অসুস্থ বৃদ্ধা মাকে যাত্রী ছাউনিতে ফেলে গেল ছেলেরা

মনিরুজ্জামান, রাজবাড়ী
 | প্রকাশিত : ২৫ জুন ২০২৩, ১৭:৪৩

হারিছা বেগম। বয়স ৮৫। বয়সের ভারে চলতে পারেন না, ঠিকমতো কথাও বলতে পারেন না। রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির ওয়াপদা মোড়ের যাত্রী ছাউনিতে গত শুক্রবার সারাদিন পড়ে ছিলেন তিনি। কোনোমতে নিজের নাম এবং স্বামী আর দুই সন্তানের নাম বলতে পেরেছেন। তিনি বলছিলেন, দুই ছেলে তাঁকে এখানে ফেলে রেখে চলে গেছে।

হারিছার ঠিকানা এখন রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। তিনি জানান, তার বাড়ি ফরিদপুরে। স্বামীর নাম মৃত আরব আলী। আর দুই সন্তানের নাম বলেছেন আব্দুল হোসেন ও আলমগীর হোসেন।

বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে যাওয়া এই বৃদ্ধার চোখের দৃষ্টিও অস্পষ্ট। তার কাছে যে যাচ্ছেন তাকেই কাঁদতে কাঁদতে জানাচ্ছেন তার ছেলেরা তাকে যাত্রী ছাউনিতে ফেলে রেখে গেছেন।

জানা যায়, বালিয়াকান্দি ওয়াপদার মোড়ের যাত্রী ছাউনিতে শুক্রবার ভোরে স্থানীয়রা বৃদ্ধা হারিছা বেগমকে দেখতে পান। সারাদিন ওই বৃদ্ধা ওখানেই পড়েছিলেন। স্থানীয়রা তাকে দুপুরের খাবারও খেতে দেন। সন্ধ্যা হওয়ার পরও যখন তিনি যাত্রী ছাউনিতে রয়ে যান তখন গণমাধ্যমকর্মীদের খবর দেন তারা। পরে স্থানীয় সাংবাদিকরা হারিছার সঙ্গে কথা বলেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার সন্ধান চেয়ে পোস্ট দেন।

বৃদ্ধার নিরাপত্তার কথা ভেবে ওই রাতেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তারা। শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ থাকায় ইউএনও তাৎক্ষণিকভাবে বৃদ্ধাকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। ঠিকানা বলতে না পারার কারণে বর্তমান হারিছা বেগম হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

স্থানীয় সাংবাদিক সোহেল মিয়া বলেন, বৃদ্ধা বারবার বলছেন তার দুই ছেলে তাকে এখানে ফেলে রেখে গেছে। ফরিদপুর ছাড়া আর কোনো জায়গার নাম বলতে পারছেন না তিনি। ঠিকানা বলতে না পারায় তার স্বজনদের সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি।

বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম বলেন, হারিছা বেগমের বয়স অনেক বেশি। সারাদিন যাত্রী ছাউনিতে পড়েছিলেন তিনি। স্থানীয়রা তাকে যতটুকু খেতে দিয়েছে তাই খেয়েছেন। তার শরীর বেশ দুর্বল। সুস্থতার জন্য তাকে রাতেই চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। তার স্বজনদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। বৃদ্ধা হারিছার নিয়মিত খোঁজ রাখা এবং আপডেট তথ্য দেওয়ার জন্য সমাজসেবা কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করেছি।

(ঢাকাটাইমস/২৫জুন/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :