চরফ্যাশনে খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ

ভোলার চরফ্যাশনের চর মানিকা ইউনিয়নের বেবাইজ্যার খালে বাঁধ দিয়ে মাছের ঘের নির্মাণের কারণে ৩ হাজার একর কৃষিজমি অনাবাদি থাকার ঝুঁকিতে পড়েছে। পাশাপাশি তিনটি গ্রামের ২শতাধিক মাছধরা ট্রলার এবং জনসাধারণের পণ্য পরিবহনে নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থা থমকে গেছে। গুরুত্বপূর্ণ খালটি বাঁধ দিয়ে অবরুদ্ধ করার ঘটনায় এলাকাজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা এই বাঁধ অপসারণের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে শনিবার উপজেলা নির্বাহী অফিস সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

জানা গেছে, দক্ষিণের মেঘনা নদীতে পতিত এই বেবাইজ্যার খালটি চর মানিকা ইউনিয়নের চর হাসিনা, চর খরচি, চর আইচার উপর দিয়ে বয়ে গেছে। বেড়িবাধে পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের জন্য এককপাটের একটি স্লুইচগেইট দেয়া আছে। খালের দু’পাশে কোন রাস্তা না থাকায় স্থানীয় মানুষ খালটিকে পণ্য পরিবহনের নৌরুট হিসেবে ব্যবহার করছে। পাশাপাশি এই খালটি দু’পাশের তিন হাজার একর জমি চাষে পানির উৎস হিসেবে কাজে লাগছে।

দু’পাশের বসতি ও কৃষক মহসিন, আবদুল্লাহ, রফিকুল ইসলাম ও জেলে বাবুল হোসেন জানান, খালে মাছ চাষের জন্য সাবেক ইউপি সদস্য আবদুল মান্নান খালটির মাঝ অংশে দু’প্রান্ত থেকে দুটি বাঁধ দিয়ে ঘের নির্মাণ শুরু করেছেন। ফলে খালের পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে চলতি মৌসুমে প্রায় তিন হাজার একর জমির চাষ যেমন অনিশ্চিত হয়ে গেছে। তেমনি খালের দু’পাশের কয়েক হাজার কৃষক পরিবারের পণ্য পরিবহন এবং স্থানীয় ইলিশ শিকারে নিয়োজিত ট্রলারগুলোর নিরাপদ আশ্রয়ে আসা ও যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে।

অভিযোগ প্রসঙ্গে সাবেক ইউপি সদস্য আবদুল মান্নান বলেছেন, তরমুজ চাষের সুবিধার জন্যই স্থানীয় চর মানিকা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করে খালে বাঁধ দেয়া হয়েছে।

তবে চর মানিকা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শফিউল্যাহ হাওলাদার বলেছেন, তরমুজ চাষের জন্য খালে বাঁধ দেয়া হয়েছে। এতে কিছু জেলের ট্রলার চালনায় সমস্যা হবে। এই সমস্যা মেনে নিতে জেলেদের অনুরোধ করেছি। পাশাপশি স্থানীয়দের চলাচল এবং পণ্য পরিবহনের জন্য খালপাড়ে রাস্তা করে দেয়ার কথাও বলেছি।

স্থানীয় কৃষকদের থেকে লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নওরীন হক জানান, এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দক্ষিণ আইচা থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিভিশন-২ এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, খালের বাঁধ এলাকা পরিদর্শন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মালিকানাধীন এই খালের বাঁধ অপসারণের জন্য ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

দক্ষিণ আইচা থানার ওসি মো. সাঈদ আহম্মেদ জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মাটি খনন কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/২২ নভেম্বর/ইএইচ)