বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন

রুদ্র রাসেল, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:১০ | প্রকাশিত : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০৫

পাসপোর্ট-বোর্ডিং পাসবিহীন ১০ বছর বয়সী এক শিশু কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে উঠে পড়ার ঘটনা নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তোলপাড় চলছে। প্রত্যাহার করা হয়েছে বিমানবন্দরের ১০জন কর্মকর্তাকে। গঠন করা হয়েছে ৫ সদস্যের ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি। তবে বহুস্তরের নিরাপত্তা ভেদ করে শিশুটি বিমানে উঠে আসনে বসায় প্রশ্ন উঠেছে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে।

এভাবে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে উঠে পড়ার মতো নজিরবিহীন এ ঘটনাকে মোটেই স্বাভাবিক দেখছেন না বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান। তিনি এ ঘটনাকে নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি মনে করছেন। ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের কঠোর শাস্তি দেওয়ার কথা জানান তিনি।

এ ঘটনায় কুয়েত এয়ারওয়েজকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান বেবিচক চেয়ারম্যান।

বিমানবন্দর সূত্র জানায়, ১২ সেপ্টেম্বর রাত ৩টা ১০ মিনিটে ঢাকা থেকে কুয়েতগামী কুয়েত এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে (কেইউ-২৮৪) যাত্রীরা উঠেছেন। চলছে উড্ডয়নের প্রস্তুতি। ১০ বছর বয়সী একটি শিশু এই ফ্লাইটে দাঁড়িয়ে থাকলে কেবিন ক্রুরা তাকে বসতে বলেন। পরবর্তীতে এই শিশুটি ফ্লাইটে একটি সিটে বসে পড়ে। তবে সেই সিটের যাত্রী আসলে কেবিন ক্রুরা তার সঙ্গে কেউ আছে কি না জানতে চায়। তার বোর্ডিং কার্ড, পাসপোর্ট দেখতে চায়। তবে শিশুটি ছিল নিরব। পরবর্তীতে প্যাসেঞ্জার লিস্ট চেক করে দেখা যায়, নির্ধারিত যাত্রীর চেয়ে শিশুটি অতিরিক্ত। পরবর্তীতে শিশুটিকে ফ্লাইট থেকে নামিয়ে কেবিন ক্রুরা তাকে বিমানবন্দরের এভিয়েশন সিকিউরিটির (এভসেক) কাছে হস্তান্তর করেন। পরে তাকে বিমানবন্দর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে এভসেক।

বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, এ ঘটনাকে আমরা হালকাভাবে নিচ্ছি না। এখানে যেই দায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ১০ জনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঘটনা যেভাবে

কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ১০ বছর বয়সী একটি শিশু বসে আছে। একই সিটে বসতে অন্য যাত্রী এলে ধরা পড়ে শিশুটির সঙ্গে নেই কোনো বোর্ডিং কার্ড, পাসপোর্ট। তাহলে এই শিশুটি বিমানবন্দরের কয়েক ধাপের নিরাপত্তা তল্লাশি শেষে কীভাবে ফ্লাইটে উঠলো? নিরাপত্তা তল্লাশির দায়িত্বে থাকা বিভিন্ন সংস্থার কর্মীরা তখন কী করছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, এ ঘটনা গুরুত্ব দিয়ে অনুসন্ধান করা হচ্ছে, সেই সময়ে দায়িত্বে থাকা কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিমানবন্দর সূত্র জানায়, ১১ সেপ্টেম্বর দিনগত রাত ৩টা ১০ মিনিটে ঢাকা থেকে কুয়েতগামী কুয়েত এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে (কেইউ-২৮৪) যাত্রীরা উঠেছেন, চলছে উড্ডয়নের প্রস্তুতি। ১০ বছর বয়সী একটি শিশু এই ফ্লাইটে দাঁড়িয়ে থাকলে কেবিন ক্রুরা তাকে বসতে বলেন। পরবর্তীতে এই শিশুটি ফ্লাইটে একটি সিটে বসে পড়ে। তবে সেই সিটের যাত্রী এলে কেবিন ক্রুরা তার সঙ্গে কেউ আছে কি না জানতে চায়, তার বোর্ডিং কার্ড, পাসপোর্ট দেখতে চায়। তবে শিশুটি ছিল নীরব। পরবর্তীতে প্যাসেঞ্জার লিস্ট চেক করে দেখা যায়, নির্ধারিত যাত্রীর মধ্যে শিশুটি নেই। পরবর্তীতে ফ্লাইট থেকে নামিয়ে কেবিন ক্রুরা শিশুটিকে বিমানবন্দরের এভিয়েশন সিকিউরিটির (এভসেক) কাছে হস্তান্তর করেন।

