যেসব খাবারে ক্যানসার ডেকে আনে
ক্যানসারের নাম শুনলেই আমরা আঁতকে উঠি। জীবননাশ করে এই ক্যানসার নামক রোগটি। কিন্তু এই মরণব্যাধি রোগটির জন্য আমরাই দায়ী। অবচেতন ও অসচেতনভাবে নানা প্রকারে ক্যানসার ডেকে আনছি। বিশেষ করে খাবার গ্রহণের মাধ্যমে। কীভাবে খাবারের মাধ্যমে ক্যানসার সৃষ্টি হয় ও কীভাবে ভালো থাকা যায় সেকথা জানিয়েছেন পুষ্টিবিদ রুবাইয়া পারভিন রীতি।
চিনি: ক্যানসারের জন্য পরম বন্ধু চিনি। সুতরাং খাবার তালিকা থেকে অবশ্যই চিনি পরিহার করতে হবে। প্রতিদিন যখন একটু একটু করে চিনি খাওয়া হয় তখন দেহের যে ক্ষতিকর উপাদান আছে সেটি চিনির সঙ্গে মিশে গিয়ে টিউমার হচ্ছে। সেখানে থেকে ক্যানসার কোষের সৃষ্টি হয়। সুতরাং চিনি ভয়াবহ ক্ষতিকারক। এজন্য চিনি যত কম খাওয়া যায় ততই ভালো। চিনির জন্য রিংকেল হয়। তারুণ্য চলে যায়। অল্প বয়সে বৃদ্ধ দেখায় চিনি খাওয়ার ফলে। এছাড়া যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য চরম ক্ষতিকর।
লবন: লবনে সোডিয়াম আছে একথা আমরা সবাই জানি। অনেক লবনে পটাশিয়ামও আছে। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় অতিরিক্ত লবন গ্রহণের ফলে মারাত্বক ক্ষতি হয়ে পারে। যেমন ক্যানসার। ক্যানসারের জন্যও লবন এক প্রকারের বন্ধু। লবন অতিমাত্রায় কখনো খাওয়া যাবে না। অনেকে আছেন খাবারে কাঁচা লবন খান। তরকারিতে বেশি লবন দেন। এটি খুব বেশি ক্ষতিকারক। এটি একদিকে যেমন ওজন বাড়িয়ে দেয় অন্যদিকে ক্যানসারকেও ডেকে আনে।
বাইরের খাবার: অনেকেই আছেন যারা বাইরের তেলে ভাঁজা খাবার। বারবিকিউ দেখে লোভ সামলাতে পারেন না। স্কুল কলেজের বন্ধুরা মিলে রেস্টুরেন্টে বিকেলে এইসব তেলে ভাজা খাবার খুব আয়েশের সঙ্গে খেয়ে থাকেন। অফিসে যারা জব করেন অথবা বাইরে যারা বিভিন্ন কাজ করেন তারা সবাই এসব খেয়ে থাকেন নিশ্চিন্তায়। এই খাবারগুলো শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকারক। এইসব খাবার প্রথমত পাকস্থলীতে গিয়ে আক্রমণ করে। তারপর লিভারে সমস্যা করে। পরে আস্তে ধীরে ক্যানসারের দিকে নিয়ে যায়। সুতরাং বাইরের খাবার সম্পুর্ণভাবে পরিহার করতে হবে।
রান্নার তেল: ঘরের রান্না করা তেলও মারাত্বক ক্ষতি করছে নিরবে। যেমন রোজার মাসে যারা খুব বেশি ভাজাপোড়া খেতে পছন্দ করে। তেলে ভাঁজা পিঠা, ফুলকপির চপ, বেগুনি, পেয়াজু ইত্যাদি। এখানে সমস্যা হলো- প্রথম দিনে ডুবো তেলে ভেজে খাওয়ার পর ওই তেল রয়ে যায়। সেই তেল দিয়ে যখন পরের দিন ভাঁজা হবে তখনই সর্বনাশ। এই তেল তখন ট্রান্সফ্যাটে পরিণত হয়। এটি তখন অনায়েশে শরীরে ক্যানসার ডেকে আনে। সুতরাং এক তেল দ্বিতীয় দিন ব্যবহার করা যাবে না।
প্রক্রিয়াজাত খাবার: খুব মজা লাগে প্রক্রিয়াজাত বাইরের প্যাকেট করা খাবার। বাজার থেকে কিনে এনে কোনো রকম রান্না করে বা গরম করেই খেয়ে নেওয়া যায়। এটি কিন্তু চরম ক্ষতিকর। টেস্টিং সল্ট। এটি চরম ক্ষতিকর। আর্টিফিশিয়াল সুগার। এটিও খুব ক্ষতিকর। কারণ এর মধ্যে স্যাকারিন থাকে। এটি শরীরের জন্য কখনই ভালো নয়। অনেকে ভাবতেই পারেন এতে ক্যালরি নেই। বিশেষ ক্রে ডায়াবেটিসের রোগীরা খেতে পারে। কিন্তু এটি খুবই ক্ষতিকর।
গুড়া দুধ: অনেকে গুড়া দুধ খান। পাস্তুরিত দুধ। এগুলো যতটা সম্ভব পরিহার করতে হবে। এটিও স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। আর যারা ক্যানসারের রোগী তারা কখনই পাস্তুরিত দুধ খাবেন না। প্রাকৃতিক খাবার ছাড়া কোনো প্যাকেটজাত খাবার খাবেন না।
দুধ চা: ক্যানসারের পরম ও চরম বন্ধু দুধ চা। দুধ চা বাঙ্গালির খুব পছন্দের পানীয়। কেন দুধ চা এতো ক্ষতিকারক? কারণ দুধে যে ক্যাজিন প্রোটিন আছে আর চায়ের ক্যাটেসিন এ্যন্টি অক্সিডেন্ট দুইটা যখন একসাথে মিশে যায় তখন টক্সিন সৃষ্টি করে। এটি শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকারক। এটি যখন আমাদের দেহে আসে তখন ক্যানসার তৈরি করে। সুতরাং এগুলো বাদ দিতে হবে।
কোল্ড ড্রিংস: অনেকেই আছেন কোল্ড ড্রিংস খেতে পছন্দ করেন। কোল্ড ড্রিংস বা বাইরে যে জুস পাওয়া যায়। এগুলো পান করা বাদ দিতে হবে।
ফুড কালার: যারা খাবারের মধ্যে প্রচুর ফুড কালার দেন। বিশেষ করে বাচ্চাদের ভালো লাগানোর জন্য। আকর্ষণ করার জন্য দিয়ে থাকেন। এই ফুড কালার থেকে দূরে থাকতে হবে। যতটা সম্ভব প্রাকৃতিক খাবার, বাসার খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করতে হবে।
ঢাকাটাইমস/৯এপ্রিল/এসকেএস