রেললাইনের ওপর ডিশলাইনের তার, চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে যুবকের মৃত্যু
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে রেললাইনের উপর ডিশলাইনের তার গলায় বেঁধে চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে সজিব হোসেন (২০) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তিনজন আহত হয়েছেন।
সোমবার রাত ১২টার দিকে বঙ্গবন্ধু রেললাইনের মির্জাপুর রেলস্টেশনের পূর্ব গেট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত সজিব হোসেন নওগাঁ জেলার রাইজুর গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে। এছাড়া আহত রিমন হোসেন (২৬) একই জেলার বদরগাছী উপজেলার এনামুল হকের ছেলে। আহত অপর দুই যাত্রীর পরিচয় মেলেনি।
জানা গেছে, আহত রিমন হোসেনকে স্থানীয় কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার হাত ও পা ভেঙে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। এছাড়া আহত আরও দুজনকে টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মির্জাপুর রেল স্টেশনের পূর্ব গেইটের গেইটম্যান শান্ত ইসলাম ঢাকা টাইমসকে জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনটি রাত ১২টা পাঁচ মিনিটে মির্জাপুর স্টেশন অতিক্রম করে। এর আধ ঘণ্টা পর গেটে রক্তাক্ত আহত যুবক তার গেট রুমে এসে জানান ওই ট্রেনের যাত্রী ছিলেন তিনি। ছাদ থেকে পড়ে আহত হয়েছেন এবং আরেকজন ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। পরে তিনি সঙ্গে সঙ্গে মির্জাপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে খবর দেন। তারা এসে আহত ওই যুবককে উদ্ধার করে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করেন।
গেইটম্যান শান্ত ইসলাম আরও জানান, সোমবার তিনি ডিশলাইন ব্যবসায়ীকে বলেছিলেন তারগুলো উঁচু করে টেনে দিতে। কিন্ত তারা তার কথা শুনেননি। এরপর রাতেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি আহত রিমন হোসেন ঢাকা টাইমসকে জানান, তিনি গাজীপুর স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক কোম্পানিতে কাজ করেন। ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার জন্য রাত সাড়ে দশটায় জয়দেবপুর স্টেশন থেকে লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনে নওগাঁর উদ্দেশে রওনা দেন। মির্জাপুর স্টেশনে পৌঁছালে তার পাশে বসা এক যাত্রীর গলায় ডিশলাইনের তার লেগে পড়ে যাওয়ার সময় বাঁচার জন্য সে তার পা ধরলে তিনিও পড়ে যান। ওই সময় আরও দুই যাত্রীর গলায় তার লেগে আহত হলেও তারা ট্রেনের ছাদ থেকে পড়েননি।
টাঙ্গাইল রেল পুলিশ ফাঁড়ির কনস্টেবল আব্দুল মালেক ঢাকা টাইমসকে জানান, খবর পেয়ে সকাল পাঁচটার দিকে মির্জাপুর এসে নিহত এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
রেললাইন সংলগ্ন স্থানীয় বাসিন্দা আইয়ুব খান জানান, রাত সাড়ে বারোটার দিকে
গেটম্যান শান্ত ইসলাম তাকে জানালে তিনি এসে ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের সহায়তায়
আহত যুবককে কুমুদিনীতে পাঠান এবং পরে নিহত যুবকের লাশ রেললাইন থেকে খুঁজে বের করেন।স্থানীয় বাসিন্দা ওয়াজ উদ্দিন সিকদার ও আইয়ুব খানসহ অন্যরা ডিশলাইন ব্যবসায়ীর অবহেলার কারণে এই দুর্ঘটনার জন্য তার শাস্তি দাবি করেন।
মির্জাপুর রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার কামরুল হাসান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ঢাকা টাইমসকে বলেন, রেল পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু সেতুতে ২৪ ঘণ্টায় ৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা টোল আদায়
বাংলাদেশ রেল পুলিশ টাঙ্গাইল ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) আলী আকবর ঢাকা টাইমসকে বলেন, আহত ও নিহতের পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/২৭জুন/এসএম)