ঠাকুরগাঁওয়ে পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত

বদরুল ইসলাম বিপ্লব, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২০, ১৫:২০ | প্রকাশিত : ২৭ জুলাই ২০২০, ১৪:৪৫

স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশুর হাটে কেনা-বেচার সরকারি নির্দেশনা থাকলেও ঠাকুরগাঁও জেলার হাটবাজারগুলোতে পশুরহাটে স্বাস্থ্যবিধি চরমভাবে উপেক্ষিত হয়েছে। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সামাজিক দূরত্ব মেনে ও মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। এতে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আর মাত্র পাঁচ দিন পরই পবিত্র ঈদুল আজহা। এ উপলক্ষে পশু কোরবানি দেয়ার জন্য ক্রেতা- বিক্রেতারা ভিড় করছেন জেলার পশুর হাটগুলোতে। করোনার সংক্রমণ রোধে সরকার পশুর হাটে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশনা জারি করেছেন।

কিন্তু ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার ঐতিহ্যবাহী নেকমরদ হাটে রবিবার দেখা গেছে সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র। হাটে আগত বেশিরভাগ ক্রেতা-বিক্রেতার মুখে মাস্ক ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। একইভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে হাটুরেদের কেনাবেচা করার নির্দেশনা উপেক্ষিত হয়েছে। নির্ধারিত দূরত্ব বজায় রাখা তো দূরের কথা অনেককে গা ঘেঁষে কেনা-বেচা করতে দেখা গেছে।

উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে চলা হাটে পশুর কেনাবেচা ও রসিদ করতে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এখানে কোনো ইজারাদার না থাকায় উপজেলা প্রশাসনের নিয়োজিত কর্মচারীরা ইজারাদারের কাজ করে আসছেন।

হাটের মূল ফটকে গবাদিপশুসহ বিভিন্ন পণ্যের টোলের হার উল্লেখ করে একটি বিশাল সাইনবোর্ড বাঁশ দিয়ে সাটানো হলেও আদায়কৃত টোলের সঙ্গে সাইনবোর্ডের টোলের কোনো মিল নেই।

কোরবানির পশুরহাট উপলক্ষে রবিবার বিপুল সংখ্যক গরু-ছাগলের আমদানি হয়। ক্রেতা-বিক্রেতাদেরও প্রচন্ড ভিড় পরিলক্ষিত হয় । সবাই যেন ব্যর্থ। কেউ গরু কেউবা ছাগল কিনতে ছুটছেন ভিড় ঠেলে।

একাধিক ক্রেতা অভিযোগ করে বলেন, নির্ধারিত দামের চেয়ে টোল বেশি আদায় করা হচ্ছে। হাটগাঁও গ্রামের সুমন পাটেয়ারী কোরবানি দেয়ার জন্য গরু কিনতে হাটে আসেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, একটি গরু কিনে টোল গুনতে হলো ৩২০ টাকা। অথচ হাটের প্রবেশ মুখে সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে ২৩০ টাকা। একইভাবে আনিসুল হক নামে একজন ছাগল ক্রেতা বলেন, সাইনবোর্ডে একটি ছাগলের মাসুল টানানো হয়েছে ৯০ টাকা আর আদায় করা হচ্ছে ১৫০ টাকা হারে।

সাবেক ছাত্রনেতা রুকুনুল ইসলাম ডলার বলেন, হাটের বেশিরভাগ ক্রেতা-বিক্রেতার মুখে মাস্ক নেই। এখানে এসে দেখছি দেশে যে কোভিড-১৯ নামে একটি রোগ রয়েছে তা যেন দেশ থেকে উঠে গেছে।

স্কুল শিক্ষক আনিসুর রহমান বলেন, এভাবে গরুর হাট বসিয়ে এলাকাকে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির দিকে ফেলে দেয়া হচ্ছে। অথচ আইন প্রয়োগের জন্য কাউকে পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় করোনা ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে।

এ ব্যাপারে রানীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ফিরোজ আলম বলেন, মুখে মাস্ক ব্যবহার এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে হাটে কেনাবেচা করতে হবে। নাহলে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাছাড়াও বিপুল মানুষের জনসমাগমে কোভিড-১৯ ছড়ানোর আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি ।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী আফরিদার ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, বাংলা ১৪২৭ সনে জেলার নেকমরদ হাট ইজারা দেয়া নিয়ে আইনগত জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় বর্তমানে উপজেলা হাট-বাজার ইজারা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের তত্ত্বাবধানে চলছে নেকমরদ হাট।

(ঢাকাটাইমস/২৭জুলাই/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :