কুড়িগ্রাম-৩: সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণে সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বাদ দিয়ে কিন্ডারগার্টেন পর্যায়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় বঞ্চিত শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে এ উপজেলায় তিনদিনব্যাপী ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। উলিপুর মহারাণী স্বর্ণময়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজে গত ২৩ ডিসেম্বর প্রশিক্ষণ শুরু হয় যা আগামী ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে।
কুড়িগ্রাম-৩ (উলিপুর) আসনে ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ১৩৯টি ভোট কেন্দ্র রয়েছে। নির্বাচনের দায়িত্ব পালনের জন্য ১৩৯ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ৮০৬ জন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও ১৬১২ জন পোলিং কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।
জানা গেছে, এ উপজেলায় এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক পর্যায়ে ৫০টি বিদ্যালয়, নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ে পাঁচটি, স্কুল অ্যান্ড কলেজ পর্যায়ে ৬টি ও মাদরাসা ৫৫টি এবং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ২৬৮টি। এ ছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর। বিধি মোতাবেক নির্দিষ্ট বেতন স্কেলের শিক্ষক ও সরকারি কর্মচারীরা নির্বাচনে সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
অভিযোগ উঠেছে, কুড়িগ্রাম-৩ (উলিপুর) আসনে সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা নিয়োগ ও প্রশিক্ষণে উপজেলার একাধিক মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদরাসার শতাধিক শিক্ষকদের বাদ দিয়ে বিধি বহির্ভূতভাবে কিন্ডারগার্টেন পর্যায়ের (ননএমপিও) শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের আওতায় নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে গুনাইগাছ ইউনিয়নের সাকসেস রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের ১১ জন ও বজরা ইউনিয়নের উদয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ জন রবিবার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। ননএমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের আওতায় নেওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনে একাধিকবার দায়িত্বপালনকারী এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিকবার নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী কয়েকজন শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাদ দিয়ে উৎকোচের বিনিময়ে ননএমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের দিয়ে নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করানো কতটা সঠিক, এমন প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহতাব হোসেন বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা নির্বাচন অফিসে জমা দেওয়া হয়েছে। যা চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি। তাদেরকে বাদ দিয়ে নন-এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের নাম দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এরশাদুল হক মিয়া জানান, শিক্ষা অফিসের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী আমরা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। সেখানে কে এমপিওভুক্ত বা কে ননএমপিওভুক্ত সেটা আমাদের জানার কথা না।
এ বিষয়ে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আতাউর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে অনিয়ম হয়ে থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(ঢাকা টাইমস/২৫ডিসেম্বর/এআর)