বডি বিল্ডারের মৃত্যু

বংশাল থানার ওসিসহ ৫ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা, তদন্তের নির্দেশ ডিবিকে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ৩১ জানুয়ারি ২০২৪, ১৮:০৩
অ- অ+

পুলিশ হেফাজতে বডি বিল্ডার মিস্টার বাংলাদেশ ফারুক হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় বংশাল থানার ওসি মাইনুল ইসলামসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) এই মামলা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বংশাল থানার এসআই ইমদাদুল হক, আবু সালেহ, মাসুদ রানা ও বুলবুল আহমেদ।

বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালত এ আদেশ দেন। আগামী ২৮ মার্চ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন আদালত।

ভুক্তভোগী ফারুকের স্ত্রী ইমা আক্তার হ্যাপী মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) ওই আদালতে মামলার আবেদন করেন। এরপর আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এ বিষয়ে আদেশের জন্য আজ বুধবার দিন ধার্য ছিল।

এ বিষয়ে লালবাগ জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. জাফর হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, আদালত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। ডিবি তদন্ত করবে।

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্তে কিছু প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত কীসের ব্যবস্থা।

তিনি জানান, পুলিশ একটি তদন্ত করেছিল, যার কাজ এখনো চলমান। তদন্তে এখন পর্যন্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কোনো দোষ পাওয়া যায়নি। বলেন, ‘আমাদের তদন্তে এসব কোনো কিছু দেখিনি।’

সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল জানান, আগামী ২৮ মার্চ ডিবি পুলিশকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এর আগে মঙ্গলবার ফারুকের স্ত্রী ইমা আক্তার হ্যাপী মামলার আবেদন করেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ১২ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফারুক হোসেন খাজা দেওয়ান সিং লেন লালবাগের বাসা থেকে ব্যক্তিগত কাজে বের হন। এর এক ঘণ্টা পর ফারুক হোসেন স্ত্রী হ্যাপীকে ফোন দিয়ে জানান, তাকে সন্দেহজনকভাবে কায়েতটুলী ফাঁড়ির কতিপয় পুলিশ গ্রেপ্তার করে আটকে রেখে নির্যাতন করছে। দুই বছরের সন্তানকে কোলে নিয়ে তিনি সেখানে ছুটে যান। দেখেন, ফারুককে পুলিশ সদস্যরা মারধর করে আটকে রেখেছে। হ্যাপী সেখানে উপস্থিত এসআই ইমদাদুল হক, মাসুদ রানা, বুলবুল আহমেদসহ অন্যদের পা ধরে তার স্বামীকে ছেড়ে দেয়ার আকুতি জানান। তখন ইমদাদুল হক তাকে বলেন, ফারুক অনেক বড় ক্রিমিনাল, তাদের গালিগালাজ করেছে। এমনিতে ছাড়া যাবে না। ওকে ছাড়তে হলে এক লাখ টাকা লাগবে। তখন হ্যাপী জানান, তার স্বামী সিটি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শোয়েবের ব্যক্তিগত দেহরক্ষী। আগে বডি বিল্ডার ছিলেন মিস্টার বাংলাদেশ হিসেবে। তিনটি ছোট ছোট সন্তান, তার ইনকামেই সংসার চলে। তাই তাকে ছেড়ে দিতে বলেন। পরে আসামিরা এক লাখ থেকে কমিয়ে তারা ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। তারা হ্যাপীকে কুপ্রস্তাব দেন। রাজি না হওয়ায় আসামিরা ফারুককে ব্যাপক মারধর করেন। আসামিরা জানান, ফারুক একজন মাদক ব্যবসায়ী। তারা কিছু করতে পারবে না। তাদের বড় স্যার জানে কী করবে। এর কিছুক্ষণ পর ফারুককে মোটরসাইকেলে করে বংশাল থানার দিকে নিয়ে যায়।

অভিযোগে আরও বলা হয়, হ্যাপী তখন মাইনুল হোসেনের হাত-পা ধরে আকুতি মিনতি করে স্বামীকে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয় না। তারা তাকে পরদিন সিএমএম আদালতে যোগাযোগ করতে বলে। পরদিন হ্যাপী কোর্টে যান স্বামীর খবর নিতে। সেখানে অনেক কষ্টে স্বামীর সাক্ষাৎ পান। স্ত্রীকে মারধরের কথা জানান ফারুক। তার কিছু হলে আদালতে বিচার চাইতে বলেন। ফারুকের বিরুদ্ধে ১৫০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধারের মামলা দেয়া হয়েছে বলে জানতে পারেন হ্যাপী। ৫-৬ টার দিকে তিনি বাসায় ফিরে যান। ১৫ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এক ব্যক্তি হ্যাপীকে জানান, ফারুক মারা গেছেন। হাসপাতালের মর্গে গিয়ে তিনি স্বামীল লাশ দেখতে পান। ফারুকের গলায়, বুকে, পিঠে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান।

(ঢাকাটাইমস/৩১জানুয়ারি/টিআই/ইএস)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের ২০০ কেজি ওজনের বোমা পাওয়া গেল মুন্সীগঞ্জে, নিষ্ক্রিয় করল সিটিটিসি
চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ ত্বরান্বিত করার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
আইইউবিএটি-তে চীনা ভাষা কোর্সের উদ্বোধন
ঢাকা উত্তর ছাত্রলীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক শাহীন গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা