প্রত্যাবাসনের উপায় খুঁজতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চীনা রাষ্ট্রদূত

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৯:৫২| আপডেট : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৯:৫৯
অ- অ+

গণহত্যা ও নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিককে নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে তৎপর হয়েছে এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী দেশ চীন। দুই দফা ব্যর্থ হওয়ার পর দেশটির তৎপরতায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে আশার আলো দেখছে বাংলাদেশও।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের উপায় খুঁজতে সরেজমিনে ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। তিনি সোমবার কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য প্রস্তুতকৃত কেরুনতলী ঘাট পরিদর্শন করেন। তার সঙ্গে আরও সাত সদস্য ছিলেন।

এর আগে টেকনাফের শালবাগান ২৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সিআইসি কার্যালয়ে ২০ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষের সঙ্গে বৈঠকে করেন লি জিমিং।

মিয়ানমারে ফিরে যেতে কী সমস্যা- লি জিমিংয়ের এমন প্রশ্নের জবাবে রোহিঙ্গারা বলেন, মিয়ানমারে এখনো রোহিঙ্গাদের জন্য শান্তির পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। সেদেশে বিবদমান গ্রুপের মধ্যে সংঘাত লেগে আছে। এখনো যেসব রোহিঙ্গা সেদেশে রয়েছে তাদের ওপর নির্যাতন চলছে। তাছাড়া গত ২০১২ সালে আকিয়াবে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে কয়েক মাসের জন্য একটি জায়গায় জড়ো করে রাখলেও এখনো পর্যন্ত একই অবস্থায় রয়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে আমরা কীভাবে মিয়ানমার যাব।

কী করলে মিয়ানমারে যাবেন-এমন প্রশ্নের উত্তরে এই শিবিরের রোহিঙ্গা নেতা আবুল ফয়েজ, গুরা মিয়া ও মো. জসীম বলেন, আমাদের তিনটি দাবি পূরণ করলে আগামীকালই নিজ দেশে চলে যাব। দাবিগুলো হলো মিয়ানমারের নাগরিকত্ব, এনআইডি কার্ড, হারানো ভিটে-বাড়ি ফেরত দেয়া এবং জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে মিয়ানমারের পরিস্থিতি দেখতে রোহিঙ্গাদের একটি গ্রুপ পাঠালে যাবেন কি না-লি জিমিংয়ে এমন প্রশ্নের জবাবে রোহিঙ্গারা যাবেন বলে সম্মতি দেয়। তিনি রোহিঙ্গাদের জন্য দুটি পদ্ধতি বলেন, একটি হলো রোহিঙ্গাদের গ্রুপের জন্য জনপ্রতি দুটি মোবাইল সেট দেওয়া হবে। একটি নিজের, অন্যটি পরিবারের জন্য। মিয়ানমারের পরিস্থিতি ভালো হলে, মোবাইলে পরিবারকে ভালো আছি বলে খবর দিলে নিয়ে যাবেন। আরেকটি হলো, একটি গ্রুপ মিয়ানমারে গিয়ে অবস্থা দেখে চলে আসবেন, যদি সেখানের অবস্থা ভালো হয় পরিবার নিয়ে যেতে পারবেন।

এদিকে মতামত শেষে শালবন শিবিরের অশ্রিত রোহিঙ্গাদের তিনটি বাসায় যান। তাদের বাসা দেখেন, পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন এবং কিছু স্কুল ব্যাগ ও ফুটবল তুলে দেন। শেষে একই দিন সকাল ১০টার দিকে চীনের রাষ্ট্রদূত টেকনাফের কেরুনতলী ট্রানজিট ঘাট পরির্দশন করেন।

প্রসঙ্গত, গত ১ থেকে ৬ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরের সময় দেশটির সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সহায়তার আশ্বাসও মেলে। রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমিতে ফেরানোর পরিবেশ তৈরিতে চীন মিয়ানমারকে রাজি করানোর পদক্ষেপ নেবে বলে শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং। সম্প্রতি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দলও সফর করেছে চীনে। তারা সেখানে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে বিভিন্ন বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সহযোগিতা চেয়েছে। এরপর থেকেই চীনের তৎপরতা বেড়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৬সেপ্টেম্বর/জেবি)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
গোলাম দস্তগীর পরিবারের ৩০ কোটি টাকার সম্পদ জব্দের আদেশ
সিটি কলেজে অনিয়ম তদন্তে ‘বাধা দিতেই’ কিচ্ছা-কাহিনী নির্ভর সংবাদ সম্মেলন, নেওয়া হবে ব্যবস্থা
ফিরে দেখা ৯ জুলাই: দেশজুড়ে সকাল-সন্ধ্যা ‘বাংলা ব্লকেড’ ঘোষণা
ফেনীতে বন্যার অশঙ্কায় ১৩১ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা