ইউনিভার্সিটির ছাত্ররা অংশ নেন। তাদের আহ্বানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ক্লাস বর্জন করে শিক্ষার্থীরা বেরিয়ে আসে।
লস অ্যাঞ্জেলসের উপশহরের কলেজ ছাত্ররাও স্থানীয় সিটি হলে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভকারী ব্রুকলিন হোয়াইট তার তুলে ধরে ব্যানারে লিখেন, ‘এই জয়কে আমি ঘৃণা করি।’ ১৮ বছর বয়সী ব্রুকলিন এবার হিলারিকে ভোট দিয়েছিলেন।
‘আমরা এখন তার তাকে থামাতে পারবো না। কিন্তু তিনি প্রেসিডেন্ট হলেও আমাদের কথা তাকে শুনতে হবে’-বলেন ব্রুকলিন।
ক্যালিফোর্নিয়ায় বার্কলি কলেজের দেড় হাজার শিক্ষার্থী স্থানীয় সময় বুধবার সকালে শ্রেণিকক্ষ ছেড়ে বের হয়ে আসে। ডেস মনিসেও হাজারো শিক্ষার্থী ক্লাস বর্জন করে। ফিনিক্স রাজ্যের কার্ল হেইডেনের ২০০ শিক্ষার্থীও রাজ্যের রাজধানীতে বিক্ষোভ করে।
এর আগে ওকল্যান্ড, ক্যালিফোর্নিয়ায় মহাসড়কে আগুন ধরিয়েও বিক্ষোভ করে ট্রাম্পবিরোধীরা। তারা ট্রাম্পের উগ্রবাদের বিরোধিতা করে ‘যুক্তরাষ্ট্র ধর্মান্ধ নয়’ বলে স্লোগান দেয়।
হিলারি সমর্থকদের মোমবাতি প্রজ্জ্বালন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট হাউজ হোয়াইটি হাউজের সামনে জড়ো হয়ে হিলারি সমর্থকরা তাদের নির্বাচনী পরাজয়ের জন্য মোমবাতি জ্বালিয়ে শোক প্রকাশ করেন।
ফেইসবুকে প্রচার চালিয়ে হিলারি সমর্থকরা সেখানে জড়ো হন। তারা এ সময় স্লোগান নেয়, ‘তুমি একা নও, আমরা তোমাদের সঙ্গেই আছি।’
পানামা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসা অভিবাসী মেয়বিলাইন ম্যাককয় এর আয়োজন করেন। সেখানে তিনি তার তিন সন্তানকেও নিয়ে এসেছিলেন। ম্যাককয় বলেন, ‘আমার ভয় হচ্ছে আমি আমার সন্তানদেরকে আর নিরাপত্তা দিতে পারবো না। তারা হয়ত মানুষকে চুপ হয়ে যেতে দেখবে।’
ঢাকাটাইমস/১০অক্টোবর/ডব্লিউবি

মন্তব্য করুন