পৌষের প্রথম দিন তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা নামল দশের নিচে

পঞ্চগড় প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৪:৩৩ | প্রকাশিত : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৪:১২

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার সীমান্তবর্তী এ উপজেলায় সকাল ৭টায় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সূর্যের হালকা উষ্ণতা থাকছে।

এদিকে, প্রথম পৌষেই পঞ্চগড়ে শীতের প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। দিনদিন তাপমাত্রা আরও কমে আসছে। ডিসেম্বরের শুরু থেকে এই জেলায় তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রি থেকে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠানামা করছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, সারা পৌষে এবং মাঘে তাপমাত্রা আরও কমতে শুরু করবে। ৬ ডিগ্রির নিচে গড়িয়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ সৃষ্টি করবে এবং টানা জানুয়ারি পর্যন্ত তীব্র শীতের প্রকোপ থাকবে।

এদিকে, তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা রোকন উদ্দিন জানিয়েছেন, তেঁতুলিয়ায় গত দু’সপ্তাহ ধরে ১১ থেকে ১৩ ডিগ্রিতে তাপমাত্রা উঠানামা করছে। বুধবার তাপমাত্রা নেমে গেছে ১১ ডিগ্রির ঘরে। পৌষ পড়লেই এটি আরও নিচে নেমে আসবে। জানুয়ারি মাসের পুরো সময়জুড়ে মাঝারি শৈতপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে। সেই ক্ষেত্রে তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রির নিচে নেমে আসতে পারে।

গত দু’সপ্তাহ ধরে এ জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে। দিনের বেলা সূর্য উঠলেও রৌদ্রের তেজ তেমন থাকে না। বিকেল গড়াতেই গ্রাম-গঞ্জের হাটবাজারগুলো জনশূন্য হয়ে পড়ছে, মানুষ ঘরমুখী হয়ে পড়ছে। হিমালয়ের অবস্থান খুব কাছে হবার কারণে সন্ধ্যা হতেই পাহাড়ি হিমেল হাওয়া আছড়ে পড়ছে সীমান্তের এই জনপদে। ফলে জনজীবনে দুর্ভোগ বাড়ছেই। বিশেষ করে চা ও পাথর শ্রমিকরা পড়ছে বিপাকে। এই সময়টিতে নিম্নআয়ের মানুষদের শীত নিবারণে সীমাহীন কষ্ট করতে হয়। কর্মজীবী মানুষরাও হয়ে পড়ে কর্মহীন। অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে উষ্ণতা নেন।

এছাড়াও শীতের প্রকোপ বাড়তে শুরু করায় জেলার হাসপাতালগুলোতে দিনদিন শীতজনিত রোগে শিশু এবং বয়স্ক মানুষ আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছেন। জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ জানিয়েছে, টানা তীব্র শীতে গবাদি পশুর নানা রোগ-বালাই দেখা দিয়েছে। গরু ছাগলের সর্দি, ডায়রিয়াসহ খুরা রোগ দেখা দিয়েছে।

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মেডিসিন ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. মাহবুব আলম জানান, শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বয়স্ক এবং শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছেন শীতজনিত নানা রোগে। প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে অনেক শিশু। হাসপাতালে জায়গার অভাবে মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছে। তবে অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে শিশু এবং বয়স্কদের নিবিড় পরিচর্যার মধ্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

অবশ্য, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দরিদ্র শীতার্তদের জন্য সামান্য পরিসরে শীতবস্ত্র পঞ্চগড়ের পাঁচটি উপজেলার বিতরণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে নতুন করে শীতবস্ত্র বরাদ্দের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়ে বার্তা পাঠানো হয়েছে।

পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি- এই দুই মাস পঞ্চগড়ের মানুষের জীবনে নেমে আসে অবর্ননীয় দুর্ভোগ। তীব্র শীতে মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষদের সহায়তার বিষয়টি কঠিন হয়ে পড়ে। আগামী দু’মাস এসব শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে সরকারিভাবে ব্যবস্থাগ্রহণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি অসহায়-দুস্থ মানুষদের খাদ্য সহায়তাসহ শীত মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ব্যবস্থাগ্রহণ করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৬ডিসেম্বর/জেডএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :