দুর্ভোগ আর বাড়তি ভাড়ায় ঢাকায় ঢুকছে মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ৩১ জুলাই ২০২১, ১৪:৫১| আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২১, ১৫:৫৪
অ- অ+

দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে ২৩ জুলাই ৫ আগস্ট পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ ঘোষণায় ঢাকা ছেড়েছিলেন শিল্প-কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীরা। কিন্তু মালিকদের অনুরোধে সরকার হঠাৎ করে পহেলা আগস্ট থেকে গার্মেন্টসসহ শিল্প প্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা দেয়। এতে বিপাকে পড়েছেন তারা।

চাকরি বাঁচাতে শনিবার ভোর থেকে যে যেভাবে পারছেন ঢাকার পথে ছুটছেন। হাজার হাজার মানুষ হেঁটে, ট্রাক, পিকাপ, রিকশা, সিএনজি অটোসহ বিভিন্ন বাহনে ভেঙে ভেঙে ঢাকায় আসছেন। আর এভাবে ঢাকা ফেরার পথে চরমভাবে উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি। ঢাকা টাইমসের গাজীপুর, মানিকগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের প্রতিবেদকদের পাঠানো তথ্যে এমন চিত্রের দেখা মিলেছে।

করোনার সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে এতদিন শিল্প কারখানা বন্ধ রাখতে সরকার অনড় ছিল। কিন্তু তৈরি পোশাক শিল্পসহ সব ধরনের শিল্প কারখানা খুলে দিতে সরকারের উচ্চ মহলে বারবার অনুরোধ করছিলেন শিল্পমালিকরা। আন্তর্জাতিক বাজার হারানোর শঙ্কা, সাপ্লাই চেইন ভেঙে পড়া, বন্দরে জট, সার্বিক অর্থনীতিসহ সবকিছু বিবেচনা নিয়েই তারা এ অনুরোধ জানাতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান। একই অনুরোধ জানিয়েছিল পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএ। এমন অবস্থার মধ্যে ১ আগস্ট থেকে রপ্তানিমুখী শিল্প কারখানা খোলা রাখার অনুমোদন দেয় সরকার।

গাজীপুর: তৈরি পোশাকসহ শিল্প কারখানা খুলে দেয়ার খবরে দলে দলে গাজীপুরের কর্মস্থলে ফিরছেন শ্রমিকরা। সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রাক, পিকআপ ও অটোরিকশাসহ বিভিন্ন উপায়ে কর্মস্থলে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন তারা। এক্ষেত্রে মানা হচ্ছেনা কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব। পেটের দায়ে চাকরি বাঁচাতে মরিয়া এসব শ্রমিকদের পথের ভোগান্তি যেমন বেড়েছে তেমনই দিতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়ার মাশুল।

পুলিশ জানিয়েছে, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পোশাক শ্রমিকদের কর্মস্থলে ফিরতে চেকপোস্টে কিছুটা ছাড় দেয়া হচ্ছে। তারা পিকআপ, ট্রাকসহ বিভিন্ন পরিবহনের চড়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন।

মুন্সিগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ থেকে: শনিবার ভোর থেকে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে ঢাকায় আসার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পথ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া এবং শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে চলাচলকারী প্রতিটি ফেরিতে মানুষের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। গাদাগাদি করে মানুষ পদ্মা পার হচ্ছেন ফেরিতে করে। তাদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। যে যেভাবে পারছেন ফেরিতে করে পদ্মা পার হচ্ছেন।

ফেরি পার হওয়ার পরে আবারও গাড়ির সঙ্কটে পড়ছে মানুষ। বিকল্প উপায়ে বিভিন্ন যানে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে ভেঙে ভেঙে কর্মস্থলে ফিরছেন মানুষ। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় পাটুরিয়া ঘাট থেকে প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল ও সিএনজিতে জনপ্রতি ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা গুণতে হচ্ছে যাত্রীদের। যেখানে গণপরিবহন থাকলে মাত্র ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় ঢাকায় ফেরা যায়।

পাটুরিয়া ফেরিঘাটে মানুষের ঢল। ছবি: ঢাকাটাইমস।

রাজবাড়ী থেকে ঢাকার উদ্দেশে ফেরির জন্য অপেক্ষা করা নাজমা আক্তার বলেন, রবিবার থেকে কারখানা খোলা। তাই যত তাড়াতাড়ি পারি, ঢাকার বাসায় যেতেই হবে। কালকেই কাজে জয়েন করতে হবে। তাই আজকেই ঢাকায় যাচ্ছি।

তার মতো হাজারো পোশাক শ্রমিক সকাল থেকে ভিড় করেছেন পাটুরিয়া ঘাটে। তাদের অনেকে যানবাহন না পেয়ে পায়ে হেঁটে রওনা দিয়েছেন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে।

আরিচা অফিসের বিআইডব্লিউটিসির ডিজিএম জিল্লুর রহমান বলেন, কারখানা খুলে দেওয়ার ঘোষণায় সকাল থেকে ঢাকায় ফেরা মানুষের ঢল পড়েছে। এই নৌ-রুটে ৭টি ফেরি দিয়ে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। কালকের পর এই চাপ কমে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ঢাকাটাইমস/৩১ জুলাই/এআর/ইএস

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
যশোরে ঢালাইয়ের সময় ছাদ ভেঙে দুই প্রকৌশলীসহ নিহত ৩
এক ডিআইজি ও তিন এসপিকে চাকরি থেকে বরখাস্ত
জুলাইকে সবার গণজাগরণ ও ঐক্যের মাসে পরিণত করার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
নবী মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কার্টুন প্রকাশের অভিযোগে তুরস্কে সংঘর্ষ, গ্রেপ্তার ৪ জন
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা