চিকিৎসা অবহেলায় শিক্ষার্থীর মৃত্যু, ৬৫ হাজার টাকায় রফা

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার নোয়াপাড়া চা বাগান হাসপাতালের কম্পাউডার অবহেলায় কিষান বুনার্জী নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে করে বাগানের শ্রমিকরা ফুসে উঠেছে। শ্রমিকরা শুক্রবার সকালে কাজ বন্ধ রেখে কর্ম বিরতি পালন করেন। বিকালে বাগান ব্যবস্থাপক, পঞ্চায়েত কমিটি ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বিষয়টি ৬৫ হাজার টাকার বিনিময়ে আপোষ করা হয়। নোয়াপাড়া চা বাগানের ঋতু বুনার্জীর ছেলে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী কিষান বুনার্জী গত কয়েকদিন যাবত কানের ব্যথায় ভুগছিলেন। তখন ওই শিক্ষার্থীকে বাগানের হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে হাসপাতালের কম্পাউডার জাহাঙ্গীর আলম তাকে নাম মাত্র কিছু ঔষধ দেয়। এতে তার অবস্থার উন্নতি না হয়ে অবনতি ঘটে।

শুক্রবার সকালে কিষানের অবস্থার আরও অবনতি হলে তাকে বাগানের হাসপাতালে নিয়ে গেলে কম্পিউডার কিষানকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠায়। হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এই ঘটনা বাগানে ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকরা বাগান ব্যবস্থাপকের বাংলোর সামনে জড়ো হয়ে প্রতিবাদ করে। বিকালে নোয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. সোহেল, বাগান ব্যবস্থাপক, পঞ্চায়েত সভাপতি বসে কিষানের পরিবারকে ৬৫ হাজার টাকা দিবার রায় করে বিষয়টি সমাধান করেন।

নোয়াপাড়া চা বাগানের শ্রমিক সন্তোষ র‌্যালি জানান, একমাত্র চিকিৎসার অবহেলায় শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। কম্পাউডার তাকে আগেই রেফার করলে উন্নত চিকিৎসা করা হলে ওই শিশুটির মৃত্যু হত না।

বাগানের নারী শ্রমিক সুকুন্তলা গোয়ালা জানান, বাগানের হাসপাতালে কোন চিকিৎসক নেই। কম্পাউডার চিকিৎসা করেন। তার কাছে চিকিৎসার জন্য গেলে কয়েকটা ট্যাবলেট ধরিয়ে দেয়।

বাগান হাসপাতালের কম্পাউডার জাহাঙ্গীর আলম জানান, ওই শিশুর যে রকম সমস্যা ছিল সে অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। হঠাৎ তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে রেফার করা হয়। হবিগঞ্জ নিয়ে গেলে শিশুটি মারা যায়। এখানে চিকিৎসার কোন অবহেলা হয়নি।

এ ব্যাপারে নোয়াপাড়া চা বাগানের ব্যবস্থাপক ফকরুল ইসলাম ফরিদির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, স্থানীয় চেয়ারম্যান কে নিয়ে বিষয়টি শেষ করা হয়েছে। ৬৫ হাজার টাকা ওই পরিবার কে দেওয়া হবে।

নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. সোহেল জানান, ঘটনার খবর পেয়ে বাগানের গিয়েছি। বাগান পঞ্চায়েত, শ্রমিক, বাগান কৃর্তপক্ষ বসে সমাধান করেছে। ওই পরিবার কে ৬৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে তাছাড়া ওই পরিবারের একজন কে বাগানে স্থায়ী বাসে চাকরি দেওয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/৭মে/এসএ)