সিজারের ছয় মাস পর বের হলো গজ

ফরিদপুর প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৬ মার্চ ২০১৯, ১৪:৩২
অ- অ+

ফরিদপুরে এক প্রসূতির সিজার হওয়ার ছয় মাস পর পেট থেকে গজ ব্যান্ডেজ বের করা হয়েছে। তার সিজারিয়ান অপারেশন করে পেটে গজ ব্যান্ডেজ রেখেই সেলাই করে দিয়েছিলেন চিকিৎসক।

ভুক্তভোগী ওই নারীর নাম সোফিয়া বেগম (৪০)। তিনি মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার শিকার মঙ্গল ইউনিয়নের চরফতেবাহাদুর গ্রামের তোতা হাওলাদারের স্ত্রী। এই নারীর আগেও দুইটি বাচ্চা স্বাভাবিকভাবে প্রসব (নরমাল ডেলিভারী) করেছেন। তৃতীয় সন্তান প্রসবের সময় সিজার করা হয় তার।

বৃহস্পতিবার বিকাল ফরিদপুরের একটি বেসরকারী হাসপাতালে পুণরায় অপারেশন করে তার পেটের গজ ব্যান্ডেজ বের করা হয়েছে। তবে ভেতরে পচন ধরায় চিকিৎসকরা তার সুস্থতার বিষয়ে কিছুই বলতে পারছেন না। হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন সোফিয়া।

ওই নারীর স্বামী তোতা হাওলাদার জানান, ৬ মাস আগে প্রসব যন্ত্রনা নিয়ে মাদারীপুরের নিরাময় ক্লিনিকে ভর্তি করান স্ত্রীকে। সেখানকার চিকিৎসক রুনিয়া স্ত্রীকে দেখে বলেন জরুরি সিজার করাতে হবে। চিকিৎসকের কথা অনুযায়ী সিজারে রাজী হলে সেদিনই সিজার করা হয়। মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন সোফিয়া।

কিন্তু স্ত্রীর পেট ব্যথা কোনভাবেই কমছিল না। প্রায় ১৫ দিন হাসপাতালে থেকে স্ত্রীকে বাড়ি নিয়ে আসি। এর পরে অপারেশনের ক্ষত থেকে পুজ বের হতে থাকলে আবারো নিয়ে আসি ওই চিকিৎসকের কাছে। তখন চিকিৎসক পেটে প্রথমে ইনফেকশন পরে টিউমার এর কথা বলে আবারো হাসপাতালে ভর্তি করে। তারপরও স্ত্রী সুস্থ না হলে মাদারীপুরেই অপর এক গাইনী চিকিৎসককে দেখায় ওই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। এরপরও স্ত্রী সুস্থ না হওয়াতে তাকে নিয়ে যাই ঢাকা মিটফোর্ড হাসপাতালে। এরপরে বরিশাল হাসপাতালে। কিন্তু কোথাও স্ত্রীর রোগ ধরতে পারেনি, সুস্থও হয়নি।

তিনি বলেন, গত ৬ মাস স্ত্রীকে চিকিৎসা করিয়ে একদম নিঃস্ব হয়ে যাই আমি। অবৈধভাবে থাকার কারণে সিঙ্গাপুর থেকে ফেরত পাঠিয়ে দেয়ার পরে যা কিছু অবশিষ্ট ছিল সবই স্ত্রীর চিকিৎসার পিছনে খরচ হয়ে গেছে।

সবশেষ, স্ত্রীকে নিয়ে আসি ফরিদপুরের শমরিতা জেনারেল হাসপাতালে। এখানকার সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. ফজলুল হক শোভন অপারেশন করে পেট থেকে গজ ব্যান্ডেজ বের করেছেন। বলেছেন, ভেতরে নারীতে পচন ধরেছে, আল্লাহকে ডাকতে।

সোফিয়ার ভাগ্নে আবুল হোসেন জানান, ভাই খালাকে ফেরত পাবো কিনা তাতো জানি না। এখন ওই চিকিৎসকের বিচার চাই আমরা সরকারের কাছে যাতে এমন যন্ত্রনা আর কাউকে ভূগতে না হয়।

এই ব্যাপারে সোফিয়ার পেট থেকে গজ ব্যান্ডেজ বের করা চিকিৎসক মো. ফজলুল হক শোভন জানান, রোগীকে যখন আনা হয় তখনই তার পেট থেকে পুজ আর বিকট দুর্ঘন্ধ বের হচ্ছিল। ৬ মাস আগে রোগীর সিজার করা হয়েছিল মাদারীপুরের নিরাময় ক্লিনিকে। পরে আবারো সেলাই ওপেন করা হয়েছিল, ওরা নাকি বলেছিল পেটে টিউমার এর কথা। কিন্ত আমরা টিউমার জাতীয় কিছু পাই নি।

পরে রোগীর স্বজনদের সাথে আলোচনা করে আমরা অস্ত্রপচারের সিদ্ধান্ত নেই। অস্ত্রপচারে পেটের ভেতরে থেকে বড় একটি মব (অপারেশনের সময় ব্যাবহিৃত গজ ব্যান্ডেজ) বের করেছি।

তিনি আরও জানান, রোগীর অবস্থা এখন খুবই ক্রিটিক্যাল। অন্তত ৩ দিন না যাওয়া পর্যন্ত কিছুই বলা যাবে না।

ঢাকাটাইমস/১৬মার্চ/ওআর

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
হবিগঞ্জে ট্রাক-মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে নিহত ২
শুরুতেই তিন উইকেট হারিয়ে চাপে লঙ্কানরা
টস হেরে বোলিংয়ে বাংলাদেশ
৫ আগস্ট ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’, সাধারণ ছুটি ঘোষণা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা