মুন্সীগঞ্জে সরকারি স্কুলে উপবৃত্তির সুফল, বাহবা পাচ্ছে নগদ

ঢাকাটাইমস ডেস্ক
 | প্রকাশিত : ২২ জানুয়ারি ২০২৩, ২১:৪৬

ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতের সকাল। স্কুল মাঠের এপাশ থেকে ওপাশ ঠিকভাবে দেখা যায় না। মাঠের মধ্যে শুধু একটা আবছা অবয়বের নড়াচড়া। কিছু শিশু গোল হয়ে ঘুরছে। দূর থেকে কেউ ডাকছে- ‘মালা, ও মালা...’।

কাছে যেতেই উজ্জ্বল হয়ে উঠলো মুখগুলো। কুয়াশাচ্ছন্ন সকালেও ওদের মুখাবয়বে যেন আলোকিত দিনের আভা। কনকনে শীত উপেক্ষা করে মুন্সীগঞ্জ শহরের মাঠপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে মুখরিত করে রেখেছে ওরা।

প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক নিলুফা আফরোজ হেসে বলন, ‘বছরের শুরুতে, এমন শীতের দিনেও সব বাচ্চা স্কুলে এসেছে। উপস্থিতির হার এখন প্রায় একশ ভাগ।’

এই চিত্র কেবল মাঠপাড়া স্কুলের নয়। পুরো মুন্সীগঞ্জ শহরই জানান দিচ্ছে, প্রতিটা সরকারি স্কুল কয়েক বছর আগের চেয়ে এখন অনেক জমজমাট। আজকাল শিশুদের ঝরে পড়া আর অনুপস্থিতি নেই বললেই চলে। বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়েছে সরকারি স্কুলগুলো। আর এ জন্য সরকারের উপবৃত্তি কার্যক্রমকে অন্যতম সহায়ক হিসেব চিহ্নিত করলেন প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষকরা।

কিছু দিন আগেও সন্তানদের স্কুলে পাঠাতো না শিল্প কারখানার শ্রমিক ও আলু চাষের কৃষক হিসেবে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুন্সীগঞ্জে এসে বসত করা লাখো মানুষ। সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর চেয়ে ছেলে বা মেয়েটিকে কাজে দেওয়াই লাভজনক মনে করতেন এই নিম্ন আয়ের মানুষেরা। তবে ওই মানসিকতার বিপুল পরিবর্তন এনেছে উপবৃত্তি।

মুন্সীগঞ্জ সদরের উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোসাম্মাৎ নাসিমা খানম বলেন, এটা মূলত একটা শিল্প এলাকা। এছাড়া এখানে প্রচুর আলু চাষ হয়। বাইরে থেকে অনেক শ্রমিক ও কৃষক আসেন কাজ করতে। তাদের পরিবার থেকে শিশুরা বিদ্যালয়ে আসতে আগ্রহ দেখাতো না। কিন্তু এখন আমরা জরিপ করে দেখতে পাই, এসব পরিবারের সব শিশু বিদ্যালয়ে আসছে। কারণ অবশ্যই ‘উপবৃত্তি’।

এরকমই একটি পরিবারের সদস্য আক্কাস আলীর সঙ্গে কথা হয় ঢাকা টাইমসের। তার আদি বাড়ি যশোর। তিনি মুন্সীগঞ্জের একটি কারখানায় চাকরি করেন। তার একমাত্র সন্তান আয়েশা সিদ্দিকী বাক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী। এই মেয়েকে স্কুলে পাঠানোর কথা তিনি ভাবতেও পারতেন না। কিন্তু সরকার থেকে উপবৃত্তি পাওয়ায় আক্কাস তার মেয়েকে স্কুলে পাঠাচ্ছেন।

আয়েশার মা সুলতানা বলেন, ‘আগে তো মাইয়াডারে স্কুলে পাঠানির কথা ভাবতাম না। আমাগো সেই সামর্থও ছিলো না। কিন্তু এহন সরকার আরও অনেক সুবিধা দিচ্ছে আমার প্রতিবন্ধি মাইয়ারে। আর স্কুলেও এহন উপবৃত্তি দিতেছে। সরকাররে আমার ধন্যবাদ জানানোর ভাষা নাই। নগদ-রেও অনেক ধন্যবাদ।’

আয়েশার মতো উপকারভোগীরা উপবৃত্তি কার্যক্রম ঠিকঠাক চালিয়ে নেওয়ার জন্য নগদকে ধন্যবাদ দিচ্ছেন। নগদ ২০২১ সাল থেকে উপবৃত্তি বিতরণ করছে। তারা ব্যাপারটা শুধু যে পুরোপুরি ডিজিটাল করেছে, তাই নয়। এখন উপবৃত্তি না পাওয়ার অভিযোগ নেই বললেই চলে।

এ কারণেই নগদ নিয়ে বলতে গিয়ে মোসাম্মাৎ নাসিমা খানম বলেন, ‘মোবাইল সেবা ‘নগদ’ এই সেবাটা দিচ্ছে। তারা খুব ভালোভাবে কাজটা করছে। আমার এই উপজেলায় খুব স্বচ্ছতার সঙ্গে উপবৃত্তি বিতরণ হচ্ছে। অনিয়ম দেখছি না। এখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মা, বাবা বা বৈধ অভিভাবকেরা নিজেদের সক্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে (এমএফএস) উপবৃত্তির টাকা গ্রহণ করছেন। ফলে কাউকে অন্য প্রতিষ্ঠানে নতুন করে হিসাব খুলতে হচ্ছে না, ভোগান্তিও নেই। এখানে শিশুরা খুব ভালোভাবে টাকা পাচ্ছে। ফলে আমি নগদ-কে ধন্যবাদ দেব। আশা করব, এভাবেই তারা দেশের শিক্ষার জন্য কাজ করে যাবে।

(ঢাকাটাইমস/২২জানুয়ারি/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিক্ষা এর সর্বশেষ

কুবিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

ঢাকাসহ ৫ জেলার মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ সোমবার বন্ধ, খোলা প্রাথমিক

প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: ঢাকা ও চট্টগ্রামের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নতুন নির্দেশনা

শিক্ষার্থীদের দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে ওঠার তাগিদ দিলেন শিল্পমন্ত্রী

ঢাকার তাপমাত্রা দেখে সারাদেশে স্কুল বন্ধ করা যুক্তিযুক্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী

বাংলাদেশ স্কাউটস রোভার অঞ্চলের ৪৮তম বার্ষিক কাউন্সিল সভা অনুষ্ঠিত 

তাপপ্রবাহের ঝুঁকির মধ্যেই খুলল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

বেরোবিতে উৎসবমুখর পরিবেশে ‘এ’ ইউনিটের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছের 'এ' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত

কুবিতে গুচ্ছ পদ্ধতির ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষা সম্পন্ন, উপস্থিতি ৮৭ শতাংশ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :