ঢাবির দর্শন বিভাগে অধ্যাপক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ, সুরাহা হয়নি আজও

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে অধ্যাপক পদে নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগের সুরাহা হয়নি আজও। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য চেয়েছিল। তবে আড়াই মাস পরও এ সংক্রান্ত কোনও তথ্য ইউজিসিকে দেয়নি ঢাবি কর্তৃপক্ষ।
‘অধ্যাপক পদে নিয়োগ প্রত্যাশী’ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. ফরিদ আহমেদের অভিযোগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ওই অধ্যাপক পদে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে ‘অনভিজ্ঞ’ ও ‘অদক্ষ’ শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ফরিদ আহমেদের ভাষ্য, গত বছরের ১১ মে দর্শন বিভাগে অধ্যাপকের শূন্য পদের জন্য গঠিত নির্বাচনী বোর্ড তাকে এবং পিএইচডি ডিগ্রির শর্ত শিথিল করে একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবুল খায়ের মো. ইউনুসকে সুপারিশ করে।
অধ্যাপক পদে নিয়োগ প্রত্যাশী অন্য দুই প্রার্থী ছিলেন—জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মো. তারিকুল ইসলাম এবং ড. সিত্তুল মুনা হাসান। একই বোর্ড দর্শন বিভাগের ড. মোহাম্মদ দাউদ খান ও ড. রেবেকা সুলতানাকে ‘আপগ্রেডিংয়ের’ মাধ্যমে অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতির সুপারিশ করে। তবে, বিভাগ থেকে ওই সুপারিশ নিয়ে অভিযোগ উঠলে উপাচার্য একই বছরের ২৬ মে আরেকটি রিভিউ বোর্ড গঠন করেন।
নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, রিভিউ বোর্ড ডাকা হয়েছিল অধ্যাপক রেবেকা সুলতানার বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হেয় ও গবেষণা জালিয়াতির বিষয়ে অভিযোগ ওঠার পর। এই অভিযোগ করেছিলেন অধ্যাপক ড. ফরিদ আহমেদ। যোগ্যতার সব শর্ত পূরণ করলেও মূলত এই কারণেই তাকে বাদ দেওয়া হয় বলে ওই সূত্র জানায়।
জানা গেছে, রিভিউ বোর্ড ফরিদ আহমেদকে বাদ দিয়ে সুপারিশ পুনর্বিন্যাস করে আবুল খায়ের মো. ইউনুস এবং ড. মোহাম্মদ দাউদ খানকে শুন্য পদে এবং ড. রেবেকা সুলতানাকে ‘আপগ্রেডিংয়ের’ মাধ্যমে অধ্যাপক পদে সুপারিশ করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে ‘মূল সুপারিশ’ গোপন করে উত্থাপিত রিভিউ বোর্ডের সুপারিশ অনুমোদন হয়। আবুল খায়ের মো. ইউনূস এবং ড. মোহাম্মদ দাউদ খান উভয়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে নিয়োগ পান।
সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ‘রিভিউ বোর্ড’ গঠনের আইনগত সুযোগ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট অধ্যাপক পদের বেলায় কোনো সুপারিশ অনুমোদন না দিলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য আচার্য বরাবর উপস্থাপন করতে হয়।
চলতি বছর দর্শন বিভাগের ওই নিয়োগে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে ‘অনভিজ্ঞ’ প্রার্থী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ জানান অধ্যাপক ড. ফরিদ আহমেদ।
ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে তদন্তের নির্দেশনা দেয়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং অভিযোগকারী শিক্ষককে তথ্য প্রদানের অনুরোধ জানায়।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সেই অনুরোধের আড়াই মাস পার হয়ে গেলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
এদিকে শুন্য পদে নিয়োগপ্রাপ্ত ড. মোহাম্মদ দাউদ খান এবং ‘আপগ্রেডিংয়ের’ মাধ্যমে পদোন্নতিপ্রাপ্ত ড. রেবেকা সুলতানার পিএইচডি থিসিসে জালিয়াতির অভিযোগ করে আসছেন অধ্যাপক ড. ফরিদ আহমেদ।
অধ্যাপক ড. রেবেকা সুলতানার বিরুদ্ধে গবেষণা জালিয়াতির অভিযোগের সত্যতাও পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি। চলতি বছরের মে মাসে অধিক তদন্তের জন্য উপ-উপাচার্যকে (শিক্ষা) প্রধান করে গঠিত তিন সদস্যের একটি কমিটি এ বিষয়ে কাজ করছে।
ড. ফরিদ আহমেদের অভিযোগ, ড. মোহাম্মদ দাউদ খানের বিরুদ্ধে গবেষণা জালিয়াতির অভিযোগ দাখিল করলেও অজানা কারণে সেটি তদন্ত করা থেকে বিরত রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. মো. আখতারুজ্জামান এ বিষয়ে তার জানা নেই বলে জানান। তবে একই বিভাগের শিক্ষক ড. রেবেকা সুলতানার গবেষণা জালিয়াতির অভিযোগে কমিটি করে তদন্ত করা হচ্ছে জানান ঢাবি ভিসি।
(ঢাকাটাইমস/২৭সেপ্টেম্বর/ডিএম)
সংবাদটি শেয়ার করুন
শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
শিক্ষা এর সর্বশেষ

নবীন শিক্ষার্থীদের বিশ্বময় প্রতিযোগিতার প্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বান উপাচার্যের

নবীন শিক্ষার্থীদের বিশ্বময় প্রতিযোগিতায় প্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বান উপাচার্যের

কাগজে কলমে আটকে আছে জবির প্রধান ফটক নির্মাণ পরিকল্পনা

বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগে অনিয়মের ছড়াছড়ি, প্রশ্নবিদ্ধ প্রশাসন

প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা শুক্রবার

ঢাবি ব্যান্ড সোসাইটির সভাপতি ইনজামাম ও সম্পাদক রুদ্র

ঢাবিতে এক যুগলের বসা নিয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মারামারি

হাবিপ্রবিতে পিঠা উৎসব ও সংগীতানুষ্ঠান

২৭ পেরিয়ে ২৮ বছরে চবিসাস
