চুয়াডাঙ্গায় ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব, হাসপাতালে শয্যার তুলনায় কয়েক গুণ রোগী
আবহাওয়ার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে চুয়াডাঙ্গায় বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব। বিশেষ করে শীতজনিত রোটা ভাইরাসের কারণে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। গত কয়েক দিন ধরে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে শয্যার তুলনায় কয়েক গুণ রোগী ভর্তি হয়েছেন।
ধারণ ক্ষমতা সীমিত হওয়ায় তাদেরকে হাসপাতালের বারান্দায় থেকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এমনকি হাসপাতালের উপরে উঠার র্যাম সিড়িতে ঠাঁই নিতে দেখা গেছে।
এদিকে গত সাত দিনে সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন ২১৫ জন। এরমধ্যে বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত ভর্তি হয়েছেন ৪১ জন। বর্তমানে রোগী ভর্তি আছেন ১৪০ জন। এছাড়া জরুরি বিভাগ ও আন্তঃবিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন ৩ শতাধিক রোগী। জায়গা না থাকায় অনেককে রাতে বাড়ি চলে যেতে দেখা গেছে।
অপরদিকে যারা ভর্তি আছে তাদের বেশিরভাগই ৬ মাস থেকে দেড় বছর বয়সের শিশু। বাকিরা বিভিন্ন বয়সের নারী ও পুরুষ।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে রোগী বেশি থাকলেও সংকট নেই স্যালাইন ও ওধুষের।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল ১০০ শয্যার হলেও নেই ডায়রিয়া ওয়ার্ড। রোগীদের সুবিধার্থে পুরাতন ভবনের নীচ তলায় র্যাম সিড়ির পাশে দুটি কক্ষে ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখানে ধারণ ক্ষমতা ২০ জনের। একজন সিনিয়ার স্টাফ নার্স, দুজন শিক্ষানবিশ নার্স ও একজন স্বেচ্ছাসেবী রোগীদের সেবা দিয়ে থাকেন।
বুধবার রাতে ও বৃহস্পতিবার সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ঘুরে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। ওয়ার্ডের ভেতর জায়গা না পেয়ে বারান্দায়, র্যাম সিড়িতে এমনকি হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসারের কক্ষের সামনে পর্যন্ত রোগীদের অবস্থান করতে দেখা গেছে।
এতে রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স ও সেচ্ছাসেবীরা।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু কনসালটেন্ট ডা. মাহাবুবুর রহমান মিলন ঢাকা টাইমসকে বলেন, শীতজনিত রোটা ভাইরাসের কারণে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বিশেষ করে শিশুরাই এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। এর থেকে প্রতিকার পেতে বাসি ও ঠান্ডা খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে। টয়লেট করার পর সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত পরিস্কার করতে হবে।তিনি বলেন, শিশুদের মায়ের বুকের দুধের পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। বর্তমানে আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে সকালে ঠান্ডা অনুভব হচ্ছে। ওই সময় শিশুদের ঘরের বাইরে বের হতে দেওয়া যাবেনা।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. এএসএম ফাতেহ আকরাম ঢাকা টাইমসকে বলেন, একদিকে জনবল সঙ্কট অপরদিকে ডায়রিয়া রোগীর চাপ বেশি। রোগীদের সেবা দিতে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। তারপরও সেবার দিক থেকে আমাদের আন্তরিকতার কোনো অভাব নেই। আমাদের পর্যাপ্ত স্যালাইন ও প্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবস্থা আছে।
(ঢাকা টাইমস/১৭নভেম্বর/এসএম)