ড্রাগন ফল খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৩ আগস্ট ২০২০, ১১:১১| আপডেট : ২৩ আগস্ট ২০২০, ১৯:০৭
অ- অ+

ড্রাগন ফলের উদ্ভিদতাত্বিক নাম হায়লোসেরিয়াস আনডেটাস। এই ফল মূলত সেন্ট্রাল আমেরিকার প্রসিদ্ধ একটা ফল। সেন্ট্রাল আমেরিকাতে এ ফলটি ত্রয়োদশ শতাব্দীতে প্রবর্তন করা হয়। দক্ষিণ এশিয়া বিশেষ করে মালয়েশিয়াতে এ ফলের প্রবর্তন করা হয় বিংশ শতাব্দীর শেষে। তবে ভিয়েতনামে এ ফল সর্বাধিক বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয়। বর্তমানে এ ফলটি দক্ষিণ আমেরিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ চীন, মেক্সিকো, ইসরাইল, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ বাংলাদেশেও চাষ করা হচ্ছে।

ড্রাগন নামটা শুনলেই যেন ড্রাগনের কথা মনে পড়ে। এই ফলের বাইরের খোসা দেখতে রূপকথার ড্রাগনের পিঠের মতো। এই রূপকথার ড্রাগনের মতো কিছুটা মিল থাকার জন্য একে ড্রাগন ফল বলে।

ড্রাগন গাছ দেখতে একদম ক্যাকটাসের মতো। গাছ দেখে অনেকেই একে চির সবুজ ক্যাকটাস বলেই মনে করেন। এশিয়ার মানুষের কাছে এ ফল অনেক জনপ্রিয়, হালকা মিষ্টি-মিষ্টি। এই ফলের খোসা নরম এটা কাটলে ভিতরটা দেখতে লাল বা সাদা রঙের হয়ে থাকে এবং ফলের মধ্যে কালজিরার মতো ছোট ছোট নরম বীজ আছে। নরম শাঁস ও মিষ্ট গন্ধ যুক্ত গোলাপি বর্ণের এই ফল খেতে অনেক সুস্বাদু। গাছ ১.৫ থেকে ২.৫ মিটার লম্বা হয়।

পুষ্টিবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে ড্রাগন ফলের উপর প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, এতে ক্যালোরির পরিমাণ কম থাকে বলে ‘ডায়েট’ করার সময় এটি খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যায়। ড্রাগন ফলের স্বাদ ও পুষ্টিগুণ ঠিক রাখার জন্য সাধারণত এটি কাঁচা অবস্থাতেই খাওয়া হয়।

প্রতি ১০০ গ্রাম ড্রাগন ফলের সাদা বা লাল অংশে ২১ মি.গ্রা. ভিটামিন সি পাওয়া যায় যা দৈনিক ভিটামিন সি’র চাহিদার ৩৪ শতাংশ পূরণ করতে সাহায্য করে। প্রতি ১০০ গ্রাম ড্রাগন ফলে ৩ গ্রাম আঁশ থাকে যা দৈনিক চাহিদার ১২ শতাংশ। ড্রাগন ফলের আঁশ কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিকারক হিসেবে কাজ করে। এই ফলের কালো বীজে থাকে ল্যাক্সেটিভ ও পলিআনস্যাচুরেইটেড ফ্যাটি অ্যাসিড যা হজমে সাহায্য করে ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধের সহায়ক।

প্রতি ১০০ গ্রাম ড্রাগন ফলে জলীয় শতাংশ থাকে ৮৭ গ্রাম, প্রোটিন ১.১ গ্রাম, ফ্যাট ০.৪ গ্রাম (বলতে গেলে ফ্যাট নাই) এবং কার্বোহাইড্রেট ১১.০ গ্রাম। ভিটামিন বি, আয়রণ, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ছাড়াও এতে বেশ কিছু ভিটামিন ও খনিজ উপদান থাকে যা মানবদেহের সুস্থতার জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।

রোগ প্রতিরোধের সমস্ত ক্ষমতাই রয়েছে এই ড্রাগন ফলে। বিশেষত প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে এই ড্রাগন ফলে। এই ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক থাকে। নিয়মিত এই ফলটি খেলে আপনার শরীর স্বাস্থ্য ভাল থাকবে।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধে

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্যানসার থেকে ডায়াবেটিস প্রতিরোধে খুবই কার্যকরী এই ফল। গর্ভবতী মায়েরাও খেতে পারেন সুস্বাদু এই ড্রাগন ফল।

ক্যানসার প্রতিরোধে

ড্রাগন ফল ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে। এই ফলে ক্যারোটিন নামক উপাদান রয়েছে, যা শরীরে থাকা টিউমারকে ধ্বংস করে।

হজমে সহায়ক

প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ড্রাগন ফল রাখুন। ড্রাগন ফলে আঁশের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে, যার ফলে পরিপাক প্রক্রিয়া ঠিক ভাবে কাজ করে। যা বদহজমেও কার্যকরী।

হার্ট ভাল রাখে

খারাপ কোলেস্টেরল কমানোর মাধ্যমে হৃদযন্ত্র ভাল রাখে এই ফল। ড্রাগন ফল খেলে উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে।

ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক

ড্রাগন ফল ভিটামিন সি দ্বারা সমৃদ্ধ। করোনা পরিস্থিতিতে কিন্তু শরীরে ভিটামিন সি এর দাপট খাকা প্রয়োজন। এই ফলটি আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করতে পারে। রোগজীবাণুকে হত্যা করতে সহায়তা করবে। আপনার দেহে শ্বেত রক্ত কোণিকার সংখ্যা বাড়াবে। কেবল এতেই শেষ নয়, এটি ওজন বজায় রাখতে বা হ্রাস করতেও সহায়তা করতে পারে। কারণ ৮০ শতাংশই জল। ড্রাগন এমন একটি ফল যা প্রচুর পরিমাণে ফাইবার সমৃদ্ধ, যা নিশ্চিত ভাবে আপনার অন্ত্রের গতিবিধিকেও নিয়ন্ত্রণ করবে।

বয়সের ছাপ দূর করতে

বয়সের ছাপ দূর করতে ত্বককে দৃঢ় রাখতে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের দরকার হয়। ভিটামিন -সি এর উপস্থিতির কারণে ড্রাগন ফলকে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের উৎস বলা হয়। যা আপনাকে ব্রণের সমস্যা থেকে বের করে আনবে এবং ব্রণযুক্ত দাগ বা সক্রিয় ব্রণযুক্ত অঞ্চলগুলোতে ফলের রস লাগিয়ে স্ক্রাব করলেও উপকার পাবেন। তবে ব্রণজনিত ত্বকের চিকিৎসার জন্য আপনি বাড়িতে ভিটামিন সি সিরাম দিয়ে এটি ব্যবহার করে দেখতে পারেন।

রোদে ঘুরে ত্বকে টান পরে গিয়েছে, ভিটামিন ই-এর ক্যাপসুলের সঙ্গে ১/৪ ড্রাগন ফলের মিশ্রণ করুন এবং এটি আপনার ত্বকে লাগান। ১৫ মিনিটের জন্য রেখে দিন। তারপর এটি ঠান্ডা পানি দিয়ে ভাল করে ধুয়ে ফেলুন।

এছাড়াও, আপনি যদি কোনও প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার খুঁজে থাকেন তবে ড্রাগনের ফলের উপর নির্ভর করুন কারণ এর ৮০ শতাংশ কেবল পানি। আপনি যদি আপনার ত্বকের ছিদ্রকে আরও শক্ত করতে চান এবং পাশাপাশি অকালে ত্বক কুঁচকে যাওয়া রোধ করতে চান তবে এই ফলটি আপনার জন্য যথার্থ। ১ টেবিল চামচ ড্রাগন ফলের সঙ্গে ১ টেবিল চামচ দই মেশান। ফলটি ম্যাশ করুন। মিশ্রণটি আপনার মুখে লাগান। আপনার চোখের নীচে পুরু করে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রাখুন। এরপর ধুয়ে ফেলুন।

ঢাকাটাইমস/২৩আগস্ট/আরজেড/এজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সুনামগঞ্জে চলচ্চিত্র নির্মাতা ও লেখক জসীম আহমেদের বাড়ি দখলের চেষ্টা, গ্রেপ্তার ১
যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধান উপদেষ্টা
করোনা সংক্রমণ বাড়ায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সতর্কতা জারি 
কেন এপ্রিলে সংসদ নির্বাচন, ব্যাখ্যা দিলেন প্রেস সচিব
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা