আগামীকাল বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস

পরিবেশ সুরক্ষা ও স্বাস্থ সচেতনতা বাড়াতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আগামীকাল ২২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে পালিত হবে বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস-২০২২। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা নানান কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
এ বছর ‘জ্বালানি ব্যবহার ও যানজট নিয়ন্ত্রণ করি, ব্যক্তিগত গাড়ি সীমিত রাখি’ শ্লোগানে ৬২টি সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সম্মিলিত উদ্যোগে দিবসটি উদযাপন করা হবে।
আজ ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস-২০২২ উদযাপন জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে এই কর্মসূচির কথা জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উত্থাপন করেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)’র নির্বাহী পরিচালক সাবিহা পারভীন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ডিটিসিএ’র অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক (মাস ট্রানজিট) এ কে এম হাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক (টিএমপিটিআই) মোহাম্মদ রবিউল আলম, ট্রান্সপোর্ট ইঞ্জিনিয়ার, মোহাম্মদ হায়দার কামরুজ্জামান। এছাড়া সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি ও সাংবাদিকরা।
এ বছর দিবস উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচিকে ভিন্ন ভাবে সাজানো হয়েছে। এর মধ্যে সাইকেল র্যালি, শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ: বিদ্যালয়ে হেঁটে যাতায়াতের নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিতে করণীয়” শীর্ষক লাইভ টক শো, বসবাসযোগ্য ঢাকা: ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভা, পার্কিং এর পরিবর্তে এলাকাভিত্তিক ছোট আকারের সামাজিকীকরণের সুযোগ গড়ে তোলার আহ্বানে সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেইন, মোহাম্মদিয়া হাউজিং এ কার ফ্রি স্ট্রীট এবং আলোচনা সভা।
এছাড়া দিবস উপলক্ষে আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১০.৩০ ডিটিসিএ এর সভা কক্ষে ( নগর ভবন, দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, লিফট এর ১২) আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নাগরিকদের ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার না করে বরং সাইকেল, হাঁটা বা গণপরিবহন ব্যবহারে উৎসাহিত করতে ৭০’র দশকে ইউরোপে গাড়িমুক্ত দিবসের সূচনা হয়।
২০০৬ সাল থেকে দেশে বেসরকারি উদ্যোগে দিনটি উদযাপন করা হচ্ছে। তবে ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে এটি পালন শুরু হয়। এই দিবসের অঙ্গীকার অনুযায়ী ইতোমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার সীমিত বা নিয়ন্ত্রিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
বর্তমানে যানজটের কারণে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ কর্মঘন্টা নষ্ট হচ্ছে। জ্বালানির অপচয় হচ্ছে, বাড়ছে দূষণ। এজন্য বছরে হাজার হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়ে থাকে। বর্তমানে ঢাকায় প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করে। প্রতিদিন যোগ হচ্ছে প্রায় ৪০টি নতুন ব্যক্তিগত গাড়ি।
এছাড়া মোটরসাইকেল এর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, এটিও দূঘটনা ও দূষণ বৃদ্ধিরজন্য দায়ী। তাই উন্নত গণপরিবহন ব্যবস্থার বিকল্প নেই। ইতিমধ্যে মেট্রোরেল, বাস র্যাপিড ট্রানজিট, বাস রুট ফ্রাঞ্চাইজ, প্রয়োজনীয় সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ এবং মানসম্মত ফুটপাত তৈরিসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ চলমান রয়েছে।
পাশাপাশি পুরাতন যানবাহনরে যথাযথ প্রকৃয়ায় জীবনাবসানরে জন্য ‘পুরাতন যানবাহন স্ক্র্যাপ গাইডলাইন’ এর খসড়া তৈরি করা হয়েছে। এগুলো সম্পন্ন হলে ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পর্যায়ক্রমে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। সে জন্য এখন থেকেই নগরবাসীর নিকট বার্তা প্রদান করা দরকার। বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস উদযাপনের মাধ্যমে এ বিষয়ে ব্যাপক সচেতনতা তৈরি করা সম্ভব।
(ঢাকাটাইমস/২১সেপ্টেম্বর/এসকেএস)

মন্তব্য করুন