মাদারীপুরে দুপক্ষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র, ১২ পুলিশ সদস্যসহ আহত ৩৫

মাদারীপুরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষে ১২ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছেন।
এ সময় অর্ধশত ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বেশ কয়েকটি ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটও করা হয়। ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
মাদারীপুর পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের চর খাগদী এলাকায় বুধবার রাত ৯টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত টানা আড়াই ঘণ্টা চলে এই সংঘর্ষ।
এ ঘটনায় আটক করা হয়েছে পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ ৭ জন।
আহত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে মাদারীপুর সদর মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. সেলিম সরদার, এসআই রবিউল ইসলাম, এএসআই মাসুদ বেপারী, কনস্টেবল মনোয়ার হোসেন।
ভুক্তভোগীরা জানায়, চার খাগদী এলাকার সোহরাব বেপারীর ছেলে সিমান্ত বেপারী বুধবার সন্ধ্যায় মোটরসাইকেল নিয়ে চরমুগরিয়া বাজারে যাচ্ছিল। তার মোটরসাইকেলটির সঙ্গে একই এলাকার মিন্টু মৃধার ছেলে আশিক মৃধার শরীরের ধাক্কা লাগে। এ ঘটনার বিরোধ মেটাতে দুপক্ষের লোকজন চরমুগরিয়া বাজারের দুলাল তালুকদারের দোকানে সালিশে বসেন। সালিশে দুপক্ষ বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লে সুলতান সরদার নামে একজনের মাথায় আঘাত লাগে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সরদার, মৃধা ও বেপারী বংশের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। রাত ৯টা থেকে প্রায় সাড়ে ১১টা পর্যন্ত টানা আড়াই ঘণ্টার সংঘর্ষে বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
এ সময় উভয়পক্ষের অন্তত ১০টি বসতঘর ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। সংঘর্ষে থানা পুলিশের পরিদর্শক সেলিম সরদারসহ ১২ পুলিশ সদস্য আহত হন। এছাড়া উভয়পপক্ষের আরও আহত ২৩ জন। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে ভর্তি করা হয়েছে জেলা সদর হাসপাতালে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। এই ঘটনার বিচার দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগী এক নারী বলেন, ‘হঠাৎ করে শুনি মারামারি লাগছে, আমাদের ঘরের পুরুষ লোক দেশের বাইরে থাকে। ঘরের থাই গ্লাসগুলো ভেঙে চুরমার করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আমাদের এখানে প্রতিটি বাড়িতে ছোট ছেলে-মেয়েরা রয়েছে। আমাদের বাড়িঘরের সব সময় মহিলারা থাকেন। সবার মাঝে এখন নিরাপত্তার অভাব দেখা দিয়েছে। এমন সংঘর্ষ হলে কীভাবে বসবাস করবো আমরা।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. সেলিম সরদার জানান, সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ঠিক তখনই পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে দুপক্ষই। এতে পুলিশের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফাঁকা গুলি ছুড়তে হয়েছে।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএস সালাউদ্দিন জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় মাদারীপুর পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল বাশার বেপারীসহ ৭ জনকে আটক করা হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুটিপক্ষ এই সংঘর্ষে জড়ায়। যারা সরাসরি এই ঘটনায় জড়িত ছিল সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
(ঢাকাটাইমস/১১জানুয়ারি/এআর)

মন্তব্য করুন