যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যার পর পলাতক স্বামী গ্রেপ্তার

জয়পুরহাট প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০১ জুন ২০২৩, ১২:৩৯ | প্রকাশিত : ০১ জুন ২০২৩, ১২:২৫

জয়পুরহাটে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার পলাতক আসামি স্বামী আব্দুস ছাত্তারকে দুই মাস পর গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার দিবাগত রাতে বগুড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে জয়পুরহাট সদর থানা পুলিশ।

বৃহস্পতিবার সকালে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম।

গ্রেপ্তার হওয়া আব্দুস ছাত্তার (৪০) জয়পুরহাট সদর উপজেলার দাদড়া মধ্যেপাড়া গ্রামের মনির উদ্দীনের ছেলে।

গত (২৬ মার্চ) আব্দুস ছাত্তারের প্রথম স্ত্রী মিতু পারভিনের নিজ বাড়ি থেকে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এঘটনায় ওইদিনই আব্দুস ছাত্তারকে আসামী করে তার শ্বশুর আব্দুল মালেক বাদী হয়ে জয়পুরহাট সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার এজাহার উল্লেখ করা হয়, প্রায় দেড় যুগ আগে আব্দুস ছাত্তারের সঙ্গে একই গ্রামের মিতু পারভিনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর মিতু পারভিন দুই ছেলে ও মেয়ে সন্তান জম্ম দেন। এরপর আব্দুস ছাত্তার তাঁর স্ত্রীকে বাপের বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা আনতে চাপ দিচ্ছিলেন। যৌতুকে টাকা না পেয়ে আব্দুস ছাত্তার তার স্ত্রী মিতু পারভিনকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিলেন। মিতু পারভিন তার তিন সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে স্বামীর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন মুখ বুঝে সহ্য করছিলেন। তিন বছর আগে আব্দুস ছাত্তার একই উপজেলার কোমড়গ্রামের শহিদা বেগমকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর থেকেই আব্দুস ছাত্তার তার প্রথম স্ত্রী মিতু পারভিনেরর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়ান। গত কয়েক দিন আগে আব্দুস ছাত্তার একটি ইজিবাইক কেনার জন্য তার স্ত্রী মিতু পারভিনের কাছে যৌতুকের টাকা দাবি করেন। মিতু পারভিন বাপের বাড়ি থেকে আর যৌতুকের টাকা আনতে পারবেন বলে তাঁর স্বামীকে সাফ জানিয়ে দেন। গত ২৬ মার্চ সকালে আব্দুস ছাত্তার তার স্ত্রী মিতু পারভিনকে আবারও তাঁর বাপের বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা আনত বলেন। এতে মিতু পারভিন তার বাপের যৌতুকের টাকা আনতে অস্বীকার করেন। তখন আব্দুস ছাত্তার তার স্ত্রীকে প্রচণ্ড মারধর করেন। এতে মিতু পারভিন অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর মিতুর বাবাকে খবর দেওয়া হয়। মিতুর বাবা জামাইয়ের বাড়িতে এসে তার মেয়ে ঝুলন্ত মরদেহ দেখে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ কল করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মিতু পারভিনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাল মর্গে পাঠায়। এঘটনায় নিহত মিতু পারভিনের বাবা বাদী হয়ে তার জামাইয়ের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

নিহত মিতু পারভিনের বাবা আব্দুল মালেক বলেন, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে জামাই আমার মেয়েকে মারপিট করতেন। যৌতুকের টাকা আনতে প্রচণ্ড চাপ দিচ্ছিল। এতে আমার মেয়েকে রাজি হয়নি। এ কারণে জামাই আমার মেয়েকে পিটিয়ে হত্যার পর ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে ছিল। আসামী গ্রেপ্তার হওয়ায় স্বস্তি লাগছে।

জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম বলেন, যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় স্বামী আব্দুস ছাত্তারকে বুধবার দিবাগত রাতে বগুড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১জুন/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :