বাইক চুরি ঠেকাবে মিলিটারি গ্রেডের ট্যাসলক কার্বন

তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৮ আগস্ট ২০১৯, ১৫:২৪
অ- অ+

মোটর বাইকের নিরাপত্তায় সাধারণত অতিরিক্ত তালা ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর পাশাপাশি ডিজিটাল লক হিসেবে সিকিউরিটি ডিভাইসেরও জনপ্রিয়তা বেড়েছে। বাজারে বিভিন্ন ধরনের সিকিউরিটি লক পাওয়া যায়। এই লকগুলোর মধ্যে সব লক মোটর বাইকের নিরাপক্ষা দিতে সক্ষম নয়। বাজারে রয়েছে এমন একটি রিমোট ডিভাইস যা মোটর বাইকের শতভাগ নিরাপত্তা প্রদান করতে সক্ষম। নতুন এই সিকিউরিটি ডিভাইসের নাম ট্যাসলক কার্বন এডিশন। এটি ট্যাসলকের চতুর্থতম ভার্সন।

আগের তিনটি ভার্সনের তুমুল জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর বাজারে আসে ট্যাসলক কার্বন এডিশন। এই এডিশনে মোটর বাইক লক করার জন্য আলাদা কোন সুইচ চাপতে হয় না। মোটর বাইকের চাবি বন্ধ করে তিন সেকেন্ড পার হলে মোটর বাইকটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে লক হয়ে যায়। রিমোটসহ কার্বন এডিশনযুক্ত বাইকটির কাছে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে লক খুলে যাবে। এছাড়াও রিমোট ডিভাইসটির মাধ্যমে ম্যানুয়াল লক করার অপশন রয়েছে।

দেশের বাজারে ট্যাসলক আমদানি করে ‘দুই চাকা অটো’। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাদভী রেজা বলেন, প্রতিনিয়ত আমরা লকের আপগ্রেড করার জন্য গবেষণা করি। আমাদের মিলিটারি গ্রেডের এই সিকিউরিটি লকগুলো নিরাপত্তায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী। কোনভাবেই এই ডিভাইস হ্যাক করা সম্ভব নয়। বাইকের কোন সংযোগ না কেটে এই লকটি ইন্সটল করা যায়। ২০ তলা বা সোজাসুজি দুরত্বে প্রায় ৩০০-৫০০ মিটার দুর থেকেও এই রিমোট ডিভাইসটি দিয়ে মোটর বাইক লক বা আনলক করা যায়। রিমোট লক করে বাইক থেকে অনেক দুরে থাকলেও সিকিউরিটি ডিভাইসটি সবসময় কার্যকর থাকে। বাইকের চাবি ছাড়া কার্বন এডিশনের রিমোট দিয়ে মোটর বাইক চালানো যায়। এছাড়াও এই ডিভাইসটিতে ৩৭টি ফিচার রয়েছে।

ট্যাসলক কার্বন এডিশনের প্যাকেজে দুইটি রিমোট থাকে। একটি রিমোট সেন্সর হিসেবে কাজ করলেও অন্যটি শুধুমাত্র ব্যাকআপ রিমোট। এই সিকিউরিটি ডিভাইস থাকলে বাইক ডাকাত বা ছিনতাইকারীর হাতে পরলেও হারানোর ভয় নেই বলে দাবি করেন রাদভী রেজা।

মোটর বাইক মালিকের হাতে যে রিমোট ডিভাইসটি থাকবে, সেটি ভাইব্রেশন অপশন সমৃদ্ধ। বাহনে অনাকাঙ্খিত কোন স্পর্শ এলে অ্যালার্ম এবং ভাইব্রেশনের মাধ্যমে জানার অপশন রয়েছে। যেখানে অনেক বাইক বা গাড়ি থাকে, সেসব স্থানে নিজের বাইক বা গাড়ি খুঁজে পাওয়ার জন্য ফাইন্ডার অপশন রয়েছে। এই ডিভাইসটিতে সাইলেন্ট মোড রয়েছে। ফলে বাহন লক রেখে মিটিং বা নামাজে থাকলে রিমোট ডিভাইসে অ্যালার্ম বা ভাইব্রেশন বন্ধ রাখা যায়। তবে বাইকের অ্যালার্ম কার্যকর থাকবে।

কার্বন এডিশনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এটি শতভাগ অ্যান্টি জ্যামার প্রযুক্তি সমৃদ্ধ। তাই কোনভাবেই এটি হ্যাক করা সম্ভব নয়। এতে রয়েছে সেফটি ফিউজ। সিকিউরিটি ডিভাইসকে গাড়ি থেকে আলাদা করে ফেললেও অ্যালার্ম বন্ধ বা বাইক চালু হবে না। বাইক বা গাড়ির ব্যাটারি অকেজো করে দিলেও এই ডিভাইস নিজস্ব ব্যাটারি ব্যাকআপে সক্রিয় থাকবে। কার্বন এডিশনের শব্দ নিয়ন্ত্রণের জন্য পাঁচটি ধাপ রয়েছে। এর মাধ্যমে সাউন্ডের মাত্রা কতটুকু থাকবে তা নির্ধারণ করা যায়। কার্বন এডিশনের মাধ্যমে বাইক লক থাকা অবস্থায় কেউ স্পর্শ বা চুরি করার চেষ্টা করলে সর্বোচ্চ ১২৫ ডেসিবেল পর্যন্ত অ্যালার্ম বাজবে। লক করার পর সিকিউরিটি ডিভাইসের রিমোট ছাড়া মোটর বাইকের আসল চাবি দিয়েও মোটর বাইক চালু করা যাবে না। এমনকি বাইক থেকে সিকিউরিটি ডিভাইসটি লক অবস্থায় খুলে ফেললেও মোটর বাইক স্টার্ট হবে না। এই ডিভাইসটি সহজেই বাইকে ইন্সটল করা যায়।

ট্যাসলক কার্বন এডিশনের মূল ডিভাইসটি পানি এবং ধুলো নিরোধক। আর রিমোট ডিভাইসটি ধুলো নিরোধক। যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার আদলে রিমোট ডিভাইসটির ডিজাইন করা হয়েছে। সিকিউরিটি ডিভাইস মোটর বাইকের ব্যাটারির উপর বিরুপ প্রভাব ফেলে বলে যে আশঙ্কা করা হয়, ট্যাসলক কার্বন এডিশন এই শঙ্কা থেকে পুরোপুরি মুক্ত। কার্বন এডিশনের ট্যাসলকটিতে গাড়ির ব্যাটারির ব্যবহার শুন্য শতাংশ। এই ডিভাইসটির সকল তারে সিলভারের প্রলেপ দেয়া আছে। ফলে পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।

দুই চাকা অটোর স্বত্ত্বাধিকারী রাদভি রেজা বলেন, তাইওয়ান থেকে এই ডিভাইসগুলো আমদানি করে দেশে মডিফাই করা হয়। তাই কোনভাবেই বাজারের সাধারণ সিকিউরিটি ডিভাইসের সঙ্গে এই ডিভাইসকে মেলানোর সুযোগ নেই। চীনে আমাদের নিজস্ব অ্যাসেম্বল প্লান্ট রয়েছে। দেশের গন্ডি পেরিয়ে ট্যাসলক ভারত এবং ফিলিপাইনে রপ্তানি হচ্ছে। এই ডিভাইসের সঙ্গে জিপিএস লক ডিভাইস সংযুক্ত করে পৃথিবীর যেকোন জায়গা থেকে বাইক বা গাড়ি লক বা আনলক করা সম্ভব। এছাড়া বাহনের গতিবিধির উপর নজরদারীরও সুযোগ মিলবে কোন প্রকার মাসিক চার্জ ছাড়াই।

দুই চাকা অটো ট্যাসলক কার্বনের মাধ্যমে বাইকের নিরাপত্তায় শতভাগ নিশ্চয়তা প্রদান করছে। সারা পৃথিবীতে এই সিকিউরিটি ডিভাইসকে সবচেয়ে শক্তিশালী বলে ঘোষণা দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। কেউ যদি মোটর বাইকে এর চেয়ে শক্তিশালি ডিভাইস আছে বলে প্রমাণ করতে পারেন তার জন্য এই লকটি বিনামূল্যে পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

ট্যাসলক কার্বন এডিশনের মূল্য ২৯৯৯ টাকা। ১ বছরের বিক্রয়োত্তর সেবাসহ ডিভাইসটি সারা দেশে ট্যাসলকের ডিলারদের কাছে পাওয়া যাচ্ছে। ট্যাসলক ডিভাইস হোম ডেলিভারি নেয়ার অপশনও রয়েছে।

দুই চাকা অটো ট্যাসলক সিকিউরিটি ডিভাইস ছাড়াও জিপিএস ট্র্যাকার, হোম এবং শপ সিকিউরিটি, টায়ার সিলার এবং আই ট্র্যাক সেন্সরসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি পণ্য আমদানি এবং বাজারজাত করে থাকে। ট্যাসলক বিক্রির লাভের একটি অংশ পথশিশুদের শিক্ষা, খাদ্য, শীতবস্ত্র বিতরণ, বৃদ্ধাশ্রম এবং মসজিদ নির্মাণের কাজে ব্যয় করে দুই চাকা অটো।

(ঢাকাটাইমস/৮আগস্ট/এজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি আজ সরাসরি সম্প্রচার
১৮ জুলাই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিরোধ দিবস
‘জুলাই বললে লাল হয়ে যায় স্মৃতি’: প্রেস সচিব শফিকুল আলম শেয়ার করলেন নিউটনের কবিতা দিয়ে
শহীদের রক্ত, বিপ্লব সমুন্নত হোক: আসিফ মাহমুদ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা