সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য জীববৈচিত্র্য রক্ষার বিকল্প নাই: পরিবেশমন্ত্রী

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ২৫ শতাংশ ভূমি বৃক্ষাচ্ছাদনের আওতায় আনার লক্ষ্যে দেশব্যাপী ব্যাপকভাবে গাছ লাগানো হচ্ছে। মানুষের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য বন সৃষ্টি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার কোনো বিকল্প নাই। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও ইকোটুরিজম উন্নয়নে দৃঢ় প্রতিজ্ঞবদ্ধ হয়ে কাজ করছে।
শনিবার নওগাঁ জেলার ধামইরহাট উপজেলার আলতাদীঘি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে আলতাদীঘি জাতীয় উদ্যানের দীঘি পুনঃখনন কাজের উদ্বোধন এবং দ্বিতল ডরমেটরি ভবন, স্যুভেনিরশপ এবং আরসিসি অবজারভেশন টাওয়ারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে এসব কথা বলেন তিনি। এছাড়া মন্ত্রী সামাজিক বনায়নের উপকারভোগীদের মাঝে চেক প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, ২০১৯ সালে আলতা দীঘি জাতীয় উদ্যান পরিদর্শনে এসে জানতে পারি বন বিভাগের অফিসগুলোর জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে এবং উদ্যানের গাছপালার ঘনত্ব কম, দীঘিতে পানি নেই, শাপলা কচুরীপানায় ভরা। তখনই মনস্থির করি এগুলোর উন্নয়ন করবো। তারই আলোকে আলতাদীঘি জাতীয় উদ্যানে দুটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।
‘‘আলতাদীঘি পুনঃখননের মাধ্যমে আলতাদীঘি জাতীয় উদ্যানের জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ প্রকল্প’’-এর অধীনে দীঘিটি খনন করে গভীরতা বৃদ্ধি, পানি সংরক্ষণ করে দেশি ও অতিথি পাখির আবাসস্থল তৈরির ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং দর্শনার্থীদের চলাচল সুবিধার জন্য পাড় বাঁধা ও সৌন্দর্য্যবর্ধক গাছ রোপণ করা হবে, যাকে ঘিরে এ অঞ্চলের প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসবে এবং নিয়মিতভাবে দেশি বিদেশি পর্যটকদের আগমণ বাড়বে।’, বলেন মন্ত্রী।
শাহাব উদ্দিন বলেন,‘‘সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে রাজশাহী বরেন্দ্র অঞ্চলের পরিবেশ সুরক্ষা প্রকল্পের’’ আওতায় আলতাদীঘি জাতীয় উদ্যানের নিরাপত্তায় থাকা কর্মীদের জন্য ডরমেটরী ভবন, দর্শনার্থীদের জন্য স্যুভেনীর শপ ও ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর কিছুক্ষণ আগে স্থাপন করলাম।
এছাড়াও বনের সৌন্দর্য্য উপভোগের জন্য রাস্তা নির্মাণসহ আরও অনেক উন্নয়নমূলক কার্যক্রম ক্রমান্বয়ে এ প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়িত হবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা লাগিয়ে জাতীয় উদ্যানে বনায়ন করে জীববৈচিত্র্য বৃদ্ধির কাজ চলমান রয়েছে। কাজগুলো বাস্তবায়নের অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আলতাদীঘি জাতীয় উদ্যান হবে একটি ইকো ট্যুরিজম এলাকা বা পরিবেশ বান্ধব পর্যটন কেন্দ্র। ফলে এটি একটি আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে বিবেচিত হবে এবং স্থানীয় জনগণের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নওগাঁ-২ আসনের সংসদ সদস্য ও আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো: শহিদুজ্জামান সরকার; নওগাঁ-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. ছলিম উদ্দিন তরফদার, বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী; বগুড়া সামাজিক বন অঞ্চলের বন সংরক্ষক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম; ধামইরহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আজাহার আলী প্রমুখ। সভায় সভাপতিত্ব করেন নওগাঁর জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিল্টন চন্দ্র রায়।
অনুষ্ঠানে সামাজিক বনায়নে উপকারভোগী ১৩৫ জন সদস্যের মাঝে এক কোটি ৫৫ লাখ ২১ হাজার ৫১১ টাকা বিতরণ করা হয়। এর আগে অন্য এক অনুষ্ঠানে নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলার বন বিভাগের পাইকবান্দা রেঞ্জ কার্যালয়ের রেস্ট হাউস কাম অফিস ভবন নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন পরিবেশমন্ত্রী।
(ঢাকাটাইমস/১৭জুন/জেএ/কেএম)

মন্তব্য করুন