ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’, কেন এমন নাম

বঙ্গোপসাগরের গভীর নিম্নচাপটি শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড় হামুনে পরিণত হয়েছে। সাগরের জলরাশি থেকে জলীয়বাষ্প সংগ্রহ করে ক্রমাগত শক্তি বাড়িয়ে উপকূলভাগের দিকে ধেয়ে আসছে প্রবল বেগে। উপকূলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আগামীকাল বুধবার বরিশাল ও চট্টগ্রাম উপকূলের মাঝ বরাবর আছড়ে পড়ার সময় সাত-আট ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। এজন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া দপ্তর। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থাকতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালায় সারা দেশের আকাশ ছেয়ে গেছে।
একদিকে যেমন এই ঝড় নিয়ে আতঙ্ক রয়েছে, তেমনই সোশ্যাল মিডিয়ায় এর নাম নিয়ে চলছে নানা ধরনের রসিকতা। কিন্তু এই নামের উৎস আসলে কী? সে সম্পর্কে হয়তো অনেকেই জানেন না। কীভাবে ঘূর্ণিঝড়টি হামুন নাম পেল? জেনে নিন।
ঘূর্ণিঝড় হামুনের নাম দিয়েছে ইরান। এর অর্থ হচ্ছে সমতল ভূমি বা পৃথিবী। পারসি শব্দ ‘হামুন’ মানে ছোট্ট দৈত্য। ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের জন্য ২০০৪ সাল থেকে বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরের উপকূলবর্তী দেশগুলোয় ঝড়ের নামকরণ শুরু করে। সে সময় আটটি দেশ মিলে মোট ৬৪টি নাম প্রস্তাব করে। এদিকে এই নামগুলো থেকে নামকরণ করা শেষ হলে আবারও নতুন করে নামের প্রস্তাব করা হয়। যা অনুমোদন দেয় ডব্লিউএমও।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার বৈঠকে এক বা একাধিক জ্যেষ্ঠ আবহাওয়া কর্মকর্তা অংশ নিয়ে থাকেন। আগে থেকে তারা আলোচনা করে নেন, কি নাম হবে। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে সেই তালিকা থেকে ঝড়ের নাম বাছাই করা হয়। ঝড়ের নাম বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা হয়, যাতে সেটি ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক বা সামাজিকভাবে কোনোরকম বিতর্ক বা ক্ষোভ তৈরি না করে। পরবর্তী ঘূর্ণিঝড়ের নামও ইতোমধ্যে নির্ধারণ হয়ে গেছে। এগুলো মধ্যে রয়েছে- মিধিলি (মালদ্বীপ), মিগজাউম (মিয়ানমার) ও রিমাল (ওমান)।
আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষকদের মতে, ২৪, ২৫, ২৬ এবং এর পরবর্তী তিন দিন খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা ও সিলেট বিভাগে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট এবং বরিশাল বিভাগের বরগুনা—এসব উপকূলীয় এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে তিন থেকে পাঁচ ফুট, কোনো কোনো স্থানে সাত ফুট পর্যন্ত হতে পারে।
(ঢাকাটাইমস/২৪ অক্টোবর/আরজেড)

মন্তব্য করুন