মাদারীপুরে তিন ফুট নিচু করে সড়ক পাকাকরণ

সাগর হোসেন তামিম, মাদারীপুর
| আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২০:০৭ | প্রকাশিত : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৯:৫৩

সামান্য বৃষ্টি-বাদলায় কাদাপানিতে সয়লাব হতো রাস্তাটি। তখন হাঁটাচলা দায় হতো। এখন সেটি পাকা করার কাজ চলছে। তাতে খুশি হওয়ার কথা এলাকাবাসীর। কিন্তু তা তারা হতে পারছে না। কারণ এলজিইডির সড়কটি দুই পাশের বাড়িঘর থেকে তিন ফুটের মতো নিচু করে পাকাকরণের কাজ চলছে।

মাদারীপুর সদরের রাস্তি ইউনিয়নের এই গ্রামীণ সড়কটি এভাবে নিচু করে নির্মাণের শুরু থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে সংশ্লিষ্ট উপজেলা ও জেলা অফিসে অভিযোগ দিলেও প্রতিকার মিলছে না।

তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, মাদারীপুর শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে রাস্তি ইউনিয়নের পাঁচখোলা থেকে ডিএসপি স্কুল পর্যন্ত কঁাঁচা সড়কটি নির্ধারিত উচ্চতায় পাকা করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে।

কিন্তু স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সড়কটি আগের মতোই নিচু করে পাকাকরণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের মাটি কেটে সেখানে ইট বিছানো হচ্ছে। দুই পাশের মাটি দু-তিন ফুট উঁচু বলে রাস্তাটি অনেকটা নালার রূপ ধারণ করেছে।

এলাকাবাসী জানান, পুরনো সড়কের মাটি দুই থেকে তিন ফুট গভীর করে কেটে পাকাকরণের কাজ করা হচ্ছে। একন সড়কটি এলাকার বাড়িঘর থেকে নিচু হওয়ায় সেটি জনগণের উপকারের বদলে সমস্যার সৃষ্টি করবে।

স্থানীয় বাসিন্দা রবিউল ইসলাম বলেন, দুই পাশের বাড়িঘর থেকে প্রায় তিন ফুট নিচু করে ইট বিছানোর কারণে বর্ষায় বাড়ির পানি রাস্তায় জমা হয়ে যাতায়াতে ভোগান্তির সৃষ্টি করবে। সড়কও নষ্ট হবে। কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানানোর পর তারা বলছেন ঠিকাদারকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে এর কোনো প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না।

এভাবে রাস্তা পাকা করাকে সরকারের টাকা অপচয় বলে মনে করেন কলেজছাত্রী সাবরিনা আক্তার। তিনি বলেন, ‘এভাবে সরকারের অর্থ নষ্ট করার কোনো মানে হয় না। আমাদের এলাকার বাড়িঘরের চেয়ে পাকা রাস্তা নিচ করে তৈরি করা হচ্ছে। এমন হাস্যকর বিষয় আর কোথাও দেখিনি।’

সরেজমিনে আর দেখা গেছে, দেড় কিলোমিটার সড়কের অর্ধেকের বেশি জায়গায় ইতিমধ্যে নিচু করে ইটের খোয়া বিছানো হয়ে গেছে। এখানে নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগও করছেন এলাকাবাসী। বাকি অংশও একইভাবে কাজ শেষ করতে ঠিকাদার অটল।

স্থানীয় শিক্ষক সাইদুর রহমান এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘প্রতিটি রাস্তা পাকাকরণের ক্ষেত্রে বন্যাস্তর থাকে। এখানে কাজের ক্ষেত্রে এই স্তর মানা হচ্ছে না। কোনো রকম জোড়াতালি দিয়ে কাজ করছে ঠিকাদার। ভোগান্তিতে পড়তে হবে আমাদের কয়েকটি গ্রামের মানুষকে।’

এভাবে রাস্তা পাকাকরণের কাজে ক্ষুব্ধ গৃহবধূ জাহেদা বেগম। বলেন, ‘এখন যে পাকা রাস্তা হচ্ছে, তার চেয়ে আমাদের কাঁচা রাস্তাই ভালো। আমাদের উঁচু রাস্তা কেটে গর্ত করে নিচু রাস্তা বানানো হচ্ছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী বাবুল আখতারের জানান, তিনি সরেজমিন পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেবেন। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রকৌশলীও বিষয়টি দেখবেন বলে জানান তিনি।

মাদারীপুর সদর উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ মামুন বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখেছি যে সড়কটি বন্যার স্তর এবং নির্ধারিত উচ্চতার চেয়ে বেশ নিচু করে পাকা করা হচ্ছে। ঠিকাদারকে নিয়ম অনুযায়ী কাজের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’

(ঢাকাটাইমস/১৩ফেব্রুয়ারি/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :