সিলেটে বন্যার উন্নতি হলেও পিছু ছাড়ছে না দুর্ভোগ

সিলেট প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৮ জুলাই ২০১৭, ১৮:২১ | প্রকাশিত : ০৮ জুলাই ২০১৭, ১৭:৩২

পানি কমতে শুরু করায় সিলেটের আট উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতির দিকে। ভারী বৃষ্টি না হওয়ায় সুরমা ও কুশিয়ারা নদীতে পানি কমে পরিস্থিতির এ উন্নতি হয়েছে।

বন্যার পানি কমলেও দুর্ভোগ পিছু ছাড়ছে না দুর্গত মানুষদের। ঘরে খাবার নেই, বাইরে কাজ নেই। পানিবন্দি জীবন বিষয়ে তুলেছে ১৮ হাজার পরিবারের প্রায় দেড় লাখ মানুষের। বন্যায় ক্ষতি হয়েছে ৪ হাজার ৪৯১টি ঘরবাড়ি। তাছাড়া দুর্গতের অনেকেই পানি বাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। ত্রাণ পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে।

বন্যার কারণে বন্ধ রয়েছে ২০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান। বেশি বন্যা কবলিত তিন উপজেলার ১১ টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৬২৯ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন। পানি কমায় অনেকে বাড়ি চলে গেছেন বলে জানা যায়।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, কুশিয়ারা ও সুরমা নদীর পানি গত চার দিন ধরে কমছে। শনিবার ৫ টি পয়েন্টে পানি কমেছে ৬-১০ সেন্টিমিটিার। তবে এখনো বিপদসীমার ওপরে রয়েছে নদীর পানি। ভারী বৃষ্টি না হলে আর নতুন করে পাহাড়ি ঢল না নামলে বন্যা পরিস্থিতির আরো উন্নতি হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এদিকে পানি কমতে শুরু করায় নানা পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে দুর্গত এলাকায়।

বন্যায় স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবেলায় কাজ চলছে জানিয়ে সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, বন্যাদুর্গত এলাকায় চিকিৎসা সেবায় কাজ করছে ৭৮টি মেডিকেল টিম। পানিবাহিত অসুখ মোকাবেলায় মজুদ রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ওষুধ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বন্যাদুর্গত এলাকায় অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে মানুষ। দুর্গতরা ত্রাণের আশায় থাকলে ত্রাণ তৎপরতা অপ্রতুল বলে অভিযোগ করেছেন ভোক্তভোগীরা।

বিয়ানীবাজারের আব্দুল জব্বার জানান, ১৫ দিন ধরে আশ্রয় কেন্দ্রে আছি। কিন্তু সরকারি সাহায্য পেয়েছি মাত্র ছয় কেজি চাল।

ওসমানী নগরের সাদীপুরের নুরবানু বিবি বলেন, সাত জনের সংসার। মাত্র একদিন ৫ কোজি চাল সাহায্য পেয়েছি। দুই দিনেই চাল শেষ। এখন একবেলা খাচ্ছিতো আরেক বেলা উপোস করছি।

তবে, জেলা প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী, বন্যায় সিলেটের ৮টি উপজেলার ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭৫৫ জন লোক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।

দুর্গতদের সাহায্যে জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শহীদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, ওসমানীনগর, কোম্পানীগঞ্জ, দক্ষিণ সুরমা, জকিগঞ্জ উপজেলার ২৪টি ইউনিয়নের ৪৬৬ গ্রাম বন্যা কবলিত হয়েছে।

তিনি জানান, এ পর্যন্ত ৩১৩ টন চাল ও ৫ লাখ ৫৭ হাজার ৫০০ টাকা ৮টি উপজেলায় পাঠানো হয়েছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী মজুদ রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/০৮জুলাই/প্রতিনিধি/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :