রাজধানীতে কৃষক লীগের মহাসমাবেশ শনিবার

আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীতে প্রথমবার কৃষকদের নিয়ে মহাসমাবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ কৃষক লীগ। সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ৫১ বছরে পর এই প্রথম রাজধানীতে কৃষকদের নিয়ে মহাসমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আগামীকাল শনিবার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে দুপুর ২টায় এ মহাসমাবেশ শুরু হবে।
রাজধানীতে কৃষকদের নিয়ে মহাসমাবেশ করার মধ্য দিয়ে স্মরণকালের সেরা শোডাউন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে সংগঠনটি। বিএনপি–জামায়াতের শাসনামলে সার ও বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলনরত করতে গিয়ে যেসব কৃষক শহীদ হয়েছেন তাদের স্মরণে এই কৃষক মহাসমাবেশ।
সারাদেশে থেকে প্রায় তিন লাখ কৃষক, কৃষাণী ও নেতাকর্মী জমায়েত করতে চায় সংগঠনটি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কৃষক লীগের এটাই হবে সবচেয়ে বড় মহাসমাবেশ। ঢাকা টাইমসকে এমনটাই জানিয়েছেন কৃষক লীগ সভাপতি সমীর চন্দ।
কৃষক লীগ সভাপতি ঢাকা টাইমসকে বলেন, আগামীকাল শনিবার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে দুপুর ২টার দিকে কৃষকদের নিয়ে মহাসমাবেশ করবে কৃষক লীগ। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দও উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকে কৃষক লীগের মহাসমাবেশ আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
সমীর চন্দ বলেন, ১৯৯৫ সালে সারের দাবিতে আন্দোলনরত ১৮ জন কৃষক এবং ২০০৪ সালে বোরো মৌসুমে সেঁচের জন্য বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলনরত ২৪ জন কৃষককে হত্যা করা হয়েছে। সেই শহীদ কৃষকদের স্মরণে এই কৃষক মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির-জামায়াতের শাসন আমলে কৃষক লীগের যেসব নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে তাদের পরিবারের সদস্যরাও এ মহাসমাবেশে উপস্থিত থাকবেন।
কৃষক লীগ সমাবেশের আয়োজন করলেও, সমাবেশ হবে সারাদেশের কৃষকদের নিয়ে। এই সমাবেশে নেতাকর্মী ও কৃষক, কৃষাণীর উপস্থিতি বেশি থাকবে। দেশি ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় আনতে সব কৃষক একসঙ্গে সমবেত হবেন।
কৃষক লীগের সভাপতি ঢাকা টাইমসকে বলেন, কৃষকদের মহাসমাবেশ সফল করতে কৃষক লীগ ৭১টি প্রস্তুতি সভা করেছে। এছাড়া নেতাকর্মীদের সঙ্গে শতাধিক ভার্চুয়ালি সভা করা হয়েছে। এই সমাবেশে প্রায় তিন লাখ মানুষ উপস্থিত থাকবে। বায়তুল মোকাররম থেকে শুরু হয়ে পল্টন মোড়, জিরো পয়েন্ট,হাইকোর্ট মোড়, গুলিস্তান মাজার, বঙ্গ ভবন পর্যন্ত সমাবেশে আসা লোকদের বসার জায়গা করে দেওয়া হবে। এরপরে নির্বাচনকে সামনে রেখে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পরবর্তীতে সমাবেশ করবে কৃষক লীগ। এই সমাবেশে ওয়ার্ড পর্যায়ে নেতাকর্মীরাও উপস্থিত থাকবে।
কৃষক লীগের সাংগঠনিক কাঠামোর কথা উল্লেখ করে সমীর চন্দ বলেন, দুই হাজার ৭১টি ইউনিয়ন কমিটি সম্পন্ন করা হয়েছে। কৃষক সমাবেশ হলেও সুশৃঙ্খল পরিবেশ থাকবে। প্রতিটা উপজেলার জন্য নিজস্ব আলাদা স্বেচ্ছাসেবী থাকবে। ৫০ জনের একটি মেডিকেল টিম থাকবে। কেউ অসুস্থ হলে সেবা নিতে পারবে। এছাড়া সমাবেশের পাঁচ কর্ণারে পাঁচটা পানির ট্রাক থাকবে।
প্রসঙ্গত, ১৯৭২ সালের ১৯ এপ্রিল দেশের অর্থনৈতিক মুক্তির উদ্দেশ্যে কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে কাজ করতে বঙ্গবন্ধুর নিদের্শে কৃষক লীগ প্রতিষ্ঠা হয়। প্রতিষ্ঠার পর বঙ্গবন্ধু কৃষকনেতা শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতকে কৃষক লীগের কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেন। বঙ্গবন্ধুর দিকনির্দেশনায় ব্যারিস্টার বাদল রশিদকে সভাপতি ও আব্দুর রউফকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠিত হয়। এর পর থেকে সংগঠনটি আওয়ামী লীগের হয়ে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকা রেখে চলছে। ২০১৯ সালে ৬ নভেম্বর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কৃষক লীগের জাতীয় সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হিসেবে স্বীকৃতি পায় সংগঠনটি।
(ঢাকাটাইমস/২৯সেপ্টেম্বর/জেএ/কেএম)

মন্তব্য করুন