মির্জাপুরের দুই অসহায়ের পাশে হংকং আ.লীগ নেতা
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের দরিদ্র মেধাবী ছাত্রী কাজী মারিয়ার লেখাপড়ার সহায়তায় এবার হাত বাড়ালেন হংকং শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ লিটন। তিনি মারিয়ার বই কেনার জন্য দুই হাজার টাকা সহায়তার ঘোষণা দেন।
এছাড়া অসহায় সেই গৃহবধূ সুলতানার চিকিৎসা সহায়তার ঘোষণার দশ হাজার টাকাও সোমবার তিনি দিয়েছেন।
অন্যদিকে কাজী মারিয়ার খবর পড়ে উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের সাইফুল ইসলাম রুদ্র নামে এক ব্যবসায়ী বই কেনার জন্য এক হাজার টাকা ইউএনও কাছে পৌঁছে দেন।
কাজী মারিয়া আক্তার এ উপজেলার মহেড়া ইউনিয়নের বরটিয়া গ্রামের দরিদ্র কৃষক আব্দুল মান্নানের মেয়ে মারিয়া। ২০১৭ সালে ড. আয়েশা রাজিয়া খোন্দকার স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পাসের পর মির্জাপুর কলেজে মানবিক শাখায় ভর্তি হন তিনি।
২৫ আগস্ট ঢাকা টাইমসের ‘দরিদ্র কলেজ ছাত্রীর পাশে মির্জাপুরের ইউএনও’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হলে খবরটি আবুল কালাম আজাদ লিটনের নজরে আসে। পরে তিনি মারিয়ার বই কেনার জন্য অর্থ সহায়তার ঘোষণা দেন।
তাছাড়া গত ১০ জুলাই ‘মির্জাপুরে অসহায় গৃহবধুর চিকিৎসায় প্রবাসীর সহায়তা’ শিরোনামে ঢাকাটাইমসে একটি মানবিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেই খবরটিও আবুল কালাম আজাদ লিটনের নজরে আসে। তিনি তার চিকিৎসা সহায়তার জন্য ১০ হাজার টাকা সহায়তার ঘোষণা দেন। ঘোষণার সেই ১০ হাজার টাকা সোমবার মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত সাদমীনের মাধ্যমে সুলতানার বাবা-মার হাতে পৌঁছে দেন।
আবুল কালাম আজাদ লিটন হংকং শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। তিনি মির্জাপুর উপজেলার বহুরিয়া ইউনিয়নের গোহাইলবাড়ি গ্রামের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবু সাঈদ ছাদু মিয়ার ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে চীনের হংকংয়ে বসবাস করে ব্যবসা করছেন।
অভাবের সংসার হলেও উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার স্বপ্ন দেখে মেধাবী মারিয়া। তার স্বপ্নপূরণে বর্গাচাষি বাবা আব্দুল মান্নানের সমর্থন থাকলেও আর্থিক অনটনের কারণে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া তার বাবার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। আত্মীয়-স্বজনের সহযোগিতায় কলেজে ভর্তি হলেও গত দুই মাসেও বই কিনতে পারেননি। নিজের ও পরিবারের দুরবস্থার কথা মির্জাপুরের ইউএনও কাছে তুলে ধরেন মারিয়া। ইউএনও আন্তরিকতার সঙ্গে মারিয়ার কথা শুনেন এবং তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে পাশে থাকার আশ্বাস দেন। ওই সময় ইউএনও ইসরাত সাদমীন মারিয়ার বই কেনার জন্য এক হাজার টাকা দেন এবং কলেজে বিনা বেতনে পড়ার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন। এ নিয়ে ঢাকাটাইমসে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
মারিয়ার বাবা একজন বর্গাচাষি এবং পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। দুই ভাই-বোনের মধ্যে তিনি বড়। লেখাপড়া শিখে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে চায় মারিয়া। তার স্বপ্নপূরণে সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন মারিয়া।
এদিকে কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গৃহবধূ সুলতানার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন। তার হাত ও পা কিছুটা বাঁকা হয়ে যাওয়ায় এবং বিভিন্ন অস্থিসন্ধিতে তীব্র ব্যথায় এখনো তিনি হাঁটতে পারেন না। সুলতানা সখিপুর উপজেলার চাকদহ গ্রামের মো. আইয়ূব আলীর স্ত্রী। তাদের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। এর মধ্যে কিছু জমি বিক্রি করে স্বামী বিদেশ গেলেও সেখানে সুবিধা না হওয়ার দেশে ফিরে আসায় বন্ধ হয়ে পড়ে সুলতানার চিকিৎসা। গত ছয় মাস ধরে অর্থাভাবে চিকিৎসা বন্ধ হয়ে পড়ায় বর্তমানে তার হাত-পা বাঁকা হয়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে আবুল কালাম আজাদ লিটন বলেন, সমাজে যার যার অবস্থান থেকে অসহায়ত ও দরিদ্র মানুষকে সহায়তা করতে হবে।
(ঢাকাটাইমস/২৮আগস্ট/প্রতিনিধি/এলএ)