‘চীনের উত্থান: উদ্বিগ্ন প্রতিবেশী’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২১:৩৮

বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ.এইচ.এম শামসুদ্দিন চৌধুরী (মানিক) রচিত ‘চীনের উত্থান: উদ্বিগ্ন প্রতিবেশী’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। বইটি প্রকাশ করেছে চারদিক পাবলিকেশন্স।

মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে তিনটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মুহম্মদ আকরম খাঁ হলে এই মোড়ক উন্মোচন ও অভিমত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সঙ্গে সৌদি আরব এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নিয়েও এমন বই লেখার জন্য বক্তারা অনুরোধ করেন।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি, লেখক ও গবেষক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবীর মূখ্য আলোচকের বক্তব্যে বলেন, ‘বইটিকে তথ্যের আকর বলতে হবে। কেউ এতটা বিশদভাবে লেখেননি যতটা তিনি লিখেছেন। বইয়ে প্রাসঙ্গিকভাবে উঠে এসেছে কীভাবে চীনের স্বাধীনতায় ভারত বিশাল অবদান রেখেছে। তখন স্লোগান ছিলো হিন্দি-চীনি ভাই ভাই। সেই সৌহার্দ্য থেকে কীভাবে সংঘাতে পৌঁছল বইয়ে সে বিষয়ে আলোচনা রয়েছে। এখন চীন ও ভারতের সম্পর্কের অবনতি হচ্ছে। এদিকে নিজস্ব ভূরাজনৈতিক স্বার্থের বাইরে চীন কাউকে সাহায্য করেনি। তাই চীন-ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব আমাদের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে কিনা সে বিষয়ে ভাবতে হবে।’ এছাড়াও বইটিতে কয়েকটি তথ্যগত ত্রুটির বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে পরবর্তী সংস্করণে সংশোধনেরও অনুরোধ জানান তিনি।

বইয়ের লেখক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ.এইচ.এম শামসুদ্দিন চৌধুরী (মানিক) বলেন, ‘আমার এই বইয়ে ভারতের একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন গবেষকের বিষয়ে উল্লেখ আছে, যিনি চীনের ঋণ সম্পর্কে বিশদভাবে আলোচনা করেছেন। শ্রীলঙ্কা যেভাবে সর্বস্বান্ত হয়েছে এবং পাকিস্তান যেভাবে সর্বস্বান্ত হওয়ার পথে, এমনকি পৃথিবীর আরও অনেক দেশের বিষয়েও আলোচনা রয়েছে। অর্থাৎ চীন যেখানেই টাকা দেয় সেখানে জমি দখল করে কিংবা সেখানের সম্পদ দখল করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তাই চীনের ঋণসহ সকল সম্পর্কের বিষয়ে সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে যা এই বইয়ে উল্লেখ করেছি।

এছাড়াও এই বইয়ের প্রথম সংস্করণে ভুল থাকলে ভবিষ্যতে পরবর্তী সংস্করণে সেটি সংশোধন করা হবে বলেও জানান তিনি।

সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার এবং গণহত্যা জাদুঘর প্রধান ট্রাস্টি অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘আমরা চীনের প্রতি এত ক্ষিপ্ত। কিন্তু আমেরিকার প্রতি এত ক্ষিপ্ত নই কেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে আমেরিকা আরও বেশি অস্ত্র সরবরাহ করেছে। মহাশক্তি হিসেবে আমেরিকা এবং সৌদি আরবও রয়েছে। তারাও অনেক পরে দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু তাদের প্রতি আমাদের নমনীয় দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। এর কারণ এ অঞ্চলের মানুষ সমাজতন্ত্র কিংবা ধর্মনিরপেক্ষতা খুব বেশি গ্রহণ করতে পারিনি। এদিকে চীনকে ভয় পাওয়ার কারণ হলো তাদের অর্থনৈতিক আগ্রাসী মনোভাবের জন্য। আমেরিকা এ বিষয়ে নমনীয় হলেও চীন কখনোই নমনীয় হয়নি। মূলকথা হলো যে রাষ্ট্রই বড় হবে সেই রাষ্ট্রই আধিপত্য বিস্তার করবে। তাই শুধু একদিক ভেবে নয় বরং আমাদের স্বার্থ বিবেচনা করে চলতে হবে। আমেরিকা কিংবা চীন সবার সঙ্গেই বন্ধুত্ব রক্ষা করতে হবে।’

বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী বইটি লিখে সাহসের পরিচয় দিয়েছেন মন্তব্য করে বইটি সবার পড়ার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্যে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মোহাম্মাদ আলী শিকদার বলেন, ‘আমরা চীনকে উপেক্ষা করতে পারব না। তাই তাদের জানতে হবে।’

দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, ‘চীনকে কোন লেন্স থেকে দেখবেন সেটা খুব প্রয়োজন। চীনকে একাত্তরের লেন্সে দেখবেন নাকি পঁচাত্তর পরবর্তী লেন্সে দেখবেন নাকি আজকের বাস্তবতায় দেখবেন- এই বিষয়গুলোর একটি তাত্ত্বিক আলোচনা খুব জরুরি। বইটিতে বিভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে। এসময় উদ্বিগ্ন প্রতিবেশি হিসেবে চীনের বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্যও বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন চারদিক পাবলিকেশন্স সত্ত্বাধিকারী মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম (বোয়াফ) এর সভাপতি কবীর চৌধুরী তন্ময় প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/০৫সেপ্টেম্বর/টিএ/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :