উপবৃত্তির সঙ্গে শিক্ষার্থীরা পাচ্ছে জামা-জুতা-ব্যাগ
দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা টানা ছয় মাসের বকেয়া উপবৃত্তির অর্থ হাতে পেতে যাচ্ছে। এর পাশাপাশি পাচ্ছে জামা, জুতা ও ব্যাগ। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে ইতিমধ্যে এ অর্থ ছাড়ের আদেশ দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রদান প্রকল্পের (তৃতীয় পর্যায়) পরিচালক যুগ্মসচিব মো. ইউসুফ আলী এ কথা জানিয়ে সারাদেশের সব উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে পত্র দিয়েছেন। সেখানে তিনি আগামী ১৪ মে’র মধ্যে উপবৃত্তির তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তির অর্থ বিতরণের জন্য সুবিধাভোগীর তালিকা রুপালী ব্যাংকের শিওর ক্যাশের পোর্টালে আপলোডের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের নির্দেশ দিয়েছেন।
চিঠিতে বলা হয়, সদাশয় সরকার রমজানের ঈদের আগেই উপবৃত্তির অর্থ সুবিধাভোগীদের মোবাইলে পাঠাতে চায়। ১৪ মে’র মধ্যে উপবৃত্তির সুবিধাভোগীর তালিকা রূপালী ব্যাংকের শিওর ক্যাশের পোর্টালে আপলোডে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট উপজেলা শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রকল্প পরিচালকের এ চিঠিতে আরও জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুসারে, এ প্রকল্পের আওতায় শিক্ষার্থীদের জামা, জুতা ও ব্যাগ কেনার জন্য এক হাজার টাকা করে কিট অ্যালাউন্সও একইসঙ্গে দেয়া হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রতি কিস্তিতে তিন মাসের অর্থ একসাথে দেয়া হয়। এবার ছয় মাস বকেয়া থাকায় ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তির টাকা একসঙ্গে দেয়া হচ্ছে।
প্রকল্পের মেয়াদ গত ডিসেম্বরে শেষ হয়ে যায়। সারাদেশের প্রাথমিক শিক্ষার্থীরা গত অক্টোবর থেকে উপবৃত্তির অর্থ থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপে শিক্ষার্থীরা এবার এই অর্থ পাচ্ছে। করোনার এই দুর্দিনে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির অর্থ পাওয়ার সুবিধার জন্য গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্পের মেয়াদ আগামী জুন মাস পর্যন্ত বাড়িয়েছেন।
এই উপবৃত্তি চালু হয়েছিল সব শিশুকে বিদ্যালয়ে নিয়ে আসা ও তাদের ঝরে পড়া রোধের জন্য। এছাড়াও জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে নতুন জামা, ব্যাগ ও জুতা কেনার জন্য শিক্ষার্থী প্রতি ৫০০ টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত জানুয়ারিতে এই ঘোষণা দেয়া হয়। এ অর্থ ছাত্রছাত্রীরা পায়নি এতদিন। এখন তা বাড়িয়ে এক হাজার টাকা নির্ধারণ করে অর্থ ছাড় করা হলো।
এদিকে দেশের ৬৬ হাজার ৬২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক কোটি ৩৩ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদের সবাই সরকারের দেয়া উপবৃত্তি পেয়ে থাকে। তারা সর্বশেষ উপবৃত্তির অর্থ হাতে পেয়েছে গত বছরের সেপ্টেম্বরে। এরপর আর কোনো টাকা হাতে না পাওয়ায় এখন সেই প্রাপ্য টাকা পেয়ে বিশ্বব্যাপী করোনার কারণে দেশেও যে চরম আর্থিক টানাপড়েনে রয়েছে শিক্ষার্থী-অভিভাবকেরা এই টাকা তাদের জন্য খুবই উপকারে আসবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
(ঢাকাটাইমস/০৫মে/টিএটি/জেবি)