যেভাবে জানা গেল

পাশের সিটের ওই যাত্রী বিষয়টি কেবিন ক্রুর নজরে আনলে তারা তাকে বাবা-মার বিষয়ে জিজ্ঞেস করে। তবে শিশুটি উত্তর দিতে পারেনি। একপর্যায়ে কেবিন ক্রুরা হেড কাউন্ট করেন (যাত্রী সংখ্যা গণনা করা)। তখন একজন যাত্রী বেশি পাওয়া যায়। প্লেনের দরজা খুলে শিশুটিকে বিমানবন্দরের এভিয়েশন সিকিউরিটির (এভসেক) কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে শিশুটি সঠিক উত্তর দিতে না পারায় তাকে বিমানবন্দর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে এভসেক।

বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা জানান, এ ঘটনার পর বিমানবন্দরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা হয়েছে। শিশুটি বিমানবন্দরে বিভিন্ন যাত্রীর গা ঘেঁষে অবস্থান করছিল, যাতে মনে হচ্ছিলো সে তাদের সঙ্গে। এভাবে সে বিমানবন্দরের গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে। পরবর্তীতে হজযাত্রীদের একটি গ্রুপের সঙ্গে থেকে সে ফ্লাইটে উঠে পড়ে।

চেক ইন শেষ করে বোর্ডিং কার্ড নিয়ে যাত্রীরা ইমিগ্রেশনে প্রবেশ করেন। এই শিশুটি কীভাবে পাসপোর্ট, বোর্ডিং কার্ড ছাড়া ইমিগ্রেশন পার হলো? প্লেনে উঠার আগে এয়ারলাইনের কর্মীরা পাসপোর্ট বোর্ডিং পাস চেক করে যাত্রীদের ওয়েটিং লাউঞ্জে প্রবেশ করতে দেন। পরবর্তীতে এভসেক সদস্যরা যাত্রীদের তল্লাশি করে ফ্লাইটে উঠতে দেন। এতোগুলো তল্লাশি এড়িয়ে কীভাবে শিশুটি ফ্লাইটে উঠলো, এ বিষয়ে তদন্ত করছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। সেই সময়ে দায়িত্বে যারা ছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বলেন, নিরাপত্তা তল্লাশি এড়িয়ে কীভাবে শিশুটি ফ্লাইটে গেলো তা খতিয়ে দেখা যাচ্ছে। দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৪সেপ্টেম্বর/আরআর/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে মিয়ানমারের বিদায়ী রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাত

উপজেলা নির্বাচন: প্রথম ধাপের চেয়েও দ্বিতীয় ধাপে ভোট সুষ্ঠু হবে

‘স্বাস্থ্যসেবায় দরিদ্র জনসংখ্যার চাহিদা পূরণে সরকারের বরাদ্দ অপর্যাপ্ত’

মঙ্গলবার ঢাকায় আসছেন অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী

মেট্রোরেল থেকে ভ্যাট আদায়ের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে সরকারের কাছে অনুরোধ

উপজেলা নির্বাচন: মাঠে নেমেছে ৪৫৭ প্লাটুন বিজিবি

কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ছাত্র খুব জখম হয়েছে এমন খবর নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

শিল্প খাত পরিবেশবান্ধব করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

মেট্রোরেলে ভ্যাট আরোপ রং ডিসিশন: ওবায়দুল কাদের

উপজেলা নির্বাচন: রাত ১২টা থেকে ১৫৭ উপজেলায় যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :