খিলক্ষেতে তিন প্রাণ কেড়ে নেওয়া সেই গাড়ির চালকের লাইসেন্স নেই

রাজধানীর খিলক্ষেতে বেপরোয়া গতিতে তিনজনের প্রাণ কেড়ে নেওয়া সেই ল্যান্ডক্রুজার গাড়ির চালক নাবিলের কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। এমনকি গাড়িতে ছিল না গাড়ি কেনার কাগজপত্রও।
গত ২৭ ডিসেম্বর রাত ৯টার দিকে বেপরোয়া গতিতে চালিয়ে ল্যান্ডক্রুজারটির নিয়ন্ত্রণ হারান নাবিল। দ্রুতগামী গাড়িটি খিলক্ষেত বাজার যাত্রীছাউনি সংলগ্ন প্রধান সড়কে যাত্রীদের চাপা দিলে শিশুসহ তিনজন নিহত হয়। পরে গাড়ির চালক নাহিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় নাবিলের সঙ্গে গাড়িতে ছিলেন সাদ্দাম নামে আরেক ব্যক্তি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিলাসবহুল সেই ল্যান্ডক্রুজার এসইউভি (ঢাকা মেট্রো ঘ ১৫- ২৬৯১) গাড়িটির প্রকৃত মালিক সাইফুল্লা মোস্তফা (তানভীর) ওরফে মুন্না নামে এক ব্যক্তি। তিনি পেশায় একজন কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং (সিএন্ডএফ) এজেন্ট।
গত ২৮ ডিসেম্বর গাড়িটির মালিকানার বিষয়ে পুলিশের মধ্যে ভিন্ন মত ও ধোঁয়াশা বিষয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর পুলিশ খোঁজ নিয়ে জানতে পারে গাড়িটির প্রকৃত মালিক একজন সিএন্ডএফ এজেন্ট। ঘটনার সময় গাড়িটিতে ওই ব্যবসায়ী ছিলেন না। তবে বেপরোয়া চালক নাবিলের সঙ্গে ছিলেন সাদ্দাম নামে অন্য এক ব্যক্তি। পুলিশ সাদ্দামের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছে বলে জানিয়েছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, গাড়িচাপা দেওয়ার সময় চালকের আসনে ছিলেন মুন্না। ঘটনার পর অজ্ঞাতপরিচয় আসামি হিসেবে থানায় মামলা করা হয়। এরপর এ ঘটনায় নাবিল নামে একজনকে গাড়িটির চালক হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়। অর্থাৎ গাড়ির মালিক মোস্তফাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে পুলিশ।
খিলক্ষেত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল বাশার ঢাকা টাইমসকে বলেন, ঘটনার পর পরই পুলিশ গাড়িটির চালককে আটক করে। এরপর চালক নাবিলকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। গাড়িটির ভেতর গাড়ির কোনো কাগজ না থাকায় মালিকানার বিষয়টি ওই সময় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
আমিনুল বাশার বলেন, গাড়িটি একজন সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীর। তার নাম সাইফুল্লা মোস্তফা। ঘটনার সময় তিনি গাড়িটিতে ছিলেন না। তবে ওই সময় চালকের সঙ্গে সাদ্দাম নামে এক ব্যক্তি ছিল। তার বিষয় খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।
ওসি আরও বলেন, গাড়িটি বেপরোয়া গতিতে চালানোর কারণে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এছাড়াও চালক নাবিলের কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই।
খিলক্ষেত থানার পরিদর্শক অপারেশন মো. আশরাফুল আলম ঢাকা টাইমসকে বলেন, গাড়িটিতে চালকের সঙ্গে সাদ্দাম নামে একজন ছিল। তাকে আমরা আটক করতে পারিনি। তবে সাদ্দামকে খোঁজা হচ্ছে।
সাদ্দামের পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাদ্দামের বৃত্তান্ত এখনও আমরা পাইনি। তবে সাদ্দামের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও গাড়ির মালিকের বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। গাড়ির মালিক একজন ব্যবসায়ী। তাকেও খোঁজা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত সাদ্দাম ও গাড়ির মালিক সাইফুল্লাহকে পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে গাড়িটির মালিক মোস্তফার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
(ঢাকাটাইমস/০২জানুয়ারি/এইচএম/ইএস/কেএম)

মন্তব্য করুন