ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির আলোচনায় মিশরে যাচ্ছেন হামাসপ্রধান
গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতে মিশর যাচ্ছেন হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়া। ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনটি ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পর্যালোচনা করছে বলে জানিয়েছে আল জাজিরা।
মিশরের রাজধানী কায়রোতে আলোচনায় বসবে ইসরায়েল ও হামাস কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুরে তার কায়রো পৌঁছার কথা রয়েছে।
গত সপ্তাহে প্যারিসে মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক উইলিয়াম বার্নসের পাশাপাশি কাতার ও মিশরীয় নেতৃত্বাধীন মধ্যস্থতাকারীর আলোচনা ভেস্তে যায়। প্রস্তাবে তিন-পর্যায়ের পরিকল্পনা একটি রয়েছে। এতে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি এবং আরও ত্রাণ সরবরাহ অন্তর্ভূক্ত থাকবে। এছাড়া ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি বন্দীদের বিনিময়ে হামাসের হাতে বন্দী শুধুমাত্র নারী, শিশু এবং অসুস্থ পুরুষদের মুক্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
এদিকে গাজায় এখন পর্যন্ত প্রায় ২৭ হাজার ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (পিআরসিএস) জানিয়েছে যে, ইসরায়েলি বাহিনী খান ইউনিসের আল-আমাল হাসপাতালে তীব্র হামলা চালিয়েছে।
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ১১৮তম দিনেও কয়েক ডজন ফিলিস্তিনি নিহত ও আহত হয়েছে।
গাজায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্মসংস্থার পরিচালক টমাস হোয়াইট বলেছেন, আমরা একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং প্রধান আশ্রয়কেন্দ্র হারিয়েছি। খান ইউনিসের বহু মানুষ ওই হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছিল। কিন্তু সেখানেও ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার কারণে লোকজন পালাতে বাধ্য হচ্ছে।
এদিকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মনসুর বলেছেন, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের অস্থায়ী পদক্ষেপ বাস্তবায়নের জন্য গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবিও বলেছেন যে, যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে গঠনমূলক।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় হামাসকে নির্মূলের অজুহাতে অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। প্রায় চার মাস ধরে সেখানে সংঘাত চলছেই।
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২৬ হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও প্রায় ৬৬ হাজার। গাজায় হতাহতদের মধ্যে অধিকাংশই নারী এবং শিশু।
এদিকে অক্টোবর থেকে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এবং বসতি স্থাপনকারীদের হামলায় কমপক্ষে ৩৮২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার হামাসের কাসাম ব্রিগেড জানিয়েছে, তারা পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে।
ইসরায়েলি বাহিনী গাজা শহরের পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র, গুলিবর্ষণ এবং বিশেষত রেমাল পাড়া এবং তাল আল-হাওয়াতে গোলাবর্ষণের মাধ্যমে বেশ কয়েকজন নিহত ও আহত হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্সগুলি তাদের কাছে পৌঁছাতে এবং আহতদের আল-শিফা হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেনি।
গাজা শহরের দক্ষিণ-পূর্বে জেইতুন এলাকায় দুটি বাড়িতে ইসরায়েলি জেট বোমা হামলায় বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি নিহত ও আহত হয়েছে। এছাড়া গাজা উপত্যকার কেন্দ্রস্থলে একটি আবাসিক বাড়িতে ইসরায়েলি বিমানের বোমা হামলায় দুই ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
দেইর এল-বালাহ শহরে ইসরায়েলি বোমা হামলায় একজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে এবং ইসরায়েলি বাহিনী টানা এগারো দিনের জন্য আল-আমাল পাড়া এবং ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির আশেপাশে গোলাগুলি চালিয়ে যাচ্ছে।
(ঢাকাটাইমস/০১ফেব্রুয়ারি/এসআইএস)