বিপিএল: আবারও তীরে এসে তরী ডুবল বরিশালের

চলতি বিপিএলে সিলেট পর্বেও ভাগ্য বদল হলো না তামিমের বরিশালের। ঢাকা পর্বে টানা দুই ম্যাচে হারের পর সিলেট পর্বের প্রথম ম্যাচেও হারের তিক্ত স্বাদ পেলো্ তামিমের বরিশাল। ঢাকা পর্বের শেষ ম্যাচের মতো আজও তীরে এসে তরী ডুবেছে তাদের। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের কাছে আজ তারা হেরেছে মাত্র ১০ রানে। এই নিয়ে টানা হ্যাটট্রিক হারের মুখ দেখলো বরিশাল।
চট্টগ্রামের দেওয়া ১৯৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালোই করে বরিশাল। ওপেনিং জুটি থেকে আসে ৫৫ রান। এরপর দলীয় ৯১ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় তারা। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকা বরিশাল ১০১ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে তারা। এরপর দলের হাল ধরেন মুশফিক ও মিরাজ। তাদের জুটিতে ভর করে জয়ের স্বপ্ন দেখছিল বরিশাল। কিন্তু ৫১ রান করে এই জুটি ভেঙে গেলে জয়ের স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় বরিশালের। অষ্টম উইকেটে আব্বাস আফ্রিদি ও দুনিথ ভেল্লালাগের ৯ বলে ২১ রানে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮৩ রান তুলে বরিশাল। আর চট্টগ্রাম তুলে নেয় ১০ রানের জয়।
বরিশালের হয়ে আজ ওপেনিংয়ে নামেন তামিম ইকবাল ও আহমেদ শেহজাদ। শুরু থেকেই দেখেশুনে খেরতে থাকেন তারা। প্রথম ৫ ওভারেই তুলে নেন ৫০ রান। কিন্তু এরপরেই ঘটে ছন্দপতন। দলীয় ৫৫ রানে আহমেদ শেহজাদের বিদায়ে ভেঙে যায় এই জুটি। ১৭ বলে ৩৯ রান করা শেহজাদ বিলাল খানের বলে পুল শট খেলতে গিয়ে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ার লেগে ক্যাচ তুলে দেন। সেখানে দাঁড়ানো কার্টিস ক্যাম্ফার ক্যাচটি তুলবন্দী করতে ভুল করেননি। যার ফলে সাজঘরের পথ ধরতে হয় তাকে।
শেহজাদের বিদায়ের পর সৌম্য সরকারের সঙ্গে জুটি বাঁধেন তামিম ইকবাল। এই জুটি থেকে আসে ৩৬ রান। দলীয় ৯১ রানে তামিমের বিদায়ে ভেঙে যায় এই জুটি। কার্টিস ক্যাম্ফারের বলে লং অনে আবিষ্কা ফার্নান্দোর হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান তামিম। আউট হওয়ার আগে করেন ৩০ বলে ৩৩ রান।
তামিমের পথ ধরে একই ওভারে সাজঘরে ফিরে যান সৌম্য সরকারও। কার্টিস ক্যাম্ফারের বলে ইমরান উজ্জামানানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান তিনি।
তামিম আর সৌম্য সরকারের পর সাজঘরে ফিরে যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও ইয়ানিক ক্যারিয়াহ। অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৪ বলে মাত্র ৩ রান করে কার্টিস ক্যাম্ফারের বলে ডিপ মিড উইকেটে শাহাদাত হোসেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান সাজঘরে।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বিদায়ের এক বল পরেই সাজঘরে ফিরে যান ইয়ানিক ক্যারিয়াহ। ২ বলে মাত্র ৪ রান করেই সাজঘরে ফিরে যান তিনি। তার বিদায়ে ১০১ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে বরিশাল।
১০১ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়ে দলের হাল ধরেন মুশফিকুর রহিম ও মেহেদী হাসান মিরাজ। এই জুটিতে ভর করে জয়ের স্বপ্ন দেখছিল বরিশাল। কিন্তু এই জুটিকে বেশি বড় করতে দেননি আল-আমিন হোসেন। আল-আমিনের বলে কার্টিস ক্যাম্ফারের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান মিরাজ। আউট হওয়ার আগে করেন ১৬ বলে ৩৫ রান।
মিরাজের পর সাজঘরে ফিরে যান বরিশালের শেষ ভরসা মুশফিকও। ২২ বলে ২৩ রান করা মুশফিক বিলাল খানের বলে ডিপ পয়েন্টে কার্টিস ক্যাম্ফারের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান তিনি।
মুশফিকের বিদায়ের পর অষ্টম উইকেটে জুটি গড়েন আব্বাস আফ্রিদি ও দুনিথ ভেল্লালাগে । ৯ বলে ২১ রান করেন তারা। তাদের ২১ রানে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮৩ রান তুলে বরিশাল। আর চট্টগ্রাম তুলে নেয় ১০ রানের জয়।
এর আগে জয়ের জন্য মরিয়া বরিশাল সিলেট পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রামের বিপক্ষে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের। মাত্র ২১ রানেই ২ উইকেট হারায় তারা। এর পরেই শাহাদাত হোসেনকে নিয়ে জুটি গড়েন আবিষ্কা ফার্নান্দো। এই জুটির ৭০ রান ভর করে ঘুরে দাঁড়ায় চট্টগ্রাম। আভিষ্কা ফার্নান্দোর ৯১ রানের ইনিংসে ২০ ওভারে চার উইকেটে ১৯৩ রান করেছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। আবিষ্কার পাশাপাশি এ দিন ঝড় তোলেন কার্টিস ক্যাম্ফারও। এ ছাড়া শাহাদাত হোসেন দিপুর ইনিংসও স্বস্তি দিয়েছে চট্টগ্রামকে।
(ঢাকাটাইমস/২৭জানুয়ারি/এনবিডব্লিউ)

মন্তব্য করুন