রাগ নিয়ন্ত্রণের সহজ উপায়

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৭ জুলাই ২০২১, ১১:৫৪| আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২১, ১২:৪০
অ- অ+

অতিরিক্ত গাড়ির হর্ন, রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম, বাসের কন্ডাকটরের আচরণ, বাসে জানালা খোলা নিয়ে ঝগড়া কিংবা রেস্টুরেন্টের ওয়েটারের দেরিতে খাবার দেয়া, এমন অনেক কিছুতেই ইদানীং মানুষ খুব রেগে যান। রাগ হলে নিজেকে নিয়ন্ত্রণও করতে পারে না অনেকে। কখনও এমন পরিস্থিতি তৈরি হয় যে, রাগ চেপে রাখা কঠিন হয়ে যায়।

এমন পরিস্থিতিতে কেউ জোরে কথা বলেন, কেউ কথা বলাই হয়তো বন্ধ করে দেন। কেউ বা অন্য কোনও কাজের মাধ্যমে রাগ দেখান। কেউ আবার রাগ প্রকাশ করেন নিজের ভয় ঢাকতে। কেউ বা রাগের পিছনে ঢেকে রাখতে চান লজ্জা। হুট করে এমন রেগে গিয়ে খুন খারাবি পর্যন্ত হয়ে যাচ্ছে এমন ঘটনাও শোনা যায়। রাগ এমন পর্যায়ে চলে যাওয়ার আগেই সেটি নিয়ন্ত্রণ করা যায় কীভাবে।

মনোবিজ্ঞানীদের মতে, রাগ একটি স্বাভাবিক আবেগ। কিন্তু এই রাগ ক্ষতির কারণ হয়েও দেখা দিতে পারে। তার প্রভাব পড়তে পারে ব্যক্তিজীবন, সামাজিক ও পেশাগত জীবনে। এমনকি স্বাস্থ্যের ওপরও রাগের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

ভয়, লজ্জা, বিরক্তির মতো নানা কারণেই রাগ দেখান মানুষ। এ ছাড়াও ক্ষণে ক্ষণে রেগে যাওয়ার পিছনে থাকতে পারে অন্য কোনও কারণ। সম্পর্ক বা আর্থিক অবস্থার ভিত্তিতে তৈরি হওয়া মানসিক চাপও রাগের পিছনে একটি বড় কারণ। কয়েক ধরনের মানসিক অসুখও রাগ প্রকাশ করার মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।

অবসাদ: এই অসুখের কারণে টানা হতাশা, দুঃখ আসতে পারে। এমন অবস্থায় খুব বেশি দিন থাকলে কথায় কথায় রাগ এবং অভিমান, দুই-ই হতে পারে।

বাইপোলার ডিজঅর্ডার: এই অসুখ থাকলে ক্ষণে ক্ষণে মনের ভাবে পরিবর্তন আসে। অতিরিক্ত আনন্দের আবহেও অনেক সময়ে ঘিরে ধরে রাগের অনুভূতি।

মাদকাসক্তি: অতিরিক্ত মাদকদ্রব্য শরীরের প্রবেশ করলে অনেক সময়ে হিংস্র ভাব তৈরি করে। চিন্তাশক্তির উপরে মাদকের প্রভাবই এমন করে বলে মত মনোরোগ চিকিৎসকদের।

রাগ বাড়ার লক্ষণ

কথায় কথায় বিরক্ত হচ্ছেন। নেতিবাচক চিন্তা বেশি আসছে মনের মধ্যে। মাঝেমধ্যেই চেঁচামেচি করে ফেলছেন। উচ্চ রক্তচাপ, বুক ধরফরের মতো শারীরিক সমস্যা বেড়ে চলেছে। সাধারণ কোনও ঘটনাতেও অনেকের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিচ্ছেন।

রাগ নিয়ন্ত্রণ করবেন যেভাবে

অতিরিক্ত রাগের ফাঁদে পা দিয়ে অনেকেই ভুল করে ফেলে। যা বলার নয় বলে ফেলেন। যে আচরণ অপ্রয়োজনীয়, তা-ও করে ফেলেন। তাতে পরে সমস্যা হয় নিজেরই। ফলে রাগ নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। তার জন্য রইল কয়েকটি পরামর্শ—

কথা বলার আগে ভাবুন। কোনও সমস্যা দেখে বিরক্ত না হয়ে, সমাধান খুঁজুন। কোনটায় বেশি কাজ হচ্ছে, তা কিছু দিনেই বুঝতে পারবেন।

রাতে ভালো ঘুম না হবার কারণে সারাদিন মেজাজ খিটখিটে থাকে, যার ফলে মাঝে মাঝে কেউ যদি ভালো কথা বলে তাতেও রাগ উঠে যায়, ঠিক এমনি শরীর যদি ভালো না থাকে পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাব বা পেটে ক্ষুধা থাকে তখন ও অতি তুচ্ছ বিষয় নিয়ে রাগ উঠে যায়। তাই রাগ নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ঘুমের এবং পুষ্টিকর খাদ্যর কোন বিকল্প নেই।

রেগে যাওয়ার মতো কিছু ঘটেছে যে জায়গাটিতে সেখান থেকে সরে যাওয়া। যার ওপরে রাগ হয়েছে - তার কাছ থেকে সরে যাওয়া। তার সাথে তখনই নয়, বরং খানিক পরে কথা বলা। হাতের কাছে যদি বরফ থাকে তাহলে তা হাত দিয়ে ধরে থাকা। বরফ মেজাজ শীতল করতেও সহায়তা করে।

প্রচন্ড রাগের সময় যদি সম্ভব হয় যে কাপড়ে আছেন তাতেই গোসল করে ফেলুন। দাঁড়িয়ে থাকলে বসে পড়ুন, বসে থাকলে শুয়ে পড়ুন এতে করে রাগ নিয়ন্ত্রেণে আসবে। নিশ্বাসের একটি ব্যায়াম করে দেখতে পারেন। সেটি করার পদ্ধতি হল, রাগ থেকে মনটাকে সরিয়ে নিশ্বাসের দিকে মনোযোগ দেয়া। বুক ভরে গভীর নিশ্বাস নেয়া, সেটাকে কিছুক্ষণ ধরে থাকা, কিছুক্ষণ পর বাতাস ছেড়ে দেয়া। সেটি রাগ কমাতে সাহায্য করে।

(ঢাকাটাইমস/২৭জুলাই/আরজেড/এজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ধামরাই কি আমাদের মনোজাগতিক পঁচনকেই দৃশ্যমান করল?
কারবালার নৃশংস ঘটনা: নেপথ্যে কারা?
৪৪তম বিসিএস: পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথম হলেন ডা. শামীম শাহরিয়ার
ইতিহাসে তাৎপর্যময় ১০ মহররম, যা ঘটেছে যা ঘটবে
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা