নেত্রকোণায় ধর্ষণ মামলায় যুবক গ্রেপ্তার

নেত্রকোণা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৩:০২

নেত্রকোণা সদরের ঠাকুরাকোণায় কিশোরী পান্না আক্তারকে গণধর্ষণ ও আত্মহত্যায় প্ররোচণায় অভিযুক্তদের অন্যতম যুবক মামুন মিয়াকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামুন ঠাকুরাকোণা গ্রামের গফুর মিয়ার ছেলে।

সোমবার রাতে মামুনকে গ্রেপ্তার করার তথ্য নিশ্চিত করেছেন নেত্রকোণা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন।

থানায় পান্না আক্তারের মা আলপনা আক্তারের দায়ের মামলায় মামুন মিয়া অন্যতম আসামি। এ ছাড়াও এই ধর্ষণের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে আরও দুই আসামি হচ্ছেন- উপজেলার ঠাকুরাকোণা গ্রামের কাজল সরকারের ছেলে অপু চন্দ্র সরকার (২০) ও মৃত চান মিয়ার ছেলে সুলতান (২২)। এদের মধ্যে অপু জেলা ছাত্রলীগের কৃষি বিষয়ক উপ সম্পাদক বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান জনি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নেত্রকোণা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহ নূর এ আলম জানান, রাত দেড়টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে মামুনকে দুর্গাপুরের বিরিশিরি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি জানান, মামুন্ ওই এলাকার আকঞ্জিপাড়ায় তার ভগ্নিপতি আসাদের ভাড়া করা বাসায় পালিয়েছিলেন। তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। অন্য আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা।

ঘটনার পরপর প্রভাবশালী মহলের সাথে পুলিশের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠে গণধর্ষণের ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে অপচেষ্টা চালানোর। এরই প্রতিবাদে এলাকাবাসী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে।

মেয়েটির স্বজন ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত ৩ সেপ্টেম্বর মেয়েটিকে (১৪) ধর্ষণ করে স্থানীয় কয়েকজন যুবক। পরদিন সোমবার বাড়ির পাশে মেয়েটির ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়।

নেত্রকোণা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন জানান, এই মামলার তত্ত্বাবধান করছেন ময়মনসিংহ রেঞ্জের উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি ) নিবাস চন্দ্র মাঝি, নেত্রকোণা জেলা পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী।

পরিদর্শক (তদন্ত) শাহ নূর এ আলম জানান, কিশোরী পান্নার মা আলপনা আক্তার বাদী হয়ে দায়ের মামলাটিতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(৩)ও ৯(ক) ধারায় গণধর্ষণ ও আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগ আনা হয়েছে।

তদন্ত কর্মকর্তা জানান, প্রথমে লাশ উদ্ধারের পর হত্যা না আত্মহত্যা জানতে চেয়ে ময়নাতদন্তে লাশটি পাঠানো হয়েছিল। সেই প্রতিবেদন এখনো আসেনি। তবে ধর্ষণ হয়েছে কি না তা জানতে পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্যে কবর থেকে লাশ উত্তোলনে আদালতে আবেদন করা হয়েছে।

মেয়েটির মায়ের অভিযোগ, গত রবিবার সন্ধ্যায় ঠাকুরাকোনা গ্রামের তিন যুবক তার মেয়েকে (১৪) পাশের মাছের খামারে একটি ঘরে ডেকে নিয়ে যান। রাত ৮টার দিকে তিনি কৌশলে সেখানে গিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। তখন মেয়েকে বিধ্বস্ত দেখাচ্ছিল।

তিনি বলেন, ঘরে এসে তার মেয়ে ওই তিন যুবক তাকে ধর্ষণ করেছে বলে জানান। কিছুক্ষণ পর ‘ধর্ষণকারী’ যুবকদের একজন তাদের ঘরে এসে ঘটনাটি কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি দেয়। কিন্তু স্থানীয় লোকজন বিষয়টি জেনে ফেলে।

পরদিন (সোমবার) বেলা ১১টার দিকে পাশের ঘরের আড়ার সঙ্গে মেয়েটির ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়।

মেয়েটির বাবা বলেন, গত বুধবার তিনি থানায় অভিযোগ দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ অভিযোগ না নিয়ে আগে পুলিশের করা অপমৃত্যুর মামলাটিই চলবে বলে জানায়।

এ বিষয়ে ঘটনার পর পর নেত্রকোণা মডেল থানার ওসি আমীর তৈমুর ইলী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘মেয়েটি গলায় দড়ি দিয়ে মারা গেছে। কোনো রেপ টেপ হয়নি। প্রেমসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে অভিমানে মরেছে।’

(ঢাকাটাইমস/১২সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :