চা শ্রমিকদের কাজে ফেরাতে ব্যর্থ হবিগঞ্জের প্রশাসন

নিজস্ব প্রতিবেদক, হবিগঞ্জ
 | প্রকাশিত : ২৪ আগস্ট ২০২২, ১৮:২০

হবিগঞ্জে চা শ্রমিকদের কাজে ফেরাতে ব্যর্থ হয়েছেন জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বাধীন স্থানীয় প্রশাসনের লোকজন। ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে চলমান আন্দোলনে চালিয়ে যাবার সিদ্ধান্তে অনড় থাকবেন চা শ্রমিকরা।

বুধবার বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদে হলরুমে চা শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

চা শ্রমিক ও পঞ্চায়েত নেতারা বলেন, প্রশাসন যা-ই বলুক না কেন, আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ছাড়া কাউকে বিশ্বাস করি না। তিনি যা বলবেন আমরা তাই শুনবো।

চা শ্রমিকরা তাদের দাবি পূরনে শক্ত অবস্থানে রয়েছে জানিয়ে শ্রমিকরা বলেন, কারো ওপর আমাদের বিশ্বাস নেই। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে মা বলে ডাকি। তিনি একটা কথা বলুক আমরা কাজে ফিরে যাব।

তারা বলেন, গত ১৯ মাস ধরে চা মালিক পক্ষ আমাদের বেতন বৃদ্ধিতে টালবাহানা করেছে। বর্তমান দ্রব্যমূল্য বাজারে আমরা না খেয়ে দিন পার করছি। এমতাবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর মুখের দিকে আমরা তাকিয়ে আছি।

শ্রমিক নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, আমাদের আন্দোলন এখন হাতের মুঠোয় নেই। সাধারণ শ্রমিকদের হাতে চলে গেছে। কারন বিগত দিনে চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা আমাদেরকে মাঠে নামিয়ে নিজেরা লাভবান হয়েছে। শ্রমিকরা দাবি আদায়ে প্রয়োজনে রাস্তায় পড়ে থাকবো। গুলি মেরে আমাদের মেরে ফেলুন। আমাদের দাবি আদায় না হলে কাজে ফিরবো না ।

বৈঠক চলাকালে চা শ্রমিকরা একবার হলরুম থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। পরে আবার তাদেরকে ফিরিয়ে আনা হয়।

প্রশাসনের লোকজন শ্রমিকদের বিভিন্নভাবে আশ্বাস প্রদানের চেষ্টা চালিয়ে ছিলেন। তবে শ্রমিকরা অতীতের বিভিন্ন উদাহরণ টেনে এসব আশ্বাসকে তারা বিশ্বাস করেন না বলে জানিয়েছেন।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিন্টু চৌধুরী, পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা, চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল কাদির লস্কর, চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিদ্ধার্থ ভৌমিক ও মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মঈনুল ইসলাম, চুনারুঘাট উপজেলার ৭ ইউনিয়র পরিষদের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে ১৬ দিনের মতো হবিগঞ্জের ২৪টি চা বাগানে কর্মবিরতি পালন করছেন শ্রমিকরা। বুধবার সকালে বিভিন্ন বাগানের শ্রমিকরা চান্দপুর ফ্যাক্টরির সামনে এসে জড়ো হন।

এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ২৪টি বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির নেতাদের সাথে বৈঠকে বসেন। প্রায় ২ঘন্টা বৈঠক শেষ হয় কোন সমাধান ছাড়াই।

দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকার দাবিতে ৯ আগস্ট থেকে আন্দোলনে নামেন দেশের চা শ্রমিকরা। ৯ আগস্ট থেকে ৪ দিন ২ ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন তারা। এরপর গত ১৩ আগস্ট থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করেন। এর মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক হলেও তা সমাধান হয়নি। আন্দোলনরত শ্রমিকরা দুইদিন ঢাকা-সিলেট মহাসড়কও অবরোধ করেন।

(ঢাকাটাইমস/২৪আগস্ট/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :