ওয়াটার ফাস্টিং: শরীরের বাড়তি ওজন ঝরানোর মোক্ষম এক উপায়

শরীরের ওজন বেড়ে গেলে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে যায় যে কারও। কারণ, বাড়তি ওজন না কমালে যে শরীরে নানা রোগ বাসা বাঁধবে। তাই ওজন ঝরাতে বিভিন্ন রকম ডায়েট করতে শুরু করেন কেউ কেউ। তাতে কেউ সফল হন, কেউ উল্টো বিপদেও পড়েন।
কিন্তু পুষ্টিবিদরা বলছেন, কেবল পানি পান করেই শরীরের বাড়তি ওজন ঝরানো সম্ভব! তারা এটির নাম দিয়েছেন ‘ওয়াটার ফাস্টিং’। ওজন ঝরাতে এই পন্থা নাকি বেশ কার্যকর।
কিন্তু ‘ওয়াটার ফাস্টিং’ বিষয়াট কী?
এই উপবাসে পানি ছাড়া আর কিছুই খাওয়া যাবে না। এ ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আপনাকে কেবল পানি খেয়েই পেট ভরাতে হবে। এতে শরীর থেকে টক্সিন পদার্থগুলো বেরিয়ে যাবে। ওই নির্দিষ্ট সময়ে কোনো খাবার শরীরে যায় না, তাই শরীরে কোনো ক্যালোরিও ঢুকতে পারে না।
অন্য কোনো ডায়েট করলে শরীরে ২০ থেকে ৪০ শতাংশ ক্যালোরি কম ঢোকে। তবে এই ডায়েটে শরীরে কোনো ক্যালোরিই যায় না। তবে দীর্ঘদিন এই উপোস করলে চলবে না। কারণ, কাজকর্ম চালানোর জন্য শরীরের ক্যালোরির প্রয়োজন হয়। অল্প সময়ে এই উপোস করলে তবেই শরীরে বিপাকহার বাড়বে, শরীর চাঙ্গা হবে।
যেভাবে করতে হবে ওয়াটার ফাস্টিং
পুষ্টিবিদের পরামর্শ ছাড়া এই উপোস না করাই ভালো। উপোস শুরু করার দিন চারেক আগে থেকে খাওয়াদাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে আনতে হবে। প্রথম এক দিন করে শুরু করুন উপোস। ধীরে ধীরে ২৪ ঘণ্টা থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত করতে পারেন এই উপোস।
তবে সাবধান, এর বেশি কিন্তু উপোস করা চলবে না। এই উপোসে দিনে আড়াই থেকে তিন লিটার পানি খেতে হবে। উপোস চলাকালীন খুব বেশি পরিশ্রম করা যাবে না। শরীরে ক্যালোরির ঘাটতি হয় এই সময়ে। তাই অল্প কাজ করলেই ক্লান্ত হয়ে যেতে পারেন।
ওজন হ্রাস ছাড়া এই ডায়েটে আর কী কী উপকার হয়?
শরীরে অতিরিক্ত টক্সিন জমা হলে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোর কার্যকারিতা কমে যায়। পানি খেয়ে উপোস করলে শরীর থেকে টক্সিন বেরিয়ে যায়। শরীরের কোষগুলোর উপর ইনসুলিনের প্রভাব বেড়ে যায়। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
তবে এই উপোস করার আগে ডায়াবেটিসের রোগীরা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেবেন।
এই উপোসে শরীরে লেবটিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে। এই হরমোন খিদের অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে পানি খেয়ে উপোস করলে খিদে কম পাবে, অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার ইচ্ছেও কমে যাবে। ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ওয়াটার ফাস্টিং করলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমে। পানি খেয়ে থাকলে শরীর কিটোসিস পর্যায় চলে যায়। কিটোসিস পর্যায়ে স্নায়ুর কার্যকারিতা বেড়ে যায়। ফলে মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো থাকে।
(ঢাকাটাইমস/১৬জুন/এজে)

মন্তব্য করুন