বুবলী অবৈধ সম্পর্কে ছিলেন, দাবি শাকিব খানের! চাইলেন ডিভোর্স না হওয়ার প্রমাণ

শাকিব খান বলছেন, সব শেষ হয়ে গেছে। বুবলী দাবি করছেন, তাদের ডিভোর্স এখনো হয়নি। রোজার ঈদের পরও তারা একসঙ্গে থেকেছেন, সময় কাটিয়েছেন। প্রাক্তন স্ত্রীর এমন দাবির বিপক্ষে এবার প্রমাণ চাইলেন শাকিব খান। তুললেন অবৈধ সম্পর্কের অভিযোগও।

বুবলীর দাবির বিষয়ে সম্প্রতি দেয়া এক সাক্ষাৎকারে শাকিব খান বললেন, ‘আমি কিছু বলতে চাই না। সে (বুবলী) যখন বলছে আমাদের মধ্যে এখনো সম্পর্ক রয়েছে, তাহলে সে-ই প্রমাণ দিক। সে তো শিক্ষিত মেয়ে। তার কাছ থেকে তো মিথ্যা বলার মতো বোকামি কেউ আশা করবে না।’

বুবলীর নানাজনের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক ছিল দাবি করে শাকিব খান বলেন, ‘সে আমাকে ইমোশনালি ব্ল্যাকমেল করে সম্পর্ক, সন্তান, অর্থবিত্ত, নাম সবই করেছে। আমিও তাকে অন্ধ বিশ্বাস করেছিলাম। কিন্তু শেহজাদকে জন্ম দেয়ার পর আমেরিকা থেকে দেশে এসে সে নানা স্ক্যান্ডালে জড়িয়ে পড়ল। নানা জনের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুলল। যা মিডিয়াসহ সবাই জানে।’

কিং খানের প্রশ্ন, ‘বুবলী সাড়ে তিন কোটি টাকার ফ্ল্যাট এবং ৫৬ লাখ টাকার গাড়ির মালিক হলো। হঠাৎ করে এমন বিত্ত-বৈভবের মালিক হওয়া কীভাবে সম্ভব?’ অভিনেতার আরও প্রশ্ন, ‘কেউ যদি বিনা কারণে বিশ্বাসভঙ্গ করে বা বিশ্বাসঘাতকতা করে, তাহলে তার সঙ্গে সম্পর্ক কীভাবে কনটিনিউ করা যায় আপনারাই বলুন।’

শাকিব খানের দাবি, বুবলী নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য তাকে সাইনবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করেছেন, এখনো করছেন। নায়ক বলেন, ‘এখনো সে নিজেকে আমার স্ত্রী পরিচয় দিয়ে নিজের স্বার্থ উদ্ধারের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সে আমার স্ত্রী নয়। এ কথা আমি আগেও বলেছি, এখনো বলছি।’

২০১৮ সালে গোপনে বিয়ে করেন শাকিব খান ও বুবলী। ২০২০ সালে আমেরিকায় জন্ম হয় সন্তান শেহজাদ খান বীরের। গত বছরের সেপ্টেম্বরে এসব কথা প্রকাশ করেন বুবলী। এরপর থেকে একাধিক সাক্ষাৎকারে শাকিব খান জানিয়েছেন, বুবলীর সঙ্গে তার বর্তমানে কোনো সম্পর্ক নেই। তাদের ডিভোর্স হয়ে গেছে।

কয়েক দিন আগেও কিং খান স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বুবলী তার জীবনে অতীত, তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। এও জানান, বুবলীর সঙ্গে তিনি আর কোনো সিনেমাতেও একসঙ্গে কাজ করবেন না।

এর বিপরীতে বুবলী ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে দাবি করেন, তার আর শাকিব খানের এখনো ডিভোর্স হয়নি। তিনি এখনো শাকিব খানের স্ত্রী। বুবলী এমন দাবিও করেন, সন্তান বীরকে ছাড়াই তিনি এবং শাকিব খান ঈদের পরও একসঙ্গে থেকেছেন, সময় কাটিয়েছেন।

এমন দাবির বিপরীতেই এবার বুবলীর কাছে প্রমাণ চাইলেন তার প্রাক্তন স্বামী তথা এক ডজন সিনেমার নায়ক শাকিব খান। বুবলী প্রস্তুত তো প্রমাণ দেয়ার জন্য?

২০১৬ সালে শাকিব খানের বিপরীতেই চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়েছিল একসময়ের সংবাদ পাঠিকা শবনম বুবলীর। সে বছর বসগিরি ছবিটিতে একসঙ্গে কাজ করেন এ জুটি। এরপর ধারাবাহিক এক ডজন ছবিতে বুবলী শুধু শাকিব খানের বিপরীতেই কাজ করেছেন। তাদের সবশেষ ছবি ‘লিডার: আমিই বাংলাদেশ’ মুক্তি পেয়েছে গেল রোজার ঈদে।

একসঙ্গে কাজ করতে গিয়েই বিবাহিত শাকিব খানের প্রেমে পড়েন বুবলী। যদিও এই নায়িকার দাবি, তিনি জানতেন না যে, শাকিব খান বিবাহিত, চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস তার স্ত্রী। ২০০৮ সালে অপুকেও গোপনে বিয়ে করেছিলেন শাকিব খান। সন্তান আব্রাহাম খান জয়ের জন্মও হয়েছিল গোপনে।

এসব গোপন বিষয় সামনে চলে আসে ২০১৭ সালের এপ্রিলে। একটি টিভি চ্যানেল গিয়ে সব ফাঁস করেন অপু বিশ্বাস। কারণ, সে সময় শাকিব খানের সঙ্গে বুবলীর প্রেমের গুঞ্জন চরমে। সে কারণেই সন্তান নিয়ে তড়িঘড়ি সামনে আসেন অপু বিশ্বাস। কিন্তু ফল ভালো হয়নি। বিয়ে ও সন্তানের খবর প্রকাশের কয়েক মাস পরই অপুকে তালাক দেন শাকিব।

বুবলীর দাবি, কিং খানের স্ত্রী-সন্তানের কথা কিছুই জানতেন না তিনি। প্রাক্তন স্ত্রীর এই দাবির বিষয়ে শাকিব খান বলছেন, ‘সবাই জানে আমার ও অপুর বিয়ের কথা, অথচ সে জানে না, এটি চরম মিথ্যা ছাড়া আর কি হতে পারে। এ নিয়ে তখন তো অপু তাকে গালাগালও করেছে। একজন লোকের বউ থাকার পর কি সে আরেকটি বিয়ে করতে পারে।’

ঈদে বুবলীর সঙ্গে সময় কাটানো প্রসঙ্গে শাকিব খান বলেন, ‘ঈদের দিন সে এসেছে। ঈদে কেউ আসলে তো আর বের করে দেয়া যায় না। স্বাভাবিকভাবেই একসঙ্গে বাসার সবাই বসে খেয়েছি। তারপর শেহজাদকে নিয়ে গাড়িতে করে যখন বেড়াতে বের হচ্ছিলাম তখন বুবলীও গাড়িতে উঠে পড়ে এবং পেছনের সিটে বসে থাকে। তার রান্না করা বা তার হাতের কোনো খাবারই আমি খাইনি। আসলে সেদিন ঈদের সুযোগ নিয়ে সে আমার বাসায় এসেছিল। মিথ্যা বলে আবার আমাকে সাইনবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করে নিজের স্বার্থ উদ্ধার করার জন্য এবং পরে সে ফেসবুকে মিথ্যা স্ট্যাটাস দিয়ে তাই করার চেষ্টা করেছে।’

বুবলীর উদ্দেশে শাকিব বলেন, ‘আমি তাকে বলব সে যেন এই নতুন স্ট্যাটাসের নাটক বন্ধ করে। সে বলেছে আমার বিরুদ্ধে নাকি মুখ খুলবে। আমি তাকে ওপেন চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, সে যেন মুখ খোলে। আমি তো সন্তানের স্বার্থে মুখ বন্ধ করে তার দেয়া সব মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করে আসছি। বেশি বাড়াবাড়ি করলে আর মুখ বুঝে থাকব না।’

হুঁশিয়ারি দিয়ে কিং খান বলেন, ‘সে ও তার পরিবার আমার ওপর যা ঘটিয়েছে সব খুলে বলতে যেন বাধ্য না করে। সন্তানের ভালোর দিকে তাকিয়ে সে যেন সব নোংরামি বন্ধ করে। আমার জীবদ্দশায় আমি তার ছায়াও আর দেখতে চাই না। আমার ধারেকাছে আসা এবং আমার বাসায় প্রবেশের কোনো অধিকার তার নেই। তার আর কোনো নাটক আমি দেখতে চাই না।’

(ঢাকাটাইমস/১৪মে/এলএম/এজে)