কেন্দুয়ায় গরমে কদর বেড়েছে হাতপাখার

আশরাফ গোলাপ, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা)
 | প্রকাশিত : ০৮ জুন ২০২৩, ১৩:৪৪

হাতপাখা তৈরি ও ব্যবহারের ইতিহাস বহু প্রাচীন। হাতপাখার প্রচলন ছিল আজ থেকে প্রায় তিন হাজার বছর আগে গ্রিক-রোমান যুগেও। বৈদ্যুতিক পাখার যুগে অনেকটা হারিয়েই যেতে বসেছে হাতপাখা। তবে দেশে বর্তমানে অসহনীয় লোডশেডিংয়ে হাতপাখার কদর বেড়েছে। লোডশেডিংয়ের ভয়াবহতা ও তীব্র গরমে মানুষের ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে শোভা পাচ্ছে হাতপাখা। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর হাতপাখা নাড়িয়ে কিছুটা প্রশান্তি খুঁজছেন গ্রামাঞ্চলের মানুষ।

সারাদেশের ন্যায় নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। টানা কয়েকদিনের প্রচণ্ড গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন। হাঁস-ফাঁস অবস্থা খেটে খাওয়া মানুষদের। হাট বাজার ও বিপনি বিতানে আসা মানুষদের কাছে কদর বেড়েছে হাতপাখার। তাছাড়া লোডশেডিংয়ে সাধারণ মানুষের ভরসা হাতপাখায়।

কেন্দুয়া শহরের সাজিউড়া মোড়ে কথা হয় ভ্রাম্যমাণ হাতপাখা বিক্রেতা বাদল মিয়ার সঙ্গে।

এ বিক্রেতা জানান, গরম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাতপাখার চাহিদা শুরু হয়। তবে গরম বেশি পড়ায় গত এক সপ্তাহ ধরে শহরে হাতপাখার কদর বেড়েছে। আকার ও মান বেঁদে বাঁশের তৈরি এসব পাখা ৪০ টাকা থেকে থেকে ৫০ পিস পাখা বিক্রি হচ্ছে।

শহরের সাউদপাড়া মোড়ে কথা হয় হাতপাখা বিক্রেতা বকুল মিয়ার সঙ্গে।

তিনি বাইরে থেকে এসব বাঁশের তৈরি পাখা কিনে এনেছেন। আর কাপড় ও সূতার তৈরি পাখাগুলো ময়মনসিংহ জেলা থেকে কিনেছেন।

তিনি ঘুরে ঘুরে শহরের কলেজমোড়, বাসস্ট্যন্ড ও কেন্দুয়া বাজারে বিক্রি করছেন এসব পাখা। প্রতিদিন ৩৫ থেকে ৪০টি পাখা বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাইকারিতে পাখার দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে যেখানে বাঁশের হাতল দিয়ে তৈরি প্রতি পিস হাতপাখার দাম পড়তো ৯ থেকে ১০ টাকা। এখন সেই হাতপাখা পাইকারি প্রতি পিস ১৫ থেকে ১৬ টাকায় কিনতে হচ্ছে।

এসব ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারা আক্ষেপ করে জানান, প্লাস্টিকের বানানো পাখা ও বিভিন্ন বাহারি ডিজাইনের রেডিমেড পাখা তাদের ব্যবসায় ঢল ফেলেছে।

তারা আরও জানান, এ বছর গরমের শুরুতেও হাতপাখার চাহিদা এত ছিল না। হঠাৎ করে গরম বেশি পড়ায় এবং শহরে পোশাক কিনতে আসা মানুষদের কাছে বেশি বিক্রি হচ্ছে এসব পাখা।

কথা হয় শহরে দিগদাইর মোড়ে হাতপাখা কিনতে আসা ছবি আক্তারের সঙ্গে।

তিনি জানান, একেতো প্রচণ্ড গরম, সেইসঙ্গে ঘন ঘন লোডশেডিং। পোশাক দেখার আগেই শরীর গরমে ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছে। তাই আমি বাসার জন্য আজ চারটা হাতপাখা নিয়ে নিলাম।

এদিকে শিক্ষক খাইরুল ইসলাম জানান, দিন দিন হাত পাখার কারিগররা এ পেশা থেকে অনেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। একসময় বিপুল সংখ্যক লোক এ পেশার সাথে জড়িত থাকলেও প্লাস্টিক ও রেডিমেড পণ্যের সাথে তাল না মেলাতে পেরে পেশা পরিবর্তন করছে।

সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে বাঁশের তৈরি ক্ষুদ্র শিল্পকে টিকিয়ে রাখার প্রত্যাশা করছি।

(ঢাকাটাইমস/০৮জুন/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :