‘কোর্টে প্র্যাকটিস ছাড়াও আইনজীবীর অনেক কিছু করার আছে’

জহির রায়হান, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭, ১১:৩৩ | প্রকাশিত : ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৯:২৬

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ল’ অ্যান্ড মুটিং সোসাইটি আয়োজিত ‘এনএসইউ ল’ ফেস্ট সিজন ওয়ান’ এর আজ শেষ দিন। আইন বিষয় নিয়ে কেন মেলার আয়োজন ও মেলা নিয়ে আগামীতে কী পরিকল্পনা রয়েছে সে সম্পর্কে আয়োজনের মিডিয়া পার্টনার ঢাকাটাইমসের সঙ্গে কথা বলেছেন নাসমিন জেবিন নূর। তিনি এনএসইউর ল ডিপার্টমেন্টের লেকচারার ও ল’ অ্যান্ড মুটিং সোসাইটির ফ্যাকালটি অ্যাডভাইজার।

নাসমিন জেবিন নূর বলেন, আইন বিষয় নিয়ে যে মেলা হতে পারে এটা অনেকে চিন্তাও করেনি। কিন্তু সেটা এখন বাস্তব। একটি ছাদের নিচে আইন বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য জানা, সিনিয়ার আইজীবীদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় কথা বলার সুযোগ। বিভিন্ন ল ফার্মের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা, খেলার ছলে আইনের বিভিন্ন বিষয় শেখা-এ বিষয়গুলো আমরা পাইনি। আমরা যখন ল’য়ের শিক্ষার্থী ছিলাম তখন এমন সুয়োগ পেতাম না। আমরা কোর্টে যাওয়ার পর আমরা কী মোকবেলা করবো, কার সঙ্গে কথা বলবো, কীভাবে যোগাযোগ করবো এগুলো বুঝতাম না। এটা একটা স্ট্রাগেলিং লাইভ থাকতো।

সে সময় ল’ বিষয়ে গ্রাজুয়েশন করার পর কোর্টে পরিচিতি হতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে জানিছে তিনি বলেন, এখানে মেলার মাধ্যমে খুব সহজেই এ বিষয়গুলো জানা যায়। পরস্পরের সঙ্গে পরিচয় হওয়া যায়।

নাসমিন জেবিন নূর বলেন, যেহেতু ল’ শিক্ষার্থীদের প্র্যাকটিকাল শিক্ষা নেয়া জরুরি, তাদের পারফরম্যান্স কেমন সেটা জানানো প্রয়োজন তাই আমি যখন ফ্যাকালটি অ্যাডভাইজার হই আমার প্রথম চিন্তা এসেছে যে, এমন একটি আয়োজন করতে হবে যেখানে পড়া অবস্থায় শিক্ষার্থীরা জানবে তাদের ওয়ার্ক লাইফটা কেমন হবে। যেটা তাদের ক্যারিয়ার বেছে নিতে সাহায্য করবে।

আইন বিষয়ের লেকচারার বলেন, একজন আইনজীবী কিন্তু কোর্টে প্র্যাকটিস ছাড়াও অনেক কিছু করতে পারে- লিগ্যাল অ্যাডভাইজার হতে পারে, কোন ল ফার্মে জয়েন্ট করতে পারে, যেখানে সে শুধু গবেষণাধর্মী কাজ করবে। কোনো কোম্পানিতে লিগাল অ্যাডভাইজার হতে পারবে। এই যে এতগুলো দিক আছে এটা একজন শিক্ষার্থী প্রথমে বুঝতে পারে না। অনেক শিক্ষার্থীর বাবা-মা বুঝতে পারে না কেন তার সন্তানকে আইন বিষয় পড়াবে।

নাসমিন জেবিন নূর বলেন, কোনো শিক্ষার্থী যখন প্রথম কোর্টে যায় তখন সিনিয়রদের কাজ দেখে শিখতে হয়। তখন সে কোনো আয় করতে পারে না। দেখা যায় কিছুদিন প্র্যাকটিস করে অনেকে টাকা না পেয়ে হতাশ হয়ে যায়। তিনি আর প্র্যাকটিসে যান না। কিন্তু শিক্ষার্থীরা যদি শুরুতেই এই বিষয় প্রশিক্ষণের কাজটা করে তাহলে কিন্তু কিছু বিষয় তারা আগেই শিখে যাবে। অনেকের সঙ্গে আগে থেকেই যোগাযোগ থাকে। এর জন্য যখন তারা গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে যখন কোর্টে যাবে, সিনিয়রা তাদের মূল্যায়ন করবে। তাদের কিছু পেমেন্টও দিতে পারে, যেহেতু তারা কিছু কাজ পারে। এটা নতুন আইনজীবীদের উৎসাহ যোগাবে।

এই শিক্ষক বলেন, কোর্টের পরিবেশ আর আমরা বইয়ে যেটা পরি সেটা সম্পূর্ণ আলাদা। একজন আইজীবী কখনো বই পড়ে আইজীবী হতে পারে না। আইনজীবী হওয়ার জন্য তাকে কোর্টে প্র্যাকটিস করা জরুরি। আমরা এই নথ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু থেকেই প্র্যাকটিক্যাল স্কিলগুলো শিক্ষাথীদের দিয়ে থাকি। আমাদের শিক্ষার্থীদের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। আমরা শিক্ষার্থীদের কোর্টে নিয়ে যাই সেখানে কোর্ট টায়ালে বসে তারা অবজার্ভ করতে পারে। সেগুলো দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে আবার এর ওপর তারা প্রেজেন্টেশন দেয়। আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় পাঠাই । সেখানে তারা আইনের বিভিন্ন বিষয় তাদের কাছে তুলে ধরে।

নাসমিন জেবিন নূর বলেন, এখানে আমরা ল শিক্ষার্থীদের জন্য ক্যারিয়ার মেলার আয়োজন করেছি যেখানে ১৫টির মতো দেশের শীর্ষ সারির প্রায় ১৫টি ল’চেম্বার থেকে প্রতিনিধিরা এসেছেন। আইনের শিক্ষার্থীরা চেম্বারগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সুযোগ পেয়েছে। চেম্বারগুলো তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কাজের সুয়োগ দেয়। অনেক শিক্ষার্থী শিক্ষানবীশ হিসেবে কাজ করতে চেম্বারগুলোতে আবেদন করে।

তিনি বলেন, আমি মনে করি আমরা একটা মাইলস্টোন তৈরি করেছি। শুধু আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের বাইরে পাঠাবো না। আমরা অন্য জায়গা থেকে ল ইয়ারকে আমাদের এখানে এনে তাদের তাদের অভিজ্ঞতা শোনাবো। এই যোগাযোগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নেটওয়ার্কিং তৈরিতে সহায়তা করবে। এ উদ্দেশ্য নিয়েই ল ফেস্ট করা।

নাসমিন জেবিন বলেন, আগামীতে আরও বড়ভাবে এ মেলার আয়োজন করার পরিকল্পনা আছে। শুধু ল চেম্বার নয়, যেসব সংস্থা ও এনজিও আছে যারা ল অ্যাডভাইজিং করে, নিয়োগ দেয় আগামীতে তাদেরও নিয়ে আসবো। যেখানে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ল শিক্ষার্থীরার অংশ নিতে পারবে।

প্রথম ল অলিম্পিয়াড আয়োজনের কথা জানিয়ে নাসমিন জেবিন বলেন, এ অরিম্পিয়াডে আমরা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেব। তাদের অনেক সময় তাৎক্ষণিক সমস্যা সমাধান করার সামর্থ্য থাকে না। ল অলিম্পিয়াডে প্রথমে হবে এমসিকিউ পরীক্ষা, যারা ভালো করবে সেখান থেকে আমরা ২০ জনকে আলাদা করবো। এরপর সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে ১০ জনকে বাছাই করা হবে। এই ১০ জনকে একটা সমস্যা সমাধান করতে দেয়া হবে। সেখান থেকে তিনজনকে বাছাই করে আমরা পুরস্কার দেব।

সন্তানকে আইন বিষয় পড়তে বাবা-মাকে উৎসাহ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে নাসমিন জেবিন বলেন, ল তে প্রধান বিষয় যেটা শেখানো হয় সেটা হলো নীতি-নৈতিকতা। একটা মানুষকে ইথিকস ও মোরাল বোঝানো গেলে সে ভালো ল ইয়ার হবে। আর এ পেশায় মানুষের সেবায় কাজ করা যায়।

(ঢাকাটাইমস/১৩ডিসেম্বর/জেআর/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিক্ষা এর সর্বশেষ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঢাবি পড়ুয়াদের নেতৃত্বে মাহমুদ-রিয়াদ

রাবিপ্রবিতে ‘সি’ ইউনিটের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় উপস্থিতির হার ৭৫.৫০ শতাংশ

স্কুল-কলেজের সভাপতিকে হতে হবে এইচএসসি পাস, গেজেট জারি

ঢাবির সাংবাদিকতা বিভাগের নবীনবরণ ও অগ্রায়ন অনুষ্ঠিত

শেষ হলো ঢাবি অধিভুক্ত ৭ কলেজের প্রথমদিনের ভর্তি পরীক্ষা

ঢাবির সাংবাদিকতা বিভাগের নবীনবরণ ও অগ্রায়ন আজ

বেরোবিতে সাংবাদিকতা বিভাগের প্রধান হিসেবে নিয়োগ চেয়ে আইনি নোটিশ

বেরোবিতে বিশিষ্ট পরামাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

আইইউবিএটির প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. এম আলিমউল্যা মিয়ানের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী শুক্রবার

পৃথিবী যতদিন থাকবে বঙ্গবন্ধু ও রবীন্দ্রনাথের দর্শন-কর্ম বেঁচে থাকবে: ঢাবি উপাচার্য

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :