বেশিরভাগ ইটভাটায় নেই পরিবেশ ছাড়পত্র, প্রশাসনের অভিযানেও থেমে নেই কার্যক্রম
জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে বেশিরভাগ ইটভাটার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না থাকলেও চলছে ইট প্রস্তুত ও বিক্রি। মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ভাটা মালিকদের জরিমানা করা হলেও থেমে নেই ভাটার কার্যক্রম। পোড়ানো হচ্ছে গাছ, নষ্ট করা হচ্ছে কৃষি জমির টপ সয়েল।
উপজেলায় বেশকিছু আবাসিক এলাকা ও ফসলি জমির পাশে গড়ে উঠেছে এসব ইটভাটা। ভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় নষ্ট হচ্ছে ফসল, পরিবেশ। বাড়ছে স্থানীয়দের স্বাস্থ্য ঝুঁকি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুজন কৃষক বলেন, লোকালয় ঘেঁষে আবাদি জমির পাশে এসব ইটভাটা গড়ে তোলা হলেও ভাটা মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না।
তাদের মতে, ফসলি জমিতে ভাটা হওয়ায় হুমকিতে পড়েছে চাষাবাদ। ফলে বাধ্য হয়ে অনেকে ভাটার আশপাশের জমিও ছেড়ে দিতে হচ্ছে ভাটা কর্তৃপক্ষকে।
জানা যায়, নিয়মনীতি না মেনে গড়ে উঠা কিছু ইটভাটায় সঠিক সাইজের ইট প্রস্তুত না করে ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। এমন বহু অভিযোগের প্রেক্ষিতে শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দিনব্যাপী পাঁচবিবি উপজেলা প্রশাসন ও বিএসটিআই রাজশাহী বিভাগীয় অফিস যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটায় ভীমপুর এলাকার মেসার্স লিটন ব্রিকস নামের একটি ইটভাটায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে আগামী ৭ দিনের মধ্যে লাইসেন্স গ্রহণসহ সঠিক মাপের ইট প্রস্তুত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক মো.মারুফ আফজাল রাজন। অভিযান পরিচালনাকালে প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বিএসটিআইয়ের বিভাগীয় অফিস রাজশাহীর ফিল্ড অফিসার (সিএম) দেলোয়ার হোসেন।
পাঁচবিবি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. লুৎফর রহমান বলেন, যেহেতু ইটভাটার চিমনি অনেক উঁচুতে থাকে সেক্ষেত্রে কৃষিখাতে এর ক্ষতির প্রভাবের পরিমাণটা বলা কঠিন। তবে ইটভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়া বাতাসে মিশে পরিবেশের ক্ষতিসাধন হয় বলে জানান তিনি।
জয়পুরহাট পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ ফারুক হোসেন বলেন, পাঁচবিবি উপজেলায় প্রায় ১২-১৩টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ ইটভাটার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। ছাড়পত্র ছাড়াই এসব ইটভাটা চলছে বলে জানান তিনি।
পাঁচবিবি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মারুফ আফজাল রাজন বলেন, ইটগুলোর বিএসটিআইয়ের অনুমোদন না থাকায় ভাটা কর্তৃপক্ষকে প্রথম পর্যায়ে সতর্কতামূলক ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তাছাড়া আগামী ৭ দিনের মধ্যে বিএসটিআইয়ের অনুমোদন নিয়ে ভাটার পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
টাইমস/১২ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/পিএস)