আপত্তিকর অবস্থায় দেখে বাবা-ভাই মিলে কিশোরীকে হত্যা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ৩০ জুন ২০২০, ২০:৩০ | প্রকাশিত : ৩০ জুন ২০২০, ২০:১৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার ধরমন্ডলে লাইজু আক্তার(১৬) নামে এক কিশোরীর হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী বাবা সনু মিয়া, ভাই আদম আলী ও মামা মাজু মিয়া লাইজুকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পাটক্ষেতে একজনের সঙ্গে লাইজুকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখার কারণে এই হত্যার পরিকল্পনা হয়। জেলা পুলিশ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

দ্রুত এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উম্মোচন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা। তাকে সহযোগিতা করেন নাসিরনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কবির হোসেন ও এসআই জুলুস খান পাঠান।

ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গত রবিবার নিহতের মামা মাজু মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তখন হত্যার দায় স্বীকার করেন তিনি। তার দেয়া তথ্য মতে সোমবার বাবা সনু মিয়াকে ধরমন্ডল লম্বাহাটি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা আহমেদের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন মামা মাজু মিয়া।

এদিকে মঙ্গলবার ভোর রাতে ভাই আদম আলীকে ধরমন্ডল লম্বাহাটি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ভাই আদম আলীও।

পুলিশের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, লাইজু তার মামা মাজু মিয়ার বাড়িতে থাকতো। গত ২২ জুন লাইজুকে বাড়ির পাশে পাটক্ষেতে একজনের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখেন মাজু মিয়া। বিষয়টি লাইজুর বাবা সনু মিয়া ও মা সাফিয়া আক্তারকে জানান মামা মাজু। এ ঘটনায় সনু মিয়া ক্ষিপ্ত হন। পরদিন (২৩ জুন) সকালে ঘরে বসে বাবা সনু মিয়া ও মামা মাজু মিয়া লাইজুকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই দিন রাত সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে লাইজুর বাবা সনু মিয়া মেয়েকে ঘর থেকে ডেকে বাইরে নিয়ে যান। এরপর লাইজুকে তার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন বাবা সনু ও মামা মাজু। বাবা ও মামার সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে যোগ দেন লাইজুর ভাই আদম আলী। পরে তারা তিনজন মিলে লাইজুর মরদেহ স্থানীয় একটি ডোবায় ফেলে দেন।

নাসিরনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কবির হোসেন বলেন, আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন ভাই আদম আলী ও মামা মাজু। এর আগে শনিবার (২৭ জুন) সকালে লম্বাহাটি এলাকার একটি ডোবা থেকে লাইজুর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

লাইজুর মরদেহ উদ্ধারের পর পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা করার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু প্রথমে পরিবারের কেউ মামলা করতে রাজি হয়নি। পরে হত্যার ঘটনায় কিশোরীর মা সাফিয়া আক্তার অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, লাইজুর জন্য পরিবারের কারো কোনো শোকও ছিল না। এসব বিষয়ে আমাদের সন্দেহ তীব্র হয় তাদের প্রতি। মূলত মামাকে টাগের্ট করা হয়। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বাবা ও ভাইয়ের সম্পৃক্তার কথা বেরিয়ে আসে।

(ঢাকাটাইমস/৩০জুন/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :