কিশোরী ধর্ষণে যুবকের যাবজ্জীবন, সন্তানের দায়িত্ব সরকারের

আদালত প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১১ আগস্ট ২০২২, ১৫:৪৬| আপডেট : ১১ আগস্ট ২০২২, ১৬:২৭
অ- অ+

রাজধানীর বনশ্রীতে ১১ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণের মামলায় আসামি মো. রাজু আহমেদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডের রায় দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে রাষ্ট্রকে ওই কিশোরীর গর্ভে জন্ম নেয়া সন্তানকে ২১ বছর পর্যন্ত লালনপালনের দায়িত্ব দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার ঢাকার তিন নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালত রায়ে বলেছেন, ধর্ষণ থেকে জন্ম নেয়া সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে দণ্ডিত যুবকই পিতা প্রমাণিত হয়েছেন। তাই পিতার অবর্তমানে ২১ বছর পর্যন্ত রাষ্ট্র সরকারি শিশু সোনামনি নিবাসে লেখাপড়াসহ সব ধরনের খরচ বহন করবে।

তবে চাইলে সন্তানের বাবার পক্ষ পারিবারিক আদালতে ওই সন্তানকে হেফাজতে নেয়ার আবেদন করতে পারবেন বলে জানান আদালত।

এ মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদা আক্তার এবং ভিকটিমের পক্ষে আইন সহায়তা দেওয়া নারী নির্যাতন প্রতিরোধ মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রামের আইন কর্মকর্তা অ্যাডভোকেট ফাহমিয়া আক্তার রিংকি রায় সম্পর্কে বলেন, মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ছিল। কিন্তু শিশু সন্তানটির ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই ট্রাইব্যুনাল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, জন্ম নেয়া শিশু সন্তানটি এখন সরকারি শিশু সোনামনি নিবাসে আছে। রায় অনুযায়ী ২১ বছর পর্যন্ত সরকারি খরচে সেখানে থাকবে। তার আগে পারিবারিক আদালতে আবেদনের মাধ্যমে কোনো পক্ষ নিতে চাইলে নিতে পারবে। আর এর মধ্যে না নিলে ২১ বছর পর হওয়ার পর কোনো পক্ষকে নিতে হবে।

রায় ঘোষণার সময় দণ্ডিত মো. রাজু আহমেদ (৩৫) ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাকে সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। রাজু আহমেদ ঢাকার সবুজবাগ থানাধীন ৭৫, ওহাব কলোনীর এমএ কালামের ছেলে।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ঘটনাকালীন সময় ওই শিক্ষার্থী বনশ্রীর ইস্টার্ন কলেজের ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশোনা করত। তার মা চাকরিজীবী হওয়ায় বাসায় অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে ২০১৭ সালের ১২ মে থেকে প্রায় সময়ই ভিকটিমদের বাসায় এসে ভিকটিমকে ফুসলিয়ে ও বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করিতেন রাজু। পরে শিশু শিক্ষার্থীর মা ২০১৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মেয়ের শারীরিক গঠন দেখে সন্দেহ হলে ইসলামী হাসপাতালে নিয়া গেলে চিকিৎসক আল্ট্রাসনোগ্রাম করান। তখন জানা যায় ওই শিশু ৮ মাসের গর্ভবতী। পরে মেয়েকে ঘটনা সংক্রান্তে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায়, রাজু প্রায়ই বাসায় এসে তাকে ধর্ষণ করেছে। ওই ঘটনায় ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ওই শিক্ষার্থীর মা মামলা করেন। মামলার পর ২০১৮ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ভিকটিম পুত্রসন্তান প্রসব করে।

মামলাটি তদন্তের পর একই বছর ৭ মে আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলার বিচারকালে ট্রাইব্যুনাল চার্জশিটের ১১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

(ঢাকাটাইমস/১১আগস্ট/ইএস)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
মুরাদনগরে একই পরিবারের তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা, ৬ জনকে আটক করেছে র‍্যাব
আগে বিচার ও সংস্কার তারপর নির্বাচন: নাহিদ ইসলাম
বিএইচবিএফসি'র প্রথম পুরস্কার অর্জন 
কুমিল্লায় মা ও দুই সন্তানকে পিটিয়ে হত্যা মামলায় ২ জন গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা