আকাশনীলের প্রতারণা: অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও অর্থ ফেরতের দাবি

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আকাশনীল-এর মালিক মশিউর রহমান ও তার পরিবারের বিদেশযাত্রা স্থগিতসহ তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে অর্থ ফেরতের ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার, প্রশাসন ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে সাড়ে ২৫ কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা।
এসব টাকা ফেরত পেতে ও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার দাবিতে রবিবার বিকাল চারটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন ভুক্তভোগীরা।
এতে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন রুহুল আমিন, খন্দকার আব্দুল আলিম, মো. বাশার খান, আব্দুল করিম ও আল-আমিনসহ অনেকে।
ভুক্তভুগী গ্রাহকরা জানান, গ্রাহকদের আস্থা অর্জনের জন্য গত বছরের শেষ দিকে পণ্য দিতে না পারায় কিছু গ্রাহককে রিফান্ড হিসাবে চেক দিয়েছিলেন আকাশনীলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মশিউর রহমান। কিন্তু সেসব চেক ব্যাংকে বাউন্স হয়। আর তাতে আকাশনীলের প্রতারণার বিষয়টি গ্রাহকদের সামনে আসতে থাকে। একসময় গ্রাহকের ফোন ধরা বন্ধ করে দেন মশিউর।
২০১৮ সালের পর থেকে দেশে ডিজিটাল প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে ই-কমার্স ব্যবসা বাড়তে থাকে। কোভিড-১৯-এর সময় তা ফুলে-ফেঁপে ওঠে। এরই মধ্যে ই-কমার্স খাতে প্রতারণার প্রথম অভিযোগ ওঠে ইভ্যালির বিরুদ্ধে। এরপর একে একে বের হতে থাকে ধামাকা, ই-অরেঞ্জ, রিং আইডি, কিউকম, সিরাজগঞ্জ শপ, আলাদিনের প্রদীপ, বুম বুম, আদিয়ান মার্ট, নিডস, দালাল প্লাস, বাজাজ কালেকশন, টুয়েন্টিফোর টিকিট ডটকম, গ্রিন বাংলা, এক্সিলেন্ট ওয়ার্ল্ড এ্যাগ্রো ফুড এন্ড কনজ্যুমারস, গিটার্স আরএসটি ওয়ার্ল্ডসহ অন্তত ২৫টি প্রতিষ্ঠানের প্রতারণার তথ্য। ইতোমধ্যে ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জ, কিউকমসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
২০২০ সালে রাজধানীর গ্রিন রোডের জেজেআর হেরিটেজ, ১৪৭/ডি-১ নম্বর বাড়িতে গড়ে ওঠে আকাশনীল লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মশিউর রহমান তার মা খাদিজা বেগমকে চেয়ারম্যান, বোন মৌসুমী আক্তার ও স্ত্রী ফাতেমা আক্তারীকে শেয়ারহোল্ডার করেন। তাদের বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙার চন্দ্রাবাজার।
জানা গেছে, পারিবারিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠেছিল আকাশনীল। এমডি মশিউর রহমানের মা, বোন, স্ত্রীকে বিভিন্ন পদে বসানো হয়। আর পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন ইফতেখার উজ-জামান রনি। তার বাড়ি লক্ষ্মীপুর।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে ছাড়ে পণ্য বিক্রির প্রলোভনে অনেক গ্রাহককে আকৃষ্ট করে তারা। দুই শতাধিক গ্রাহককে পণ্য দেয়ার নামে অগ্রিম সাড়ে ২৫ কোটি টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ গ্রাহকদের। বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রতিষ্ঠানটি এসব টাকা নেয়। কিন্তু সময়মতো পণ্য সরবরাহ করেনি। সবশেষ জানুয়ারিতে পণ্য দেওয়ার আশ্বাসও রাখতে পারেনি আকাশনীল। পরে অনেককে রিফান্ডের চেক দেওয়া হলেও সেই অ্যাকাউন্টে টাকা পাননি গ্রাহকরা।
ঢাকা৷ টাইমস/২০মার্চ/পিআর/ইএস

মন্তব্য করুন