অকারণে নিন্দা-মন্দ করে খারাপকে যেন উৎসাহ না দেই: দোলন

মো. মুজাহিদুল ইসলাম নাঈম, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৫ জুন ২০১৭, ০৯:৫৮

অকারণে মানুষের নিন্দা-মন্দ করে আমরা যেন খারাপকে উৎসাহ না দেই সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে বলেছেন বিশিষ্ট সমাজ সেবক, কাঞ্চন মুন্সী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান, পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকাটাইমস ও সাপ্তাহিক ‘এই সময়’ সম্পাদক আরিফুর রহমান দোলন।

শনিবার বিকালে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার চান্দড়া নূরাণী তা’লীমুল কোরআন মাদ্রাসা ও এতিমখানায় এক ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

আরিফুর রহমান দোলন বলেন, মানুষের গিবত করা অনেক বড় গোনাহ। কিন্তু আমরা প্রতিনিয়ত তাই করে চলেছি। ভালো কাজের প্রসংশা না করে নিন্দা-মন্দ করছি । আমাদেরকে ভালো কাজ করতে হবে এবং এ কাজের ব্যাপারে উৎসাহ দিতে হবে। অকারণে মানুষের নিন্দা-মন্দ করে আমরা যেন খারাপকে উৎসাহ না দেই আমাদের খেয়াল রাখতে হবে ।

ঢাকাটাইমস সম্পাদক বলেন, দুনিয়ার শিক্ষার পাশাপাশি দুনিয়ার পরে যে জীবন সে জীবনের জন্য তো আমাদের প্রস্তুতি নেয়া দরকার এবং সে প্রস্তুতি নিতে গেলে ইসলামকে যদি পরিপূর্ণভাবে অনুসরন করতে হয় তাহলে কোরআনের শিক্ষা, হাদীসের শিক্ষা আমাদের জন্য অপরিহার্য। আর সেই শিক্ষার পাশাপাশি দুনিয়াতে চলার জন্য আমাদের যে বাস্তব শিক্ষা সেটিরও প্রয়োজন। এ মাদ্রাসায় দ্বীনি শিক্ষার পাশাপাশি দুনিয়াতে চলার জন্য যে শিক্ষার প্রয়োজন সে শিক্ষার ব্যবস্থাও রেখেছে বলে আমি জানি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রত্যেকে মরতে হবে। আমরা যত প্রভাবশালী হইনা কেন, দুনিয়ার সবচাইতে ক্ষমতাশালী ব্যক্তিকেও একটা সময় চলে যেতে হবে। কিন্তু আমার কর্ম যেন আমাকে আজীবন বাঁচিয়ে রাখে এরকম কাজ যদি আমি করি, আমাকে দিয়ে যদি কেউ উপকৃত হয়। আমাকে দিয়ে যেন কারও ক্ষতি না হয়। সেটি আমি মনে করি আমাদের প্রত্যেকে মনে রাখা দরকার।

কাঞ্চন মুন্সী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বলেন, আজকে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার শহর থেকে গ্রামে হচ্ছে। প্রায় সবার হাতেই মোবাইল। এ মোবাইল ব্যবহারের ভালো দিক ও খারাপ দিক দুটোই আছে। চাইলে এ মোবাইল ব্যবহার করে আপনি কিন্তু ইসলাম ও দ্বীনের শিক্ষা দিতে পারেন। আবার এ মোবাইল ব্যবহার করে ইউটিউবের মাধ্যমে ভালো জিনিস ও খারাপ জিনিস দেখতে পারবেন। কিন্তু আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে । আপনি তার সঠিক ব্যবহার করবেন, নাকি অপব্যবহার করবেন।

এই সমাজ সেবক বলেন, যত দিন যাচ্ছে আমরা দেখছি সমাজে হানাহানি, মারামারি, কাটাকাটি এটি কিন্তু বাড়ছে। এটি খুবই আমাকে পীড়া দেয়। আশা করি, আমরা এখানে যারা উপস্থিত আছি বা যারা আসতে পারি নাই আমরা যেন আমাদের ব্যক্তিগত জীবন চর্চায় সততা, নিষ্ঠা এবং সব সময় আমার কারণে যেন কেউ ক্ষতিগ্রস্থ না হয় । আমি যেন কাউকে আঘাত না দেই, কষ্ট না দেই এটি যেন আমরা মনে রাখি।

‘এই সময়’ সম্পাদক বলেন, আমি যে প্রতিষ্ঠানে বসে কথা বলছি এ প্রতিষ্ঠান শুধু নয়, যত প্রতিষ্ঠান আমাদের এলাকায় আছে এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা যেন সঠিক শিক্ষা, নৈতিক শিক্ষা নিতে পারি। এই মাদ্রাসায় হয়তো বেশি করে দ্বীনি শিক্ষা হয়। কিন্তু আমাদের এলাকায়তো অনেক প্রতিষ্ঠান আছে। স্কুল আছে, কলেজ আছে আবার নতুন একটি ট্রেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (টি.টি.সি) হচ্ছে। আপনারা দেখেছেন কামারগ্রাম কাঞ্চন একাডেমির পাশে যে মাঠ আছে ওই মাঠে তিন একর জমির উপরে ট্রেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার হচ্ছে। সরকার এমন একটি ব্যবস্থা আপনাদের করে দিচ্ছে যে এখানে বিভিন্ন ট্রেডে শিক্ষা নিয়ে আপনাদের ছেলে-মেয়েরা অনেক বেশি এবং ভালো কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে। আমাদের নিয়ত যদি ভালো থাকে, আমরা কিন্তু অনেক ভালো করতে পারবো। আমার নিয়ত থাকবে আমি মানুষের সেবা করবো। আপনি মাদ্রাসায় পড়েন, স্কুলে পড়েন, কলেজে পড়েন মানবসেবা হচ্ছে বড় ধর্ম। কামারগ্রামে কাঞ্চন একাডেমি যদি না হত আমি তো মনে করি এ মাদ্রাসাও হত না। কারণ, ওই প্রতিষ্ঠানে যারা পড়াশোনা করে সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তাদের অনেকের অবদান আছে এই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠায়। তারা যদি প্রতিষ্ঠিত হতে না পারতো এই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার জন্যে তাদের ভূমিকা রাখার সুযোগ থাকতো না। মরহুম কাঞ্চন মুন্সী সাহেব যে মানবসেবার জন্য প্রতিষ্ঠান করে দিয়ে গেছেন। উনিতো মারা গেছেন । ওনার এই কর্ম দিয়ে আমাদের অনুসরণ করতে হবে। বিভিন্নভাবে যারা প্রতিষ্ঠিত তারা যদি সমাজের উন্নয়নে এগিয়ে আসে তাহলে দেশে আর দারিদ্র থাকবে না। ইসলাম তো সাম্যের কথাও বলে। একজন অনেক বেশি ভালো থাকলো, অনেক বিত্তশালী কিন্তু আর একজন না খেয়ে আছে এটি ইসলাম অনুমোদন করে না। এ বিষয়গুলো আমাদের খেয়াল রাখা দরকার। সর্বোপরি এ প্রতিষ্ঠানে দিনদিন অনেক ত্যাগের মাধ্যমে আপনারা এগিয়ে যাচ্ছেন। আপনাদের এ এগিয়ে চলায় অনেকেই সঙ্গে রয়েছেন, আমরাও বিভিন্ন সময় সহযোগিতা করেছি। ভবিষ্যতে এ প্রতিষ্ঠানকে আরও যেন বেশি সহযোগিতা করা যায় সে জন্য আমি সব সময় আপনাদের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকবো-এই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।

মাদাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে আরও বক্তব্য দেন, ফরিদপুর জেলা পরিষদের সদস্য ও কাঞ্চন মুন্সী ফাউন্ডেশনের পরিচালক শেখ শহীদুল ইসলাম শহীদ।

এসময় আলফাডাঙ্গা আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ মোরশেদুর রহমান তাজ, আওয়ামী লীগ মনোনীত গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী ও ফরিদপুর জেলা ছাত্রলগের সহ-সভাপতি ইনামুল হাসান, আলফাডাঙ্গা অনলাইন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. মুজাহিদুল ইসলাম নাঈমসহ মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/২৫জুন/প্রতিনিধি/জেডএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :