‘আদালতে বাংলা পুরোপুরি চালু হয়নি, আমরা দুঃখিত’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১১:২৪| আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১২:৪৮
অ- অ+

সরকারি দপ্তরগুলোতে বাংলা ভাষা চালু হলেও আদালতে এখনো পুরোপুরি চালু করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। আর এজন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তবে আদালতেও দ্রুত বাংলা ভাষা চালু হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।

মঙ্গলবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন প্রধান বিচারপতি।

বাংলাদেশের সংবিধানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, 'প্রজাতন্ত্রের ভাষা হবে বাংলা।' সুপ্রিম কোর্টের রুলসেও আদালতের ভাষা হিসেবে প্রথমে বাংলা এবং পরে অন্য ভাষা ব্যবহারের নির্দেশনা রয়েছে। তবে এরপরও উচ্চ আদালতের সর্বস্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহারে কার্যকর উদ্যোগ নেই সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের। কয়েকজন বিচারপতি ব্যক্তিগত আগ্রহে বাংলায় কয়েকটি রায় দিলেও এর সংখ্যা হাতেগোনা।

আদালতসহ সর্বস্তরে বাংলা ভাষা ব্যবহারের নির্দেশনা চেয়ে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্টে একটি রিট করেন আইনজীবী ড. ইউনুস আলী আকন্দ। ওই রিটে একই বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি রুল জারি করেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। কিন্তু এখনো ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি না হওয়ায় বিষয়টি ঝুলে রয়েছে। এর আগে ১৯৯১ সালে ভাষা নিয়ে হাইকোর্টের এক রায়ে বলা হয়, ভাষা তিন প্রকার। রাষ্ট্রভাষা, সরকারের ভাষা ও আদালতের ভাষা। রাষ্ট্রভাষার অর্থ, যে ভাষা রাষ্ট্রের সব কাজে ব্যবহৃত হয়। সরকারের ভাষা হলো নির্বাহী কার্যক্রমে ব্যবহৃত ভাষা এবং আদালতের ভাষার অর্থ বিচারিক কার্যক্রমে ব্যবহৃত ভাষা। অবশ্য ওই রায়ে ইংরেজির ব্যবহারও নিষিদ্ধ করা হয়নি। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ১৯৮৭ সালের বাংলা ভাষা আইনে আদালতে রাষ্ট্রভাষা ছাড়া অন্য কোনো ভাষার প্রচলন রদ করে কোনো বিধান যোগ হয়নি। উন্নত বিশ্বে বিচারপ্রার্থীদের শুনানি ও রায় বুঝতে পারার জন্য উচ্চ আদালতে দাপ্তরিক কাজসহ আদালতের রায় ও আদেশ চলে রাষ্ট্রের নিজস্ব ভাষায়। এর মধ্যে জার্মানি, জাপান, ফ্রান্স, স্পেন, নেদারল্যান্ডসসহ বিভিন্ন দেশের উচ্চ আদালতে বিচারকাজ চলে তাদের মাতৃভাষায়।

প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা বিভিন্ন সময় বাংলা ভাষায় রায় লেখার প্রতি তাগিদ দিয়েছেন। আজ তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘সরকারি অধিদপ্তরগুলোয় বাংলা চালু হলেও আদালতে সেটা বাস্তবায়ন করা পুরোপুরি সম্ভব হয়নি। এজন্য আমরা খুবই দুঃখিত। অবশ্য হাইকোর্ট বিভাগের কয়েকজন বিচারক খুব সুন্দরভাবে বাংলায় রায় লিখছেন। এটা অন্যদের জন্য অনুসরণীয় হতে পারে। আপিল বিভাগেও আমরা এটি বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি।’

এসকে সিনহা বলেন, ‘প্রযুক্তির এই যুগে যদি কোনো ডিভাইস আসে যার মাধ্যমে আদালতে ঘোষণা করা রায় বাংলায় রূপান্তর হয়ে যাবে, তাহলে অনায়াসে বাংলা ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।’

একুশে ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে এসকে সিনহা বলেন, ‘আজকের দিন আমাদের জন্য শোকের। ১৯৫২ সালের এই দিনে আমরা বাংলা ভাষা পেয়েছি আমাদের ভাইদের রক্তের বিনিময়ে।’এই ভাষা দিন দিন আরও সমৃদ্ধ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

(ঢাকাটাইমস/২১ফেব্রুয়ারি/জেবি)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
এনআরবিসি ব্যাংকের অডিট কমিটির সভা অনুষ্ঠিত 
এলপি গ্যাসের দাম কমেছে
এনআরবি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড পোর্টফোলিও ৪০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে
মাঠপর্যায়ে প্রতিবন্ধীদের সেবা প্রদানে জনবল সংকটসহ নানা দুর্বলতা রয়ে গেছে: বিডিডিটি
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা