তরুণ ভোটারের উপস্থিতি নেই ভোটকেন্দ্রে

​​​​​​​তানিয়া আক্তার, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১৯:২৫ | প্রকাশিত : ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১৫:৪৯
মোহাম্মদপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতির চিত্র। ছবি: ঢাকা টাইমস

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নতুন ভোটারের সংখ্যা এক কোটি ৫৪ লাখ। আর নতুন ভোটার মানেই তরুণ ভোটার। কিন্তু রবিবার দুপুর পর্যন্ত ভোটগ্রহণের সময় তরুণ ভোটারের উপস্থিতি দেখা যায়নি। প্রিজাইডিং অফিসাররাও এ নিয়ে হতাশ। তরুণদের ভেতর দেশপ্রেম জাগিয়ে তুলে ভোটের প্রতি আস্থা না বাড়ালে ভবিষ্যতে বড় ক্ষতির মুখোমুখি হতে পারে বলেও জানান প্রিজাইডিং অফিসাররা।

রবিবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত রাজধানীর সাতটি ভোটকেন্দ্র ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভোটকেন্দ্রগুলো প্রায় ফাঁকা। যে কজন ভোটার কেন্দ্রে গেছেন সেখানে মধ্যবয়স্ক থেকে বয়োজ্যেষ্ঠ ভোটারের উপস্থিতিই লক্ষ্য করা গেছে বেশি। তরুণ ভোটারদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে।

ধানমন্ডি গভর্নমেন্ট বয়েজ হাই স্কুল কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্বরত ঢাকা কলেজের শিক্ষক জাহিদুল ইসলামকে নতুন ভোটারদের উপস্থিতি হতাশ করেছে। তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, বয়োজ্যেষ্ঠদের দেখেছি ভোট দিতে আসতে। কিন্তু তরুণদের একেবারে অল্প অংশগ্রহণ রয়েছে। তরুণদের মধ্যে হয়তো আমরা ভোটের আগ্রহ গড়ে তুলতে পারিনি। দেশকে ভালোবাসলে ভোট দিতে আসতে হবে।

তরুণদের অতিমাত্রায় প্রযুক্তিমুখী হওয়ার কারণে ভোটের প্রতি আগ্রহ কম বলে মনে করেন এই প্রিজাইডিং অফিসার। তিনি বলেন, আমি একজন শিক্ষক। আমি দেখেছি তরুণরা বেশি প্রযুক্তিমুখী হয়ে গেছে। মোবাইলে আসক্ত হয়ে ঘুম থেকে দেরি করে উঠে। ক্লাসেও দেরিতে আসে। প্রযুক্তির প্রতি এত আসক্তিটা ভয়ের । নতুন ভোটারদের দেশপ্রেমের ওপর দেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। ফলে তাদের ভেতর দেশপ্রেম জাগিয়ে তোলার জন্য কাউন্সিলিং করা দরকার বলেও মনে করেন তিনি।

মোহাম্মদপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভেতরে চারটি কেন্দ্র অবস্থিত। সেখানেও সকাল ৮টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ভোটারদের উপস্থিতি একেবারেই কম দেখা গেছে। ভোটের কোনো লাইন নেই। একটি কেন্দ্রের সামনে কয়েকজনকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেলেও তারা প্রত্যেকেই মধ্যবয়স্ক ভোটার ছিলেন।

ঢাকা-১৩ আসনের ৭১ নম্বর কেন্দ্রটি অবস্থিত মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেখানেও সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নতুন ভোটারদের দেখা মেলেনি। সেখানে আফসারি নামে ৬৭ বছর বয়সি ভোটার ভোট দিতে এসেছেন। খুব আগ্রহ নিয়ে ভোট দিয়েছেন। তবে তরুণদের না দেখে তিনিও হতাশ।

ঢাকা-১৩ আসনের আরও একটি কেন্দ্র মোহাম্মদপুর জামিয়া ইসলামিয়া মুহাম্মাদী আশরাফুল মাদারাসা। সেখানেও নতুন ভোটারের উপস্থিতি মেলেনি।

কেন্দ্রগুলোতে দুপুর নাগাদ কোনোটাতে ভোট পড়েছে দুই শতাধিক, কোনোটায় কত ভোট পড়েছে তা জানাতে রাজি হননি প্রিজাইডিং অফিসাররা। তবে নতুন ভোটারদের উপস্থিতি কম ছিল বলে জানিয়েছেন প্রায় সব প্রিজাইডিং অফিসার।

লালমাটিয়ায় থাকেন ষাটোর্ধ্ব হাসিনা বেগম। প্রতিবারই ভোট দেন তিনি। ধানমন্ডি গভর্নমেন্ট বয়েজ হাই স্কুল কেন্দ্রে ভোট দিতে এসে নতুন ভোটারদের উপস্থিতি না থাকায় হতাশ তিনি।

হাসিনা বেগম ঢাকা টাইমসকে বলেন, যুগ পাল্টাইছে। বাসায় থাকা নাতি-নাতনিরা ভোট দিতে পছন্দ করে না। তারা মোবাইল নিয়া বেশি আনন্দে থাকে। আর অন্য নাতিরা সবাই বিদেশে চলে গেছে

এদিকে ভোট না দেওয়া কয়েকজন তরুণ জানান, সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে সার্বিকভাবে পরিবেশ উৎসবমুখর থাকত। সেটি না থাকায় ভোট দেওয়ার আগ্রহও তৈরি হয়নি। নির্বাচনের ফলাফল কী হবে সবাই জানি।

(ঢাকাটাইমস/০৭জানুয়ারি/টিএ/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজধানী এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :