কলাবাগানে গৃহকর্মী হত্যা

গ্রেপ্তার এড়াতে ডলি যান সাবেক স্বামীর কাছে, ধরেন হাত-পা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৫:৩৭ | প্রকাশিত : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৫:২২

রাজধানীর কলাবাগানে গৃহকর্মী হেনাকে হত্যার পর নিজের গ্রেপ্তার এড়াতে বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপনে ছিলেন অভিযুক্ত সাথী আক্তার পারভীন ডলি। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে শুক্রবার দুপুরে যশোরে সাবেক স্বামী ডা. এস হক রাহাতের চেম্বারে হাজির হন৷ নিজেকে বাঁচাতে সহায়তা চান সাবেক স্বামীর। তবে হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় কৌশলে ডলিকে পুলিশের কাছে তুলে দেন রাহাত।

এদিকে রবিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, গৃহকর্ত্রী সাথী আক্তার পারভীন ডলির শিশু বাচ্চার খাবার খেয়ে ফেলায় গৃহকর্মী হেনাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ২৪ আগস্ট এই হত্যার পর তিনটি মোবাইল ফোন ফেলে বাচ্চা নিয়ে পালিয়ে যান তিনি।

এই ঘটনায় রাজধানীর কলাবাগান থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালালেও তাকে গ্রেপ্তার করতে পারছিল না। শুক্রবার সাবেক স্বামীর কাছে সহযোগিতা চাইতে গেলে তিনি ডলিকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।

ডলির সাবেক স্বামী রাহাত ঢাকা টাইমসকে ঘটনার দিনের বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘শুক্রবার পৌনে একটার দিকে ডলি আমার চেম্বারে আসেন। আমি রোগী দেখছিলাম। আমি তো ডলিকে দেখে অবাক হয়ে যাই। আমার কাছে আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি আমার সাহায্য চান। আমি তাকে বলি আপনাকে কোনো সহযোগিতা করতে পারবো না। আপনি একজন খুনি। তখন আমি তাকে আটকে রেখে সরাসরি কলাবাগান থানার ওসিকে ফোন করি।’

‘কলাবাগান থানার ওসি আমাকে জানান ডলির বিরুদ্ধে গৃহকর্মী হত্যায় মামলা হয়েছে। তাকে (ওসি কলাবাগান) ফোন করার পর ১০ মিনিটের মধ্যে পুলিশ আমার চেম্বারে পৌঁছে যায়। পরে ডলিকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।’

সাবেক স্ত্রীকে গ্রেপ্তারে সহযোগিতার বিষয়ে রাহাত বলেন, ‘আমাদের তিন বছর আগে ডিভোর্স হয়েছে। সে সময় তার সঙ্গে আমি সমঝোতার চেষ্টা করেছিলাম। কাবিনের টাকা, বাচ্চার খরচসহ সব কিছু দিতে চেয়েছি। কিন্তু তিনি আমার বিরুদ্ধে মামলা করেন, যেটি এখনো চলছে।’

রাহাত ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমি ডলিকে পুলিশে যেন না দিই সেজন্য তিনি আমার হাত-পা ধরে বারবার অনুরোধ করেন। এমনকি পুলিশকে না জানালে আমার বিরুদ্ধে করা মামলা তুলে নেওয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু আমি তাকে বলেছি আপনি একজনকে হত্যা করেছেন। তাই আপনাকে পুলিশে দেওয়া আমার দায়িত্ব। এসময় তিনি আমার কাছে মাফ চান।’

রাহাত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ছিলেন। সাবেক স্ত্রী ডলির হয়রানির কারণে সরকারি চাকরি ছাড়তে বাধ্য হন উল্লেখ করে এই চিকিৎসক বলেন, ‘আমি সরকারি চাকরি করতাম। এই নারীর হয়রানির কারণে চাকরি ছাড়তে বাধ্য হয়েছি। এমনকি তিনি আমার বাচ্চার সঙ্গেও কোনো ধরনের যোগাযোগ করতে দিতেন না।’

খাবার খেয়ে ফেলায় হত্যা:

ডলিকে গ্রেপ্তারের পর গৃহকর্মী হত্যার বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে পুলিশ। তারা বলছে, ডলির বাচ্চার খাবার খেয়ে ফেলায় গৃহকর্মী হেনাকে মারধর করেন তিনি। এরপর শ্বাসরুদ্ধ করে মেরে ফেলেন। পরে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার এড়াতে লাশ ও তার মোবাইল ফোন বাসায় রেখে পালিয়ে যান। পালিয়ে যাওয়ার পর ডলি বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেরিয়েছেন। এসময় তিনি বিভিন্ন দোকান ও ব্যক্তির ফোন থেকে তার স্বজনদের কল করতেন।

রমনার ডিসি মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, ‘ডলি পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন, তিনি হেনাকে লাঠি আবার কখনও খুন্তি দিয়ে পিটিয়েছেন। ঘটনার দিন মেয়েটি তার বাচ্চার জন্য খাবার খেয়ে ফেলায় মারধর করেন। মেয়েটি নির্যাতনের ফলে মারা যায়।

(ঢাকাটাইমস/০৩সেপ্টেম্বর/এসএস/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজধানী এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :