বেদেদের ‘ঠার’ ভাষা সংগ্রহে অবদান: ​আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক পাচ্ছেন হাবিবুর রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৯:৫০ | প্রকাশিত : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৮:৪৭

হাবিবুর রহমান উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তা। অপরাধ দমন-নির্মূলের মতো পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ব্যক্তিজীবনে সমাজ পরিবর্তনেও নানামুখী অবদান তার। সমাজসেবামূলক নানা ধরনের কর্মকাণ্ডে এরইমধ্যে তিনি রেখেছেন নানান নজির।

বর্তমানে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি ও ট্যুরিস্ট পুলিশ প্রধান হাবিবুর রহমান এবার পাচ্ছেন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক-২০২৩। বেদে জনগোষ্ঠীদের বিলুপ্তপ্রায় ‘ঠার’ ভাষা সংগ্রহে অবদান রাখায় তাকে এই স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে।

মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের দিন মঙ্গলবার ঢাকার সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটের অডিটরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই পদক তুলে দেবেন।

বেদে জনগোষ্ঠীর মাতৃভাষা ‘ঠার’। বিলুপ্তির পথে থাকা সেই ভাষাটি সংগ্রহ করেছেন হাবিবুর রহমান। ঠার ভাষার কোনো বর্ণ বা লিপি নেই। মূলত এটি কথ্য ভাষা। তবে বেদেরা ছাড়া এই ভাষা সাধারণ মানুষের বোধগম্যের বাইরে।

ভাষা বিজ্ঞানীদের মতে, ১৬৩৮ সালে শরণার্থী আরাকানরাজ বলালরাজের সঙ্গে মনতং জাতির যে ক্ষুদ্র অংশ বাংলাদেশে প্রবেশ করে তাদের ভাষার নাম ‘ঠার’ বা ‘ঠেট’ বা ‘থেক’ ভাষা।

হাবিবুর রহমান রহস্যময় ‘ঠার’ ভাষা নিয়ে আট বছর গবেষণা করেন। তার গবেষণালব্ধ পূর্ণাঙ্গ বই ‘ঠার বেদে জনগোষ্ঠীর ভাষা’ নামক বইটি ২০২২ সালে প্রকাশ পায়। এক বছরের মাথায় অসামান্য গবেষণাকাজের স্বীকৃতি হিসেবে পাচ্ছেন হাবিবুর রহমান।

‘ঠার: বেদে জনগৌষ্ঠীর ভাষা’ গ্রন্থটি গবেষণানির্ভর ও তথ্যসমৃদ্ধ করার ক্ষেত্রে হাবিবুর রহমানকে সহযোগিতা করেছেন অধ্যাপক রনজিত সিংহ, ভারতের মহেন্দ্র কুমার মিশ্র। এছাড়াও কানাডাভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ লাভার্স অ্যাসোসিয়েশন থেকেও তথ্য-উপাত্ত নেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক বাংলাদেশের একটি বেসামরিক পুরস্কার। বিশ্বজুড়ে মাতৃভাষায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০২১ সাল থেকে প্রতি দুইবছর পরপর এই পদক প্রদান করা হয়।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সরকার পদকটি প্রবর্তন করে। এবার হাবিুরর রহমানসহ একাধিক ব্যক্তি এই পুরষ্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন।

পুলিশের চাকরির পাশাপাশি লেখালেখি ও নানা ধরনের সমাজসেবা কার্যক্রমে সক্রিয় অতিরিক্ত আইজিপি হাবিবুর রহমান। এর আগে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে নিয়ে ‘নন্দিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান’ সম্পাদনা করেন।

‘মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ’ নামে তার গ্রন্থিত আরেকটি বইয়ে প্রথমবারের মতো বিস্তারিত উঠে আসে একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের ভূমিকা। ২০১৮ সালে প্রকাশিত বইটি সম্পাদনায় মুন্সিয়ানাও দেখিয়েছেন হাবিবুর রহমান।

১৯৬৭ সালে গোপালগঞ্জের চন্দ্র দিঘলিয়া গ্রামে জন্ম নেওয়া হাবিবুর রহমান ১৭তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে যোগ দেন। এই পুলিশ কর্মকর্তা বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সফলভাবে পালন করে আসা এই পুলিশ কর্মকর্তার পেশাগত সাফল্য তাকে নিয়ে গেছে ঈর্ষণীয় অবস্থানে।

২০১৯ সালের ১৬ মে হাবিবুর রহমান ঢাকা রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) হিসেবে দায়িত্ব পান। তার আগে তিনি পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (প্রশাসন) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। গেল বছরের ১০ অক্টোবর তিনি অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতি পান এবং ট্যুরিস্ট পুলিশ প্রধানের দায়িত্ব নেন।

(ঢাকাটাইমস/২০ফেব্রুয়ারি/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

প্রশাসন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

প্রশাসন এর সর্বশেষ

জিএমপির এডিসি খায়রুল আলমের রাজশাহীতে বদলির আদেশ বহাল, ২১ এপ্রিলের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে

নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‌্যাব মুখপাত্র মঈন

চাকরি হারালেন এসপি শাহেদ ফেরদৌস, করেছিলেন যে অপরাধ

নির্দিষ্ট সময়ে উদীচীর অনুষ্ঠান শেষ না করা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রশ্নবিদ্ধ করা অনভিপ্রেত: ডিএমপি

পিআইবির পরিচালক হলেন কে এম শাখাওয়াত মুন

ডিএমপির দুই কর্মকর্তাকে বদলি

জীবন বীমায় নতুন এমডি, পরিচয় নিবন্ধনে নতুন ডিজি ও মহিলা সংস্থায় ইডি নিয়োগ

ঈদে মোটরসাইকেল নিয়ে ছুটিতে যেতে পারবেন না পুলিশ সদস্যরা

পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের নতুন চেয়ারম্যান আমিন উল আহসান

তিন যুগ্মসচিব নতুন দায়িত্বে

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :