জামালপুরে সংযোগ সড়ক ছাড়া সেতু!

ইমরান মাহমুদ, জামালপুর
  প্রকাশিত : ০৭ ডিসেম্বর ২০২২, ১৪:৪১
অ- অ+

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলা নাংলা ইউনিয়নের বন্ধরৌহা এলাকায় কাটাখালী নদীর উপর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এক বছর আগে সড়ক ছাড়াই একটি সেতু নির্মাণ করেছে। তবে সেতুটির দুই পাশে চলাচলের জন্য কোন সড়ক না থাকায় জনসাধারণের কোন কাজে আসছে না। এতে সেতুর সুবিধা পাচ্ছেন না উপজেলার দুই ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ। ভূমি অধিগ্রহণের টাকা না পেলে রাস্তার কাজ করতে দেবে বলে জানিয়েছেন জমির মালিকরা।

ভূমি অধিগ্রহণে কিছুটা সময় লেগেছে, অধিগ্রহণ শেষ হয়েছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সায়েদুজ্জামান সাদেক।

জানা যায়, মাহমুদপুর ইউনিয়নের পুঠিয়ারপাড়া, খাসিমারা, নালছিয়াসহ দুইটি ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করতে বন্ধরৌহা গ্রামের কাটাখালী নদীর উপর এক বছর আগে ৯০ মিটার একটি সেতু নির্মিত করা হয়েছে। এক বছর আগে নির্মাণ কাজ শেষ হলেও সেতুর দুই পাশে সড়ক না থাকাই সেতুটি এখন চালু হয়নি।

বন্ধরৌহা এলাকার স্থানীয়রা বলছেন, যে জায়গা সেতুটি নির্মাণ হওয়ার কথা ছিল, সে জায়গায় সেতুটি নির্মাণ হয়নি। ফলে বন্ধরৌহা এলাকার স্থানীয়দের সুবিধার চেয়ে ক্ষতি বেশি হয়েছে। যে জায়গায় সেতু নির্মাণের কথা ছিল, সেই জায়গার সেতু নির্মাণ হলে জমি অধিগ্রহণ করে সড়ক নির্মাণ করতে হতো না। এখন সেতুর দুই পাশে ফসলি জমির উপর দিয়ে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করতে হবে। এতে ফসলের জমির ক্ষতি হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ‘কাটাখালী নদীর উপর সেতুটি নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। সড়ক ছাড়া নদীর উপর সেতুটি দাঁড়িয়ে আছে। সেতুর দুই পাশে কোন সড়ক নেই।

বন্ধরৌহা এলাকার লাইট মিয়া বলেন, ‘এক বছর আগে ব্রিজের কাজ শেষ হয়েছে। এখনো রাস্তার কাজ ধরে নাই। রাস্তায় আমার জমি পড়ছে। অনেক দিন হয় টাকা দেবে বলছে, কিন্তু এখনো টাকা দেয়ার কোন নাম নাই। জমির টাকা না দেয়া পর্যন্ত রাস্তার কাজ করতে দেয়া হবে না। এই সেতু নির্মাণে আমার সুবিধার চেয়ে ক্ষতিটাই বেশি হয়েছে। আমার জমির মাঝখান দিয়ে সড়ক হবে। সড়কের দুই পাশে যে জায়গাটুকু থাকবে, তাতে চাষাবাদ হবে না।

পুঠিয়ারপাড়া এলাকার এবাদুর রহমান শেলী জানান, সেতুর কাজ এক বছর আগে শেষ হয়েছে। জমি অধিগ্রহণের জটিলতার কারণে রাস্তা নির্মাণ করতে পারছে না। সেতুর পশ্চিম পাশে যেখানে সড়ক আছে, সেতুটি সেখানে করা হয়নি। পূর্ব পাশে কোন সড়ক নেই, সেখানে সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। প্রায় আধা কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করে সেতুর সাথে সংযোগ দিলে যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল হবে। কবে সেতু চালু হবে জানি না। তবে পশ্চিম পাশে সেতুটি হলে সড়কের জন্য বাড়তি খরচ লাগত না।

বন্ধরৌহা এলাকার বাদশা মিয়া বলেন, ‘হিসাব ছাড়া সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুটি আমাদের এলাকার লোকজনের কোন কাজে লাগবে না। মাহমুদপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মানুষের কাজে লাগবে। সেতুর সাথে সংযোগ দিতে নতুন রাস্তা নির্মাণ করতে হবে। বন্যার সময় নতুন রাস্তা টিকবে না, ভেঙে যাবে। এখন নদীর পশ্চিম পাশ দিয়ে লোকজন চলাচল করে। ওই রাস্তায় ৩০০ মিটারের মতো নতুন রাস্তা করে দিলেই আর ব্রিজের প্রয়োজন পড়ত না। সেতুর সাথে সংযোগ সড়ক করতে যে টাকার জমি কিনতে হবে, সেই টাকা দিয়েই পশ্চিম পাশের রাস্তা হয়ে যেত। ওই রাস্তা দিয়ে লোকজন চলাচল করতে পারত। এত টাকা খরচ করে ব্রিজ করতে হতো না।

এ ব্যাপারে জামালপুর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সায়েদুজ্জামান সাদেক বলেন, ভূমি অধিগ্রহণে কিছুটা জটিলতা ছিল। অধিগ্রহণ শেষ হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কিছু দিনের মধ্যে কাজ শুরু করবে। ড্রয়িং ও ডিজাইন দেখে সেতুটি নির্মাণ হয়েছে। স্থানীয়রা যে জায়গায় সেতু নির্মাণের কথা বলছে, সেই জায়গাটি ভাঙন কবলিত জায়গা। ভাঙন কবলিত জায়গায় তো ব্রিজ করা যাবে না।

(ঢাকাটাইমস/০৭ডিসেম্বর/এলএ/এসএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
আমরা আশাবাদী, নির্বাচনের মাধ্যমে দেশ সঠিক পথে এগোবে: মির্জা ফখরুল
পঞ্চগড়ে দেড় বছর বয়সী সন্তানের গলায় ছুরি ধরে মাকে ‘দলবেঁধে ধর্ষণ’, গ্রেপ্তার ৪
শেখ হাসিনাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ ১০ জুলাই
তিনবারের ‘বেস্ট ডমেস্টিক এয়ারলাইন’ ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